হাদীস গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, মহান আল্লাহ বলেন- “যদি আমি কারো কাছ থেকে তার সর্বাপেক্ষা প্রিয়জনকে ছিনিয়ে নিই আর তখন যদি সে ধৈর্যসহকারে আমার কাছ থেকে পুরস্কার আশা করে তবে আমি তাকে এর বদলে পুরস্কার স্বরূপ জান্নাত দান করব।”

অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন- “আমি যাকে তার দু’টি প্রিয় বস্তুর ব্যাপারে পরীক্ষা করেছি (অর্থাৎ আমি যার দু’ চোখের দৃষ্টি শক্তি ছিনিয়ে নিয়েছি) তাকে আমি এর বদলে জান্নাত দিয়ে পুরস্কৃত করব।”

فَإِنَّهَا لَا تَعْمَى الْأَبْصَارُ وَلَٰكِن تَعْمَى الْقُلُوبُ الَّتِي فِي الصُّدُورِ

“কেননা, চক্ষু অন্ধ হয় না, বরং, বক্ষস্থিত আত্মাই অন্ধ হয়।” (২২-সূরা আল হাজ্জঃ আয়াত-৪৬)

তিরমিয়ী শরীফে একটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “আল্লাহ যখন তার কোন ঈমানদার বান্দার ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান তখন তিনি তাঁর ফেরেশতাদেরকে বলেন, ‘তোমরা আমার ঈমানদার বান্দার ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়েছ?’ তারা উত্তর দেয় ‘হ্যাঁ’। তারপর আল্লাহ বলেন, “তোমরা কি তার হৃদয়ের মনিকে ছিনিয়ে নিয়েছ? তারা উত্তর দেয় ‘হ্যাঁ’। তখন আল্লাহ বলেন, “আমার বান্দা কি বললঃ তারা উত্তর দেয়, ‘সে আপনার প্রশংসা করল এবং বলল, আমরা সবাই আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন’ তখন আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে আদেশ করেন জান্নাতে আমার বান্দার জন্য একটি বাড়ি তৈরি কর এবং এর নাম দাও “প্রশংসাগৃহ।”

إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُم بِغَيْرِ حِسَابٍ

“শুধুমাত্র ধৈর্যশীলদেরকে তাদের পুরস্কার বেহিসাবে পূর্ণমাত্রায় দেয়া হবে।” (৩৯ সূরা আয যুমারঃ আয়াত ১০)

“তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছিলে তাই তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।” (১৩-সূরা রাআদঃ আয়াত-২৪)

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ধৈর্য দান করুন। (২-সূরা বাকারাঃ আয়াত-২৫০)

“এবং (হে মুহাম্মদ!) আপনি ধৈর্য ধরুন, আর আপনার ধৈর্য তো আল্লাহর সাহায্যেই হয়ে থাকে।” (১৬-সূরা আন নাহলঃ আয়াত-১২৭)

“অতএব (হে মুহাম্মদ!) আপনি ধৈর্য ধরুন নিশ্চয় আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য। (৩০-সূরা আর রূমঃ আয়াত-৬০)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- “নিশ্চয় পরীক্ষার গুরুত্ব অনুসারেই পুরস্কারের গুরুত্ব হয়ে থাকে, বাস্তবিকই আল্লাহ যদি কোন জাতিকে ভালোবাসেন তবে তিনি তাদেরকে পরীক্ষা করেন। যে এতে রাজি বা সন্তুষ্ট থাকে তার জন্য রয়েছে সন্তুষ্টি আর যে এতে ক্রুদ্ধ হয় তার জন্য রয়েছে গযব।” যখন দুর্যোগ আঘাত হানে তখন ধৈর্য, তাকদীর ও আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। আর আমাদের একথা জানা উচিত যে, যিনি প্রথমে দান করেছেন, তিনিই তো নিয়েছেন।

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করছেন যে, তোমরা যেন আমানতকে তার মালিকের নিকট দিয়ে দাও।” (৪-সূরা আন নিসা : আয়াত-৫৮)

একজন আরবী কবি বলেছেন-

ومَا المالُ والأهْلُونَ إلاَّ وَديعَة ٌ ٭ وَلابُدَّ يَوْماً أنْ تُرَدَّ الوَدائِعُ

“সম্পদ ও পরিবার তো শুধুমাত্র ঋণস্বরূপ, একদিনতো অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।"