একজন আরব কবি বলেন-

نفسي التي تملك الاشياء ذاهبة ٭ فكيف ابكي على شيء اذا ذهب

ভাবার্থঃ “আমার যে আত্মা সম্পদের মালিক সে নিজেই চলে যাবে, তাহলে যখন কোন কিছু (আমাকে ছেড়ে) চলে যায়, তখন কেন আমি কাঁদব?”

সারা দুনিয়া, এর সব সোনা-রূপা, মান-মর্যাদা, দালান-কোঠা ও ঘর-বাড়ি এক ফোটা চোখের পানির সমানও নয়। তিরমিযী শরীফে একটি হাদীস বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلَّا ذِكْرُ اللَّهِ وَمَا وَالَاهُ وَعَالِماً أَوْ مُتَعَلِّماً

ভাবাৰ্থঃ “আল্লাহর জিকির ও তার সমর্থক বন্ধু (অন্যান্য নেক আমল), আলেম ও তালেবে এলেম [জ্ঞানী (শিক্ষক) ও শিক্ষার্থী] ছাড়া (গোটা) দুনিয়া ও এতে যা কিছু আছে সবই অভিশপ্ত।”

একজন আরব দেশী কবি বলেছেনঃ (আরবী পুস্তকে আছে, “লবীদ বলেন”)

ومَا المالُ والأهْلُونَ إلاَّ وَديعَة ٌ ٭ وَلابُدَّ يَوْماً أنْ تُرَدَّ الوَدائِعُ

ভাবাৰ্থঃ “সম্পদ ও পরিবার-পরিজন শুধুমাত্র ঋণস্বরূপ, আর একদিন অবশ্যই সকল আমানত (ঋণ) ফিরিয়ে নেয়া হবে।”

মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে পৃথিবীর সকল সম্পদও একে পিছিয়ে দিতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেন-

وَمَا هَٰذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَهْوٌ وَلَعِبٌ

“আর এ পার্থিব জীবনতো শুধুমাত্র খেল-তামাশা।” (২৯-সূরা আনকাবূতঃ আয়াত-৬৪)

হাসান বসরী (রহঃ) বলেছেনঃ “জান্নাত ছাড়া অন্য কোন পুরস্কার আশা করো না। বিশেষ করে এ কারণে যে, মুমিনের আত্মার মূল্য খুবই বেশি (এতই বেশি যে, জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা এর মূল্যায়ন হয় না।”-অনুবাদক)

তবুও কিছু লোক তাদের আত্মাকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রি করে দেয়। নিঃস্ব (দেউলিয়া) হওয়া, বাড়ি-গাড়ি ধ্বংস হওয়া নিয়ে যারা বিলাপ করে অথচ তাদের ঈমানের কমতি নিয়ে তাদের পাপের জন্য দুঃখ করে না। তারা শীঘ্রই তাদের জীবনের হাস্যকর দৃষ্টিভঙ্গিকে বুঝতে পারবে। আর সে বুঝ হবে দুঃখে ভরা এবং যে যতটা ভ্রমে পতিত ছিল তার দুঃখ তত বেশি হবে। এ বিষয়টি খুবই (গভীর) গুরুত্বপূর্ণ কেননা এটি একটি মূল্যবান, নৈতিকতাপূর্ন ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়-

إِنَّ هَٰؤُلَاءِ يُحِبُّونَ الْعَاجِلَةَ وَيَذَرُونَ وَرَاءَهُمْ يَوْمًا ثَقِيلًا

“নিশ্চয় এসব (কাফির) লোকেরা এ পার্থিব জীবনকে ভালোবাসে এবং একটি গুরুভার, কঠিন কেয়ামতের ও বিচারের দিনকে উপেক্ষা করে।” (৭৬-সূরা দাহর বা ইনসানঃ আয়াত-২৭)