যাদের সঙ্গ বিরক্তিকর ও অপ্রীতিকর তাদেরকে ইসলামী পণ্ডিতবর্গের লেখা কিতাবাদিতে ভূরিভূরি জায়গায় দুর্বিসহ বলা হয়েছে। তারা এমন লোক যাদের সঙ্গ অসহ্যকর। ইমাম আহমদ তাদেরকে বিদআতী বা অভিনব লোক বলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন যে তারা সমাজের বোকা লোকজন। আবার কেউ কেউ এদেরকে অমার্জিত লোকজন বলে আখ্যায়িত করেছেন। অথবা তারা হলো নিরস ও বৈচিত্রহীন (চরিত্রের) লোকজন।
“তারা যেন (দেয়ালে) ঠেকান কাঠের গুড়ি।” (৬৩-সূরা আল মুনাফিকূনঃ আয়াত-৪)
“অতএব এসব লোকদের কী হলো যে তারা কোন কথা বুঝার উপক্রম করে না।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-৭৮)
ইমাম শাফেয়ী বলেছেন- “যখন কোন বোকালোক আমার পাশে বসতে আসে, তখন আমার মনে হতে থাকে যেন তার সাহচর্যের কারণে তার নিচের মাটি ডেবে যাচ্ছে।”
আল আ’মাশ এ ধরনের লোক দেখলে তেলাওয়াত করতেন— “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের থেকে শাস্তি দূর করুন। আমরা অবশ্যই ঈমানদার (হব)!” (৪৪-সূরা আদ দোখানঃ আয়াত-১২)
মহান আল্লাহ বলেছেন- “আর যারা আয়াতসমূহ নিয়ে বাজে কথায় লিপ্ত হয় আপনি তাদেরকে দেখলে এড়িয়ে চলুন ...।” (৬-সূরা আল আন’আমঃ আয়াত-৬৮)
“অতএব, তোমরা তাদের সাথে বসবে না।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-১৪০)
গুণহীন লোকজনের উদ্দেশ্য নীচুমানের এবং যারা সহজেই তাদের আকাঙ্খার কাছে হার মানে তাদের সাহচর্য সর্বাপেক্ষা বেশি অসহ্যকর।
“অতএব যতক্ষণ না তারা অন্য কথা বলতে শুরু করে ততক্ষণ তোমরা তাদের সাথে বসবে না, (অন্যথায়) তোমরাও অবশ্যই তাদের মতো হয়ে যাবে।” (৪-সূরা আন নিসাঃ আয়াত-১৪০)
একজন আরবী কবি বলেছেন-
أَنْتَ يَا هَذَا ثَقِيلٌ وَثَقِيلٌ وَثَقِيلُ
أَنْتَ فِي الْمَنْظَرِ إنْسَانٌ وَفِي الْمِيزَانِ فِيلُ
“এই যে তুমি তো ভারী, মোটা ও বিশাল দেহী, তুমি দেখতে মানুষ অথচ ওজনে হাতী।”
ইবনুল কায়্যিম বলেছেন- “অসহ্যকর কোন লোকের কথা যদি তোমাকে জোর করে শুনানো হয় তবে তুমি তার কথা কান দিয়ে শুনিও কিন্তু মন দিয়ে গ্রহণ করিও না এবং তোমার মন নিয়ে তুমি অন্যত্র চলে যেও (অর্থাৎ তার কথায় মন দিও না)। যতক্ষণ না আল্লাহ তোমাকে তার সঙ্গ ত্যাগ করে যাবার পথ করে দেন ততক্ষণ তুমি তার কথা শুনেও শুনবে না ও তাকে দেখেও দেখবে না।”
“এবং আপনি তার অনুসরণ করবেন না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ বা জিকির থেকে গাফেল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করে আর কাজ কর্ম লাগামহীন।” (১৮-সূরা আল কাহাফঃ আয়াত-২৮)