কোন মজুরকে কাজে খাটিয়ে তার মজুরি না দেয়া আরেকটি হারাম কাজ ও কবীরা গুনাহ্।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
قَالَ اللهُ تَعَالَى: ثَلَاثَةٌ أَنَا خَصْمُهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: رَجُلٌ أَعْطَى بِيْ ثُمَّ غَدَرَ، وَرَجُلٌ بَاعَ حُرًّا فَأَكَلَ ثَمَنَهُ، وَرَجُلٌ اسْتَأْجَرَ أَجِيْرًا فَاسْتَوْفَى مِنْهُ وَلَمْ يُعْطِهِ أَجْرَهُ.
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন: কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবো। তাদের একজন হচ্ছে, যে ব্যক্তি আমার নামে কসম খেয়ে কারোর সাথে কোন অঙ্গীকার করে তা ভঙ্গ করেছে। দ্বিতীয়জন হচ্ছে, যে ব্যক্তি কোন স্বাধীন পুরুষকে বিক্রি করে বিক্রিলব্ধ পয়সা খেয়েছে। আর তৃতীয়জন হচ্ছে, যে ব্যক্তি কোন পুরুষকে মজুর হিসেবে খাটিয়ে তার মজুরি দেয়নি’’। (বুখারী ২২২৭, ২২৭০)
এ জাতীয় ব্যক্তি কিয়ামতের দিন সত্যিকার অর্থেই দরিদ্র।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
أَتَدْرُوْنَ مَا الْـمُفْلِسُ؟ قَالُوْا: الْـمُفْلِسُ فِيْنَا مَنْ لَا دِرْهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ، فَقَالَ: إِنَّ الْـمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِيْ يَأْتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلَاةٍ وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ، وَيَأْتِيْ قَدْ شَتَمَ هَذَا، وَقَذَفَ هَذَا، وَأَكَلَ مَالَ هَذَا، وَسَفَكَ دَمَ هَذَا، وَضَرَبَ هَذَا، فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ، فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُّقْضَى مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ، فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ، ثُمَّ طُرِحَ فِيْ النَّارِ.
‘‘তোমরা কি জানো নি:স্ব কে? সাহাবারা বললেন: নি:স্ব সে ব্যক্তিই যার কোন দিরহাম তথা টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদ নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমার উম্মাতের মধ্যে সে ব্যক্তিই নি:স্ব যে কিয়ামতের দিন (আল্লাহ্ তা‘আলার সামনে) অনেকগুলো নামায, রোযা ও যাকাত নিয়ে উপস্থিত হবে; অথচ (হিসেব করতে গিয়ে) দেখা যাবে যে, সে অমুককে গালি দিয়েছে। অমুককে ব্যভিচারের অপবাদ দিয়েছে। অমুকের সম্পদ খেয়ে ফেলেছে। অমুকের রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং অমুককে মেরেছে। তখন একে তার কিছু সাওয়াব দেয়া হবে এবং ওকে আরো কিছু। এমনিভাবে যখন তার সকল সাওয়াব ও পুণ্য শেষ হয়ে যাবে; অথচ এখনো তার দেনা বাকি তখন ওদের গুনাহ্সমূহ তার উপর চাপিয়ে দিয়ে তাকে জাহান্নামে দেয়া হবে’’। (মুসলিম ২৫৮১; তিরমিযী ২৪১৮)
কোন মজুরকে কাজে খাটিয়ে তার মজুরি না দেয়ার কয়েকটি ধরন রয়েছে যা নিম্নরূপ:
ক. সরাসরি তার মজুরি দিতে অস্বীকার করা। তাকে এমন বলা যে, তুমি আমার কাছে কোন মজুরিই পাবে না।
খ. পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী তার মজুরি না দেয়া। বরং নিজ ইচ্ছা মতো তার মজুরি কিছু কম দেয়া।
গ. কাগজপত্রে নির্দিষ্ট মজুরি বা বেতন উল্লেখ করে অন্য দেশ থেকে কাজের লোক নিয়ে এসে তাকে এর কম মজুরিতে চাকুরি করতে বাধ্য করা। অন্যথায় তাকে নিজ দেশে ফেরৎ পাঠানোর হুমকি দেয়া; অথচ সে অনেকগুলো টাকা খরচ করে এখানে এসেছে।
ঘ. কোন মজুরকে নির্দিষ্ট কাজ বা নির্দিষ্ট সময় চাকুরি করার জন্য নিয়ে এসে তার সাথে নতুন কোন চুক্তি ছাড়া তাকে অন্য কাজ বা বাড়তি সময় চাকুরি করার জন্য বাধ্য করা।
ঙ. মজুরের মজুরি দিতে দেরি করা; অথচ সে তার মজুরি সময় মতো পেলে তা অন্য কাজে খাটিয়ে আরো লাভবান হতে পারতো।