মানুষের দেহ, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর দেওয়া এক একটি নেয়ামত। অঙ্গ-বিকৃতি বৈধ নয়, কারণ তাতে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন হয়। আর আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটানোতে আল্লাহর অনুমতি নেই। অবশ্য মানুষ হিসাবে তা ৫ প্রকার হতে পারে। বৈধ, মুস্তাহাব, ওয়াজেব, হারাম ও মকরূহ। যেমন দেহের (বুকের বা জাঙ্গের) লোম তুলে ফেলা বৈধ। বোগল ইত্যাদির লোম (৪০ দিনের আগে আগে) পরিষ্কার করা মুস্তাহাব। নাভির নিচের লোম (৪০ দিন পার হলে) সাফ করে ফেলা ওয়াজেব। দাড়ি চেঁছে ফেলা হারাম এবং মোচ চেঁছে ফেলা মকরূহ।
কিছু কেটে ফেলা নির্দিষ্ট সময়ে হারাম; যেমন ইহরামে বা যিলহজ্জের প্রথম ৯ দিনে নখ-চুল-চামড়া কাটা হারাম। আবার নাক ইত্যাদি অঙ্গ ক্ষয় হয়ে গেলে প্লাস্টিক সার্জারি করে সৌন্দর্য আনা বৈধ।
মুসলিমের মাথা কখনো থাকে লম্বা চুলে ঢাকা; আবার কখনো থাকে নেড়া। বিশেষ করে উমরা বা হজ্জ করার পর মাথা নেড়া করতে হয়। অতঃপর সেই চুল ধীরে ধীরে বড় হয়, মাঝারি হয় এবং লম্বা হয়। সেই হিসাবে আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর মাথার চুলও প্রকৃতিগতভাবে সব ধরনের ছিল। কখনো ছিল কানের অর্ধেক বরাবর লম্বা।[1] কখনো ছিল তার থেকে বেশী লম্বা; কানের লতি বরাবর। আর আরবীতে একে ‘অফরাহ’ বলা হয়।
কখনো ছিল তার থেকেও বেশী লম্বা; কানের নিচ বরাবর; কান ও কাঁধের মাঝ বরাবর। একে আরবীতে ‘লিম্মাহ’ বলা হয়।[2]
আবার কখনো ছিল তার থেকেও বেশী লম্বা কাঁধ বরাবর। আরবীতে যাকে ‘জুম্মাহ’ বলা হয়।[3] কখনো তিনি তাঁর ঐ লম্বা চুলে চারটি বেণি গেঁথে নিতেন।[4]
ইমাম আহমাদ (রহ.) বলেন, এমন (লম্বা) চুল রাখা সুন্নাত। আমাদের সামর্থ্য হলে আমরাও রাখতাম। কিন্তু তা কষ্টসাধ্য ব্যাপার।[5]
উল্লেখ্য যে, সুন্নাতী ([6]) সবচেয়ে বড় চুল হল কাঁধ বরাবর। এর চেয়ে বড় চুল রাসুল (ﷺ) এর তরীকার খিলাপ। তিনি মাথায় তেল ব্যবহার করতেন।[7] তিনি মাথার চুলকে আঁচড়ে সুবিন্যস্ত করে রাখতেন। তিনি বলতেন, ‘‘যার চুল আছে, সে যেন তার যত্ন করে।’’[8]
একদা তিনি (ﷺ) এক ব্যক্তির মাথায় এলোমেলা চুল দেখে বললেন, ‘‘এর কি এমন কিছুও নেই যে, তার দ্বারা মাথার এলোমেলো চুলগুলোকে সোজা করে (আঁচড়ে) নেয়?!’’[9]
তবে চুলের যত্নে বাড়াবাড়ি করা যাবে না; যেমন মহিলারা করে থাকে। যেহেতু রাসুল (ﷺ) প্রত্যেক দিন চুল আঁচড়াতেন না। বরং মাঝে মাঝে একদিন করে বাদ দিয়ে আঁচড়াতেন। তিনি প্রত্যহ চুল আঁচড়াতে নিষেধও করেছেন।[10]
তিনি নিষেধ করেছেন (বেশী বেশী তেল-শ্যাম্পু দিয়ে) চুলের বিলাসিতা করতে।[11]
তিনি চুল আঁচড়াবার সময় ডান দিক থেকে শুরু করতেন।[12] তিনি তাঁর মাথার মাঝখানে সিঁথি করতেন।[13]
অতএব চুল লম্বা হলে মাঝে সিঁথি করা সুন্নাত এবং সিঁথি না করে ছেড়ে রাখা মকরূহ। যেহেতু তাতে আহলে কিতাবের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হয়। অবশ্য চুল ছোট হলে সিঁথি না করে স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে রাখায় দোষ নেই।[14]
প্রকাশ থাকে যে, বাম বা ডান দিকে টেরি করা সুন্নাতী তরীকা নয়। বরং তা বিজাতির অনুকরণে করলে অবৈধ।
তদনুরূপ বিজাতি বা হিরোদের অনুকরণ করে চুল কাটিং ও থাক থাক করা বৈধ নয়। যেহেতু রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি যে জাতির আনুরূপ্য অবলম্বন করে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।’’[15]
সতর্কতার বিষয় যে, আল্লাহর রাসুল (ﷺ)-এর চুল লম্বা হলেও মাস্তানদের চুল কিন্তু ঐ শ্রেণীর নয়। মাস্তানদের চুল আসলে হিরোদের অনুকরণে রাখা হয়।
আধুনিক যুগে প্রসিদ্ধ অথবা কাফের ব্যক্তিত্ব, হিরো অথবা পশুর অনুকরণে সেই নামে চুলের নানা ডিজাইন ও কাটিং প্রচলিত হয়েছে যুবক-যুবতীদের মাঝে। যেমন স্পাইক, কেয়ারলী, সীজার, মাইকেল, লায়ন, ফ্র্যান্সী, ইংরেজী, বাংলা, রাহুল, কাপূরী, বাবরী, সাধনা, ডিয়ানা, র্যাট, আলবার্ট, আর্মী, বব, হিপ্পী, রাউ-, রানিং, স্টপ, সেস্নাপ প্রভৃতি। ঐ শ্রেণীর মানুষ বা পশুর অনুকরণে এ সকল ডিজাইন ও কাটিং ব্যবহার কোন মুসলিম করতে পারে না।
প্রকাশ থাকে যে, আয়না দেখার সময় পঠনীয় কোন দু‘আ নেই। যেহেতু সে ব্যাপারে বর্ণিত হাদীস সহীহ নয়।[16]
[2]. আবূ দাঊদ হা/৪১৮৬, ইবনে মাজাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/৩৬৩৪, ঐ ২২
[3]. ঐ ৩
[4]. ঐ ২৩
[5]. আল-আদাবুশ শারইয়্যাহ ৩/৩২৮
[6]. প্রকাশ থাকে যে, অনেকে আল্লাহর নবী (সাঃ) এর মাথার চুল রাখার ব্যাপারটাকে তাঁর প্রকৃতিগত অভ্যাস মনে করেছেন।
[7]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৩৪৪
[8]. আবূ দাঊদ হা/৪১৬৩
[9]. আবূ দাঊদ হা/৪০৬২, নাসাঈ হা/ ৫২৩৬, মুসনাদে আহমাদ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/ ১৪৪৩৬, মিশকাত হা/ ৪৩৫১
[10]. নাসাঈ হা/ ৫০৫৪, মুখতাসারুশ শামাইলিল মুহাম্মাদিয়্যাহ ২৮
[11]. আবূ দাঊদ হা/৪১৬০, নাসাঈ
[12]. ঐ ২৭
[13]. আবূ দাঊদ হা/৪১৮৯, ইবনে মাজাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/৩৬৩৩
[14]. শা’রুর রা’স ৫০পৃঃ
[15]. আহমাদ ২/৫০, আবূ দাঊদ হা/৪০৩১, সহীহুল জা’মে হা/৬০২৫
[16]. ইরওয়াউল গালীল ১/১১৫
মাথা নেড়া করার বিভিন্ন অবস্থা ও মান রয়েছে। সুতরাং হজ্জ ও উমরাহতে চুল ছোট না করলে নেড়া করা ওয়াজেব। হজ্জ বা উমরাহ ছাড়া অন্য সময় করতে হয় বা করলে সওয়াব হয় মনে করে মাথা নেড়া করা হারাম বা বিদআত। অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে ঘন চুল নেড়া করা মুস্তাহাব। যেমন শিশুর বয়স সাত দিন হলে তার চুল নেড়া করে ফেলা মুস্তাহাব। আর মাথায় উকুন দূর করার জন্য অথবা ঘা চিকিৎসার জন্য অথবা মাথা হাল্কা করার জন্য চুল নেড়া করা বৈধ।
মাথা নেড়া করার সময় মাথার কিছু অংশ নেড়া করা এবং কিছু অংশের চুল অবশিষ্ট রাখা বৈধ নয়। বরং নেড়া করলে সম্পূর্ণভাবে নেড়া করতে হয়।[1] সুতরাং শিশুর মাথা নেড়া করার সময় ফিতে বাঁধার জন্যেও তার মাথার সামনে কিছু চুল ছেড়ে (লোটন) রাখা বৈধ নয়।
বৈধ নয় মাঝে-ফাঁকে মাথার বিভিন্ন জায়গা মুণ্ডন করা এবং বাকী জায়গায় চুল রাখা। বৈধ নয় মাথার সামনের অংশ নেড়া করা এবং পিছনের অংশে চুল রাখা। বৈধ নয় মাথার পিছনের অংশ নেড়া করা এবং সামনের অংশে চুল রাখা। বৈধ নয় মাথার চারিপাশ নেড়া করা এবং মাঝের অংশে চুল রাখা। বৈধ নয় মাথার মাঝের অংশ নেড়া করা এবং চারিপাশের অংশে চুল রাখা। যেহেতু এ সবে রয়েছে বিজাতির অন্ধানুকরণ।
অবশ্য চুল কামানোর সময় মাথার ধারের চুল (ভিত) কামানো এর পর্যায়ভুক্ত নয়।
চুল কাটা বা নেড়া করার সময় যার চুল কাটা বা নেড়া করা হবে তার ডান দিক থেকে শুরু করতে হবে। নাপিতের ডান দিক থেকে নয়।[2]
[2]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/১৩০৫, আবূ দাঊদ হা/১৯৮১, তিরমিযী হা/৬১২
বয়স হলে চুল পাকা একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার। কথিত আছে যে, এ জগতে সর্বপ্রথম চুল সাদা হয় হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর।
আল্লাহর ইচ্ছায় মানুষের চুল পাকে এবং তাতে মানুষের কাছে তার সম্মান বাড়ে। লোকেরা তাকে দেখে বড় ও মুরুব্বী বলে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে থাকে। আর ইসলামেও চুল পাকার বড় মাহাত্ম্য রয়েছে।
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তির ইসলামে (জিহাদ, আল্লাহর ভয় প্রভৃতির কারণে) একটি চুল পাকে, সেই ব্যক্তির জন্য ঐ সাদা চুলটি কিয়ামতের দিন জ্যোতি হবে।’’[1]
তিনি আরো বলেন, ‘‘শুভ্র কেশ মুমিনের নূর (জ্যোতি)। ইসলামে যে ব্যক্তিরই একটি কেশ শুভ্র হবে, সেই ব্যক্তির প্রত্যেক শুভ্র কেশের পরিবর্তে একটি করে নেকী লাভ হবে এবং একটি করে মর্যাদায় সে উন্নীত হবে।’’[2]
আর সে জন্যই চুল পেকে গেলে তা তুলে বা ছিঁড়ে ফেলা বৈধ নয়। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘তোমরা শুভ্র কেশ তুলে ফেলো না। কেননা তা কিয়ামতের দিনে নূর (জ্যোতি) হবে। ইসলামে যে ব্যক্তির একটি কেশ শুভ্র হবে, সেই ব্যক্তির প্রত্যেক শুভ্র কেশের পরিবর্তে আল্লাহ তার জন্য একটি করে নেকী লিপিবদ্ধ করবেন, একটি করে গোনাহ ঝরিয়ে দেবেন এবং একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’’[3]
[2]. ইবনে হিববান, বাইহাকীর শুআবুল ঈমান, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১২৪৩
[3]. ইবনে হিববান, সহীহ তারগীব ২০৯৬
চুল-দাড়ি সাদা হয়ে গেলে, তা সাদাই ছেড়ে রাখা ঠিক নয়। বরং তা রঙিয়ে ফেলতে হয়। খোদ আল্লাহর রসূল (ﷺ) কলপ ব্যবহার করেছেন এবং উম্মতকে তা ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধও করেছেন। অতএব তা করা সুন্নাত। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা পাকা চুল-দাড়ি রঙায় না, তোমরা (তা রঙিয়ে) তাদের বিরোধিতা কর।’’[1]
কিন্তু কলপের রঙ কালো হওয়া চলবে না। কালো ছাড়া যে কোন রঙ দিয়ে কলপ করা যায়। অবশ্য কালচে লাল বা বাদামী রঙ সবচেয়ে উত্তম।
আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘তোমরা যে সব জিনিস দিয়ে পাকা চুল-দাড়ি রঙিয়ে থাকো, তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো হল, মেহেদি ও কাতাম।[2] ‘কাতাম’ এক শ্রেণীর গাছড়ার নাম, যার পাতা থেকে লালচে কালো রঙ প্রস্ত্তত করা হয়।
আর কালো রঙ ব্যবহার করা চলবে না, যেহেতু জাবের (রাঃ) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফাকে আনা হল। তখন তাঁর চুল-দাড়ি ছিল ‘ষাগামা’ ফুলের মত সফেদ (সাদা)। রসূল (ﷺ) বললেন, ‘‘কোন রঙ দিয়ে এই সফেদিকে বদলে ফেল। আর কালো রঙ থেকে ওঁকে দূরে রাখ।’’[3]
আর সকলের উদ্দেশ্যে সাধারণ নির্দেশ দিয়ে আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘শেষ যামানায় এমন এক শ্রেণীর লোক হবে; যারা পায়রার ছাতির মত কালো কলপ ব্যবহার করবে, তারা জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না।’’[4]
প্রকাশ থাকে যে, কালো চুলকে অন্য রঙ দিয়ে রঙানো আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তাঁর সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটানোর আওতাভুক্ত হতে পারে। সুতরাং তা বর্জনীয়।
[2]. আহমাদ, সুনানে আরবাআহ, ইবনে হিববান, সহীহুল জা’মে হা/১৫৪৬
[3]. মুসলিম, মিশকাত হা/ ৪৪২৪
[4]. আবূ দাউদ ৪২১২, নাসাঈ, সহীহুল জা’মে হা/৮১৫৩
পুরুষের মাথার পোশাক হল পাগড়ী ও টুপী। পরিপূর্ণ পরিচ্ছদ গ্রহণ করার সময় মাথায় পাগড়ী রাখা সুন্নাত। যেমন টুপী রেখেও মাথার সৌন্দর্য গ্রহণ করা কর্তব্য। ইসলামী ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার জন্য আমাদের উচিত হল, অমুসলিম সমাজেও সে লেবাস পরে নিজস্ব স্বকীয়তা ও বৈশিষ্ট্য বজায় রাখা।
বিশেষ করে নামাযে পাগড়ী অথবা টুপী পরিধান করে সৌন্দর্যের সাথে মহান আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়া। অবশ্য পাগড়ী অথবা টুপী না থাকলে মাথায় গা মোছা গামছা, ‘রু’ (চেহারা) মোছা রুমাল অথবা তালপাতা কিংবা প্লাস্টিকের তৈরী টুপী মাথায় দিলে সৌন্দর্য আসে না। বরং তা অনেক সময় খারাপ লাগে। আর সে সময় তা ব্যবহার না করে খালি মাথায় নামায পরা বৈধ হবে। তবে জেনে রাখা ভালো যে, খালি মাথায় নামায পড়া ভালো নয়। বরং ইচ্ছাকৃত মাথায় সৌন্দর্য গ্রহণ না করে নামায পড়া মকরূহ। যেহেতু তা রসূল (ﷺ) ও সালাফের আমলের খিলাপ।
পক্ষান্তরে টুপীর আকার কেমন হবে, তা নির্দিষ্ট করা মুশকিল। গোল টুপী না লম্বা টুপী?
যে টুপী মুসলিম পরিবেশে প্রচলিত, যে টুপীতে মাথার যথার্থ সৌন্দর্য আনে এবং যে টুপী কোন অমুসলিমদের টুপীর মত নয় তাই পড়ে নামায হবে। যেমন যে রুমাল কেবল মাথার সৌন্দর্যের জন্য ব্যবহৃত, তা মাথায় দিয়েও নামায হবে।
পুরুষের জন্য কান ফুঁড়ানো বৈধ নয়। বৈধ নয় কানের অলঙ্কার ব্যবহার। যেহেতু তাতে মহিলাদের অনুকরণ হয়।
ছেলের কপালে টিপ বা ফোঁটা ব্যবহার বৈধ নয়। বৈধ নয় নযর লাগার ভয়ে পাশ কপালে ফোঁটা দেওয়া। বরং এটা হল শির্ক।
ভ্রূ চাঁছা বৈধ নয়। ভ্রূ চাঁছা নারী-পুরুষ অভিশপ্ত।
মুসলিম নিজ চক্ষু দ্বারা কেবল ভালো জিনিস দেখবে। যে দেখাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অথবা অনুমতি আছে কেবল তাই দর্শন করবে।
মুসলিমের চোখের চাহনি হবে অবনত। চোরা চাহনি বা বাঁকা দৃষ্টিতে কোন অবৈধ জিনিস মুসলিম দেখতে পারে না। কারণ এটি এক প্রকার খেয়ানত। আর এ খেয়ানতের খবর আল্লাহ রাখেন। চোখের বাঁকা ছুরি চালিয়ে কাউকে যবাই করতে পারে না। পারে না নজর-বাণ মেরে কাউকে ঘায়েল করতে। কেননা চোখও ব্যভিচার করে। আর চোখের ব্যভিচার হল কাম নজরে অবৈধ নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করা। এই জন্য চোখ ঠারা, চোখ মারা বা চোখ দ্বারা কোন অবৈধ প্রণয়ের ইশারা করা কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয়।
অন্ধ হলে ধৈর্য্য ধরুন। তার বিনিময়ে রয়েছে জান্নাত। মানুষের চোখের ব্যস্ততা বেশী। সুতরাং আপনার অবসর সময়কে কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহর যিক্রের জন্য কাজে লাগান। চোখের রোগের জন্য চশমা ব্যবহার তো বৈধই। অবশ্য মাস্তানির জন্য তা ব্যবহার করা বৈধ নয়। উচিত নয় রঙিন চশমার আড়ালে অবৈধ কিছু দেখা।