যাদের জীবনে কোন কাজ করতে হয় না তারাই গুজব ও মিথ্যা কথা ছড়ানোর মাধ্যমে তাদের অধিকাংশ সময় নষ্ট করে। বিশেষ করে কল্যাণ-চিন্তাহীন মানসিকতার কারণেই তারা এমনটি করে থাকে।
رَضُوا بِأَنْ يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ
“পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথে থাকতে পারাতে তারা আনন্দিত এবং তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেয়া হয়েছে, তাই তারা বুঝতে পারে না।” (৯-সূরা তাওবা: আয়াত-৮৭)
যখন আপনি নিজকে অলস মনে করবেন তখন বিষন্নতা ও হতাশাবোধ করবেন। কেননা, অলসতা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের যত সব মুসিবতের কথা ভাবার মাধ্যমই হয়। সুতরাং আপনার প্রতি আমার আন্তরিক উপদেশ এই যে, অলস না থেকে ফলপ্রসূ কাজ সম্পাদন করুন। কেননা, অলসতা হল ধীর ও ছদ্মবেশী আত্মহত্যা। অর্থাৎ অলসতার কারণে ধীরে ধীরে ও অজান্তে আত্মহত্যার ইচ্ছা মনে জাগ্রত হয়।
চীনদেশে কয়েদিদেরকে যে ধরনের ধীর অত্যাচার করা হয় বা শাস্তি দেয়া হয় অলসতা হল সে ধরনের নিপীড়ন (আর তা হল):
তাদেরকে এমন এক টেপের (পানির কলের) নিচে রাখা হয় যে টেপ থেকে এক ঘণ্টা পর পর মাত্র এক ফোটা পানি পড়ে। কয়েক ফোটা পানির জন্য যে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় ততক্ষণে অনেকের মাথা খারাপ হয়ে যায় আর তাতে অনেকে পাগল হয়ে যায়।
অকৰ্মা হওয়া মানে নিজের দায়িত্বের অবহেলা প্রদর্শন করা। অলসতা এক দক্ষ চোর আর আপনার মন হল এর বলি বা শিকার। সুতরাং ক্ষণকাল বিলম্ব না করে এখনই উঠে পড়ুন ও প্রার্থনা করুন বা একটি ভালো বই পড়ুন, আপনার প্রভুর প্রশংসা করুন, লেখা-পড়া করুন। আপনার পাঠাগারকে সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিপাটি করে রাখুন। আপনার বাড়িতে কোন কিছু এটে দিন, অথবা অন্যের উপকার করুন যাতে করে আপনি আপনার অকৰ্মণ্যতাকে শেষ করে দিতে পারেন বা কাটিয়ে উঠতে পারেন। আমি আন্তরিকভাবে আপনার কল্যাণ কামনা করি বিধায় আমি একথা বলছি। কাজ করে করে একঘেয়েমি জনিত বিরক্তি বিনাশ করে দিন। আপনি যখন শুধুমাত্র এ সাধারণ নীতি কথাটাই মানবেন তখন আপনি কমপক্ষে পঞ্চাশভাগ সুখের পথ পাড়ি দিলেন। কৃষক, কাঠমিস্ত্রি ও রুটি প্রস্তুতকারীকে দেখুন এবং ভালভাবে লক্ষ্য করুন তাড়া কাজের সময় কীভাবে পাখির মতো সুরেলা কণ্ঠে গান গেয়ে যায়, কারণ তারা পরিতৃপ্ত। তারপরে নিজের অবস্থা ভালোভাবে বিবেচনা করুন যে, সর্বদা নিজেকে নিপীড়ন করে, সর্বদা অত্যন্ত শোচনীয়ভাবে চোখের পানি মুছতে মুছতে কীভাবে আপনার বিছানার উপর গড়াগড়ি খাচ্ছেন।