আর রিসালাহ (الرسالة) নামক পত্রিকায় যাইয়াত (زيات) কর্তৃক লিখিত কমিউনিজমের উপর এক চমৎকার প্রবন্ধ আমি পেয়েছি। রাশিয়ানরা মহাবিশ্বে এক মহাকাশযান প্রেরণ করেছিল। এ মহাকাশ যানটি ফিরে আসার পর এক নভোচারী প্রাভদা (Pravd –البرافدا) নামক পত্রিকায় লিখেছেন- “আমরা আকাশে চড়লাম কিন্তু সেখানে কোন প্রভু, কোন বেহেশত, কোন দোযখ ও কোন ফেরেশতা পেলাম না।”

উত্তরে যায়্যাত লিখেছেন “হে লাল গাধারপাল! তোমরা বড়ই অদ্ভুত! তোমরা কি ভাবছ যে তোমরা প্রকাশ্যে আল্লাহকে তার সিংহাসনে বসা দেখতে পাবে? তোমরা কি হঠকারিত করে এ কথা ভাবছ যে তোমরা জান্নাতে রেশমী পোশাক পরা হুর দেখতে পাবে? বা বেহেশতে হাউজে কাওসারের প্রবাহের শব্দ শুনতে পাবে? বা জাহান্নাম যাদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে তোমরা তাদের দুর্গন্ধ শুকতে পাবে? তোমরা যদি সত্যিই একথা ভেবে থাক তবে তোমাদের ক্ষতি ও ব্যর্থতা সবই প্রকাশ্যে দেখতে পাবে। তোমাদের গোমরাহী (বিপথগামিতা) ভ্রান্তি ও বোকামির কারণ ব্যাখ্যায় আমি যা বলতে চাই তা হলো কমিউনিজম ও তোমাদের মাথার নাস্তিকতাই এর মূল কারণ। কমিউনিজমের কোন ভবিষ্যৎ নেই এবং কোন আকাশ (ছাদ) নেই, এটা অন্তহীন (বেগার) খাটুনি ও সর্বদা নিষ্ফল পরিশ্রম মাত্র।”

“তুমি কি মনে কর যে তাদের অধিকাংশ লোকই শুনতে পায় বা বুঝতে পারে? তারাতো কেবল চতুষ্পদ জন্তুর মতো, বরং তারা এদের চেয়েও বেশি পথভ্রষ্ট।” (২৫-সূরা আল ফুরকানঃ আয়াত-৪৪)

“তাদের অন্তর আছে কিন্তু তারা তা দিয়ে বুঝতে পারে না, তাদের চক্ষু আছে কিন্তু তারা তা দিয়ে দেখতে পায় না এবং তাদের কান আছে কিন্তু তারা তা দিয়ে শুনতে পায় না (তারা তো কেবল চতুষ্পদ জন্তুর মতো, বরং তারা এদের চেয়েও বেশি বিভ্রান্ত।)” (৭-সূরা আল আরাফঃ আয়াত-১৭৯)

وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ

“আর আল্লাহ যাকে অপমান করেন তাকে কেউ সম্মানিত করতে পারে না।”

“তাদের কাজ কারবার মরুভূমির মরীচিকার মতো।” (২৪-সূরা আন নূর: আয়াত-৩৯)

“তাদের কাজকর্ম ঝড়ের দিনের ঝঞ্জাবায়ুতে উড়ন্ত ছাইয়ের মতো (বা বালুর মতো) (বিক্ষিপ্ত)।” (১৪-সূরা ইবরাহীমঃ আয়াত-১৮)

“বহু খুঁতযুক্ত-ধর্ম” নামক পুস্তকে ‘আক্কাদ’ কমিউনিজমকে ও এর মিথ্যা নাস্তিকতার মতবাদকে নিন্দাপূর্ণ বাক্যবাণ ছুড়ে বলেনঃ “যে আত্মা স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ তা ইসলামের এই সত্য ধর্মকে গ্রহণ করে। যাদের মন পঙ্গু বা যাদের ধারণা নিম্নমানের ও অদূরদর্শী তাদের কাছেই নাস্তিক হওয়া আপাত দৃষ্টিতে ন্যায় সঙ্গত।”

وَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ

তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেয়া হয়েছে তাই তারা বুঝতে পারে না।” (৯-সূরা তাওবাঃ আয়াত ৮৭)

নাস্তিকতা চিন্তা চেতনার বিরুদ্ধে এক মারাত্মক আক্রমণ। এটা শিশুদের কল্পরাজ্যের মতো এক কষ্টকল্পিত ধারণা মাত্র এবং এটা এমন এক ভুল যার নজির ভুলের ইতিহাসে নেই। এ কারণেই মহান আল্লাহ বলেন-

“আসমানসমূহ ও পৃথিবীর স্রষ্টা আল্লাহ সম্বন্ধে কি কোন সন্দেহ আছে?” (১৪-সূরা ইবরাহীমঃ আয়াত-১০)

ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন- ফেরাউন ছাড়া অন্য কেউ স্রষ্টার অস্তিত্বকে প্রকাশ্যে অস্বীকার করেনি। এমনকি সেও মনে মনে স্রষ্টার অস্তিত্বের অনুভব করত। এ কারণেই মূসা (আঃ) বলেছেন-

“তুমি জান যে আসমানসমূহ ও পৃথিবীর প্রতিপালকই এসব নিদর্শনাবলিকে প্রত্যক্ষ প্রমাণস্বরূপ অবতীর্ণ করেছেন। হে ফেরাউন! আমি অবশ্যই তোমাকে ধ্বংসের মুখে পতিত মনে করি।” (১৭-সূরা বনী ইসরাঈলঃ আয়াত-১০২)

অবশেষে, অতি বিলম্বে (অর্থাৎ তওবার সময় শেষ হওয়ার পর) ফেরাউন তার অন্তরের কথা ঘোষণা করে বলেছিল-

“আমি ঈমান আনলাম যে, বনী ইসরাঈল যার প্রতি ঈমান এনেছে তিনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং আমি একজন মুসলিম।” (১০–সুরা ইউনুসঃ আয়াত-৯০)