যখন প্রচণ্ড ঝঞ্জাবায়ু বয়, বজ্র গর্জন করে ও অন্ধকারে আকাশ ছেয়ে যায় তখন সাহায্যের জন্য আল্লাহর মুখাপেক্ষী হওয়ার মানুষের সহজাত প্রয়োজন সুপ্ত অবস্থা থেকে জেগে উঠে।
“তখন এর নিকটে (জাহাজের নিকটে) ঝঞ্জা ক্ষুব্ধ বায়ু আসে এবং তাদের নিকট সবদিক থেকে ঢেউ আসে। তারপর তারা ভাবতে থাকে যে, তারা এ সবের মাঝে আটকা পড়ে গেছে, তখন তারা আল্লাহকে তার আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে আহবান করে।” (১০-সূরা ইউনুসঃ আয়াত-২২)
তাছাড়া মুসলমানরা সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায়ই তাদের প্রভুকে আহবান করে।
“যদি সে (ইউনুস নবী) আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা না করত তবে তাকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতে হতো।” (৩৩-সূরা আল আহযাবঃ আয়াত-১৪৩, ১৪৪)
অধিকাংশ লোকই প্রয়োজনের সময় আল্লাহর নিকট সাহায্য চায়, আর যখন তাদের আশা শেষ হয়ে যায তখন তারা গর্বভরে তাদের পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে। তারা কি মনে করে যে, আল্লাহকে ধোকা দেয়া সম্ভব।
“নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোকা দিতে চেষ্টা করে। কিন্তু তিনিই তাদেরকে ধোকায় ফেলেন।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-১৪২)
(আল্লাহ মুনাফিকদেরকে ধোকায় ফেলেন এর অর্থ হলো তিনি তাদেরকে তাদের ধোকাবাজির কারণে শাস্তি দিবেন। কেননা আল্লাহর পক্ষে ধোকা দেয়া শোভা পায় না। -অনুবাদক)
যারা কেবলমাত্র বিপদের সময়েই আল্লাহর মুখাপেক্ষী হয় তারা ভণ্ড ফেরাউনের শিষ্য। ফেরাউন যখন সময় পার হয়ে যাবার পর ঈমান এনেছিল তখন তাকে বলা হয়েছিল (সময় পার হয়ে যাবার পর) এখন তুমি ঈমান আনছ!
অথচ তুমি পূর্বে অবাধ্যতা করেছ (ঈমান আনতে অস্বীকার করেছ) এবং তুমি ফাসাদকারী ছিলে।” (১০-সূরা ইউনুসঃ আয়াত-৯১)
আমি BBC রেডিওতে খবর শুনেছি যে, ইরাক যখন কুয়েত দখল নিয়েছিল তখন মার্গারেট থ্যাচার কলোরেডোতে ছিল, তখন তিনি অতি দ্রুত চার্চে গিয়ে সেজদা করেছিলেন। এর একমাত্র ব্যাখ্যা আমি মনে করি যে, তার সহজাত প্রকৃতি জেগে গিয়েছিল ও তিনি কুফুরি ও পথভ্রষ্টতা সত্ত্বেও তার প্রভুর মুখাপেক্ষী হয়েছিলেন। মানুষের মাঝে স্বভাবজাত বলতে কিছু একটা আছে যা তাদেরকে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে সাহায্য (বাধ্য) করে।
كُلُّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ
“প্রতিটি শিশুই স্বভাব ধর্মের উপর (ঈমান ও ইসলামের উপর) জন্মগ্রহণ করে; পরে তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদী খ্রিস্টান বা অগ্নিউপাসক বানায়।”