বুজুরজামহার নামে পারস্যের এক বিজ্ঞ ব্যক্তি রাজা খসরু ও এক বৃদ্ধা রমণীর গল্প বলেছেন। বৃদ্ধার সম্পদ বলতে ছিল একটি মুরগির বাচ্চা ও একটি কুঁড়ে ঘর। কুঁড়ে ঘরখানা রাজপ্রাসাদের পাশে ছোট এক টুকরো জমির উপর ছিল। একদিন বৃদ্ধাকে (বিশেষ কাজে) পাশের গ্রামে যেতে হলো। যাবার আগে সে প্রার্থনা করেছিল, ‘হে আমার প্রভু! আমি আমার মুরগি ছানাটিকে আপনার নিকট সোপর্দ করছি (আপনি এটাকে হেফাজত করুন)’। বৃদ্ধ যখন তার বাড়িতে ছিল না তখন রাজা খসরু তার রাজপ্রাসাদের বাগান বাড়ানোর জন্য বৃদ্ধার সম্পত্তিকে জবর দখল করে নিল।

খসরুর সেনাবাহিনী বৃদ্ধার মুরগি ছানাটিকে জবাই করে ফেলল আর কুঁড়ে ঘরটিকে ধ্বংস করে দিল। বৃদ্ধা ফিরে এসে যখন এই হৃদয়বিদারক কীর্তি দেখল তখন সে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “হে আমার প্রভু! আমি তো অনুপস্থিত ছিলাম। কিন্তু তুমি কোথায় ছিলে?” তখন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তার পক্ষ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের প্রস্তাব কবুল করলেন। খসরুর ছেলে একটি ছুড়ি দিয়ে তার পিতাকে হত্যা করে ফেলল। (ইমাম ইবনুল

জাওজী (রহঃ) তাঁর আততাবসিরাহ (التبصرة) নামক কিতাবে এরূপ একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন যে, বৃদ্ধার অভিশাপের পর আল্লাহ রাজপ্রাসাদকে চুরমার করে দিয়েছিলেন। -অনুবাদক)

“আল্লাহ কি তার বান্দার জন্য যথেষ্ট নন? (অবশ্যই যথেষ্ট) অথচ তারা তোমাকে আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন পথ প্রদর্শক নেই।” (৩৯-সূরা আয যুমারঃ আয়াত-৩৬)

কতইনা ভালো হতো! আমরা যদি আদম (আঃ)-এর দু’পুত্রের সে একজনের মতো হতাম যে তার ভাইকে বলেছিল- “তোমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাত বাড়াবো না। নিশ্চয় আমি সমগ্র বিশ্ব জগতের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।” (৫-সূরা মায়িদাঃ আয়াত-২৮)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

كُن عبدَ اللهِ المقتولَ ولا تكن عبدَ اللهِ القاتلَ

অর্থাৎ, “আল্লাহর নিহত বান্দা হইও কিন্তু আল্লাহর হত্যাকারী বান্দা হইও না।”

মুসলমানের একটি ব্রত ও একটি (স্বর্গীয়) বাণী আছে যা প্রতিশোধ, হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।