প্রকৃত সুখ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে। আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যার জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য বা ব্ৰত সেই সর্বাপেক্ষা সফল, উন্নত ও সমৃদ্ধ ব্যক্তি। নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ এ

ভালোবাসার কথা বলেন-يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ “তিনি (আল্লাহ) তাদেরকে ভালোবাসেন এবং ভালোবাসবেন এবং তারাও তাকে ভালোবাসে এবং ভালোবাসবে।” (৫-সূরা মায়িদাঃ আয়াত-৫৪)

قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ

“(হে মুহাম্মদ!) আপনি মানবজাতিকে বলে দিন, “যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তবে তোমরা আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তিনি তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দিবেন।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-৩১)

সকলকে জানিয়ে দেয়ার জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রাঃ)-এর এমন একটি গুণের কথা সকলের মাঝে ঘোষণা করে দেন যা তার মাথার মুকুট হয়ে আছে; আর তা হলোঃ [নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রাঃ) সম্বন্ধে বলেন]-

رجُل يُحبُّ الله ورسولهُ ويُحبُّهٗ الله ورسوله

ভাবাৰ্থঃ [আলী (রাঃ)] এমন এক ব্যক্তি যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালোবাসেন এবং তাকেও আল্লাহ ও তার রাসূল ভালোবাসেন।”

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একজন সাহাবী কুরআনের সূরা ইখলাসকে ভালোবাসতেন। (সূরার প্রথম আয়াতটি হলো) قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ

“(হে মুহাম্মদ!) আপনি (মানুষদেরকে) বলে দিন, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।” (১১২-সূরা ইখলাসঃ আয়াত-১)

তিনি [ঐ সাহাবী (রাঃ)] সালাতের প্রতি রাকাতে এ সূরা তেলাওয়াত করতেন এবং তিনি তার আত্মাকে শান্তি দেয়ার জন্য অন্য সময়েও তিনি সর্বদা এ সূরা পাঠ করতেন। এ কারণে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন

حبك إياها أدخلك الجنة

“এ সূরার প্রতি তোমার ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।”

আমি একজন মুসলিম পণ্ডিত ব্যক্তির (আলেমের) জীবনীতে নিম্নোক্ত পঙক্তিগুলো পেয়েছি—

إذا كان حُبُّ الهائِمين من الورى

بليلى وسلمى يسلُبُ اللُّبَّ والعقْلا

فماذا عسى أن يفعل الهائِمُ الذي

سَرَى قلبُه شوقاً على العالمِ الأعلى

“লায়লা ও সালমার প্রতি (সৃষ্টি) জগতের দিশেহারা প্রেমিকদের ভালোবাসা যখন নাকি জ্ঞান-বুদ্ধিকে লোপ করে দেয়, তখন যে দিশেহারা প্রেমিকের আত্মা প্রেমের টানে ঊর্ধ্ব জগতে বিচরণ করে সে কি করতে পারে বলে করা যায়?”

وَقَالَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَىٰ نَحْنُ أَبْنَاءُ اللَّهِ وَأَحِبَّاؤُهُ قُلْ فَلِمَ يُعَذِّبُكُم بِذُنُوبِكُم

“এবং ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা বলে, ‘আমরা আল্লাহর সন্তান ও তার প্রিয়জন’। (হে মুহাম্মদ!) আপনি (তাদেরকে) বলুন। “তাহলে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের পাপের কারণে শাস্তি দিবেন কেন?” (৫-সূরা মায়িদাঃ আয়াত-১৮)

লায়লীর প্রেমে মজনু শেষ হয়ে গেছে, ধন-সম্পদের মোহে কারূন ধ্বংস হয়ে গেছে, মর্যাদা ও ক্ষমতার মোহে ফেরাউন ধ্বংস হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে, হামজা (রাঃ), জাফর (রাঃ) ও হানযালাহ (রাঃ) আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রেমে শহীদ হয়েছেন। আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ভালোবাসাকারী দল ও দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসাকারী দল -এ দু'দলের মাঝে কতইনা বিস্তর ফারাক!