হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
১০১. একেবারে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কারোর কাছে কিছু ভিক্ষা চাওয়া

একেবারে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কারোর কাছে কোন কিছু ভিক্ষা চাওয়া আরেকটি হারাম কাজ ও কবীরা গুনাহ্।

যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে ভিক্ষাবৃত্তি করে সে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলার সামনে চেহারা ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উঠবে।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্ঊদ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ سَأَلَ وَلَهُ مَا يُغْنِيْهِ جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ خُمُوْشٌ، أَوْ خُدُوْشٌ، أَوْ كُدُوْحٌ فِيْ وَجْهِهِ، فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَمَا الْغِنَى ؟ قَالَ: خَمْسُوْنَ دِرْهَمًا أَوْ قِيْمَتُهَا مِنَ الذَّهَبِ.

‘‘যে ব্যক্তি কারোর কাছে কোন কিছু ভিক্ষা চাইলো; অথচ তার নিকট তার প্রয়োজন সমপরিমাণ সম্পদ রয়েছে তা হলে তার এ ভিক্ষাবৃত্তি কিয়ামতের দিন তার চেহারায় ক্ষতবিক্ষত অবস্থার রূপ নিবে। জনৈক সাহাবী বললেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! প্রয়োজন সমপরিমাণ সম্পদ বলতে আপনি কতটুকু সম্পদকে বুঝাচ্ছেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: পঞ্চাশ দিরহাম রুপা অথবা উহার সমপরিমাণ স্বর্ণ’’। (আবূ দাউদ ১৬২৬)

অপ্রয়োজনীয় ভিক্ষাবৃত্তি করা মানে প্রচুর পরিমাণ জাহান্নামের অগ্নি সঞ্চয় করা।

সাহ্ল্ বিন্ হান্যালিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ سَأَلَ وَعِنْدَهُ مَا يُغْنِيْهِ فَإِنَّمَا يَسْتَكْثِرُ مِنَ النَّارِ، وَفِيْ لَفْظٍ: مِنْ جَمْرِ جَهَنَّمَ، فَقَالُوْا: يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَمَا يُغْنِيْهِ ؟ وَفِيْ آخَـرَ: وَمَا الْغِنَى الَّذِيْ لَا تَنْبَغِيْ مَعَهُ الْمَسْأَلَةُ ؟ قَالَ: قَدْرُ مَا يُغَدِّيْهِ وَيُعَشِّيْهِ، وَفِيْ آخَرَ: أَنْ يَّكُوْنَ لَهُ شِبْعُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ أَوْ لَيْلَةٍ وَيَوْمٍ.

‘‘যে ব্যক্তি কারোর কাছে কোন কিছু ভিক্ষা চাইলো; অথচ তার নিকট তার প্রয়োজন সমপরিমাণ সম্পদ রয়েছে তা হলে সে যেন জাহান্নামের অঙ্গার প্রচুর পরিমাণে সঞ্চয় করলো। সাহাবাগণ বললেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! প্রয়োজন সমপরিমাণ সম্পদ বলতে আপনি কতটুকু সম্পদকে বুঝাচ্ছেন? অথবা কারোর নিকট কতটুকু ধন-সম্পদ থাকলে আর তার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি করা অনুচিৎ? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: সকাল-সন্ধ্যার খানা অথবা পুরো দিনের পেটভরে খাবার’’। (আবূ দাউদ ১৬২৯)

ধনী হওয়ার নেশায় ভিক্ষাকারী কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে তার চেহারায় কোন গোস্তই থাকবে না।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَسْأَلُ النَّاسَ حَتَّى يَأْتِيَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَيْسَ فِيْ وَجْهِهِ مُزْعَةُ لَـحْمٍ.

‘‘কোন ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তির পেশা চালু রাখলে সে কিয়ামতের দিন (আল্লাহ্ তা‘আলার সামনে) এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার চেহারায় গোস্তের কোন টুকরাই অবশিষ্ট থাকবে না’’। (বুখারী ১৪৭৪; মুসলিম ১০৪০)

ধনী অথবা কর্ম করতে সক্ষম এমন কোন ব্যক্তি কারোর নিকট সাদাকা চাইতেও পারে না এবং খেতেও পারে না।

একদা সুঠাম দেহের দু’জন লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সাদাকা নিতে আসলে তিনি তাদেরকে বললেন:

إِنْ شِئْتُمَا أَعْطَيْتُكُمَا، وَلَا حَظَّ فِيْهَا لِغَنِيٍّ وَلَا لِقَوِيٍّ مُكْتَسِبٍ.

‘‘তোমরা উভয় আমার নিকট সাদাকা চাইলে আমি তা তোমাদেরকে দিতে পারি। তবে তোমরা এ কথা সর্বদা মনে রাখবে যে, ধনী ও কর্ম করতে সক্ষম এমন শক্তিশালী পুরুষের জন্য সাদাকায় কোন অধিকার নেই’’। (আবূ দাউদ ১৬৩৩)

তবে পাঁচ প্রকারের ধনীর জন্য সাদাকা খাওয়া জায়িয।

‘আত্বা (রাহিমাহুল্লাহ্) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

لَا تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِغَنِيٍّ إِلاَّ لِخَمْسَةٍ: لِغَازٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ، أَوْ لِعَـامِلٍ عَلَيْهَا، أَوْ لِغَارِمٍ، أَوْ لِرَجُلٍ اشْتَرَاهَا بِمَالِهِ، أَوْ لِرَجُلٍ كَانَ لَهُ جَارٌ مِسْكِيْنٌ فَتُصُدِّقَ عَلَى الْـمِسْكِيْنِ فَأَهَدَاهَا الْـمِسْكِيْنُ لِلْغَنِيِّ.

‘‘শুধুমাত্র পাঁচ ধরনের ধনীর জন্যই সাদাকা খাওয়া জায়িয। আল্লাহ্’র পথে লড়াইকারী, সাদাকা উঠানোর কাজে নিযুক্ত সরকারী কর্মচারী, অন্যের জরিমানা বা দিয়াত বহনকারী, যে ধনী ব্যক্তি নিজ পয়সা দিয়েই সাদাকার বস্ত্ত কিনে নিয়েছে, যে ধনী ব্যক্তির প্রতিবেশী গরিব এবং তাকেই কেউ কোন কিছু সাদাকা দিলে সে যদি তা ধনী ব্যক্তিকে হাদিয়া হিসেবে দেয়’’। (আবূ দাউদ ১৬৩৫)

কেউ যদি নিজ জীবন এমনভাবে পরিচালনা করতে পারে যে, সে কখনো কারোর নিকট কোন কিছুই চায় না তা হলে এমন ব্যক্তির জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতের দায়িত্ব নেন।

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ يَّكْفُلُ لِيْ أَنْ لاَّ يَسْأَلَ النَّاسَ شَيْئًا، وَأَتَكَفَّلُ لَهُ بِالْجَنَّةِ، فَقَالَ ثَوْبَانُ: أَنَا ؛ فَكَانَ لَا يَسْأَلُ أَحَدًا شَيْئًا.

‘‘যে ব্যক্তি আমার জন্য এ দায়িত্ব নিবে যে, সে আর কারোর কাছে কোন কিছুই চাইবে না তা হলে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নেবো। সাওবান (রাঃ) বললেন: আমিই হবো সেই ব্যক্তি। আর তখন থেকেই সাওবান (রাঃ) কারোর নিকট কোন কিছুই চাইতেন না’’। (আবূ দাউদ ১৬৪৩)

তবে প্রশাসনিক কোন ব্যক্তির কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় কোন কিছু চাওয়া যায়। যা না হলেই নয়।

সামুরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

الْـمَسَائِلُ كُدُوْحٌ يَكْدَحُ بِهَا الرَّجُلُ وَجْهَهُ، فَمَنْ شَاءَ أَبْقَى عَلَى وَجْهِهِ، وَمَنْ شَاءَ تَرَكَ، إِلاَّ أَنْ يَّسْأَلَ الرَّجُلُ ذَا سُلْطَانٍ، أَوْ فِيْ أَمْرٍ لَا يَجِدُ مِنْهُ بُدٌّ.

‘‘ভিক্ষাবৃত্তি ক্ষতের ন্যায়। যার মাধ্যমে মানুষ তার নিজ চেহারাকেই ক্ষতবিক্ষত করে। সুতরাং যে চায় তার চেহারায় ক্ষতগুলো থেকে যাক সেই ভিক্ষাবৃত্তি করবে। আর যে চায় তার চেহারায় ক্ষতগুলো না থাকুক সে যেন ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেয়। তবে প্রশাসনিক কোন ব্যক্তির কাছে কিছু চাওয়া যায় অথবা এমন ব্যাপারে কারোর কাছে কিছু চাওয়া যায় যা না হলেই নয়’’। (আবূ দাউদ ১৬৩৯)

ক্বাবীস্বাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট সাদাকা চাইলে তিনি আমাকে বলেন:

يَا قَبِيْصَةُ! إِنَّ الْـمَسْأَلَةَ لَا تَحِلُّ إِلاَّ لِأَحَدِ ثَلَاثَةٍ: رَجُلٍ تَحَمَّلَ حَمَالَةً، فَحَلَّتْ لَهُ الْـمَسْأَلَةُ، فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيْبَهَا، ثُمَّ يُمْسِكُ، وَرَجُـلٍ أَصَابَتْهُ جَائِحَةٌ فَاجْتَاحَتْ مَالَهُ، فَحَلَّتْ لَهُ الْـمَسْأَلَةُ، فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيْبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ أَوْ قَالَ: سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ، وَرَجُلٍ أَصَابَتْهُ فَاقَةٌ حَتَّى يَقُوْلَ ثَلَاثَةٌ مِنْ ذَوِيْ الْحِجَى مِنْ قَوْمِهِ : قَدْ أَصَابَتْ فُلَانًا الْفَاقَةُ، فَحَلَّتْ لَهُ الْـمَسْأَلَةُ، فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيْبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ أَوْ سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ، ثُمَّ يُمْسِكُ، وَمَا سِوَاهُنَّ مِنَ الْـمَسْأَلَةِ ـ يَا قَبِيْصَةُ ـ سُحْتٌ ؛ يَأْكُلُهَا صَاحِبُهَا سُحْتًا.

‘‘হে ক্বাবীস্বাহ্! ভিক্ষা শুধুমাত্র তিন ব্যক্তির জন্যই জায়িয। তার মধ্যে একজন হচ্ছে, যে ব্যক্তি অন্য কারোর পক্ষ থেকে জরিমানা বা দিয়াত জাতীয় কোন কিছুর যামানত কিংবা দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে তখন তার জন্য ভিক্ষা করা জায়িয যতক্ষণ না সে তা সংগ্রহ করতে পারে। তবে তা সংগ্রহ হয়ে গেলে সে আর ভিক্ষা করবে না। অপরজন হচ্ছে, যাকে প্রাকৃতিক কোন বড় দুর্যোগ পেয়ে বসেছে যার দরুন তার সকল সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে তখনও তার জন্য ভিক্ষা করা জায়িয যতক্ষণ না সে তার প্রয়োজনীয় জীবিকা সংগ্রহ করতে পারে। আরেকজন হচ্ছে, যে ব্যক্তি অভাবের কষাঘাতে একেবারেই জর্জরিত এমনকি তার বংশের তিনজন বুদ্ধিমানও এ ব্যাপারে তাকে সার্টিফাই করেছে যে, সে সত্যিই অভাবগ্রস্ত তখনও তার জন্য ভিক্ষা করা জায়িয যতক্ষণ না সে তার প্রয়োজনীয় জীবিকা সংগ্রহ করতে পারে। তবে তা সংগ্রহ হয়ে গেলে সে আর ভিক্ষা করবে না। হে ক্বাবীস্বাহ্! এ ছাড়া আর সকল ভিক্ষাবৃত্তি হারাম। ভিক্ষুক যা হারাম হিসেবেই ভক্ষণ করবে’’। (আবূ দাউদ ১৬৪০)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভিক্ষাবৃত্তির প্রতি সর্বদা সাহাবাদেরকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি তাঁদেরকে এও বলেছেন: যে ব্যক্তি নিজ অভাবের কথা একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাকেই বলবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার সে অভাব দূর করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি নিজ অভাবের কথা একমাত্র মানুষকেই বলবে তার সে অভাব কখনোই দূর হবে না।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্’ঊদ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ أَصَابَتْهُ فَاقَةٌ فَأَنْزَلَهَا بِالنَّاسِ لَمْ تُسَدْ فَاقَتُهُ، وَمَنْ أَنْزَلَهَا بِاللهِ أَوْشَكَ اللهُ لَهُ بِالْغِنَى ؛ إِمَّا بِمَوْتٍ عَاجِلٍ أَوْ غِنًى عَاجِلٍ.

‘‘যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত হলে শুধুমাত্র মানুষের কাছেই ধরনা দেয় তার অভাব কখনোই দূর হবে না। আর যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত হলে একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার কাছেই ধরনা দিবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার অভাব অতিসত্বর দূর করে দিবেন। আর তা এভাবে যে, অতিসত্বর সে মৃত্যু বরণ করবে অথবা অতিসত্বর সে ধনী হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ১৬৪৫)

তবে কেউ কাউকে চাওয়া ছাড়াই কোন কিছু দিলে সে তা গ্রহণ করতে পারে। প্রয়োজনে সে তা খাবে এবং বাকিটুকু সাদাকা করবে।

’উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

إِذَا أُعْطِيْتَ شَيْئًا مِنْ غَيْرِ أَنْ تَسْأَلَهُ فَكُلْ وَتَصَدَّقْ.

‘‘তোমাকে চাওয়া ছাড়াই কোন কিছু দেয়া হলে তুমি তা খাবে এবং বাকিটুকু সাদাকা করবে’’। (আবূ দাউদ ১৬৪৭)

’উমর (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝে মাঝে আমাকে কিছু দান করলে আমি তাঁকে বলতাম: আপনি আমাকে তা না দিয়ে আমার চাইতেও যার প্রয়োজন বেশি তাকে দিন তখন তিনি বলেন:

خُـذْهُ، إِذَا جَاءَكَ مِنَ الْـمَالِ شَيْءٌ وَأَنْتَ غَيْرُ مُشْرِفٍ وَلَا سَائِلٍ فَخُذْهُ، وَمَا لَا فَلَا تُتْبِعْهُ نَفْسَكَ.

‘‘তুমি এটি নিয়ে নাও। মনে রাখবে, তোমার নিকট এমনিতেই কোন সম্পদ এসে গেলে; অথচ তুমি তা চাওনি এবং উহার জন্য তুমি লালায়িতও ছিলে না তা হলে তুমি তা নিতে পারো। আর যা এমনিতেই আসছে না সে জন্য তুমি কখনো লালায়িত হয়ো না’’।

(বুখারী ১৪৭৩; মুসলিম ১০৪৫)

সম্পদের প্রতি চরমভাবে লালায়িত না হয়ে তা সহজে ও শরীয়ত সম্মত উপায়ে সংগ্রহ করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তাতে বরকত দিয়ে থাকেন। ঠিক এরই বিপরীতে সম্পদের প্রতি অত্যন্ত লালায়িত হয়ে তা সংগ্রহ করলে তাতে আল্লাহ্ তা‘আলা কখনো বরকত দেন না।

’হাকীম বিন্ ’হিযাম (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু চাইলে তিনি তাকে তা দেন, আরো চাইলে আরো দেন, আরো চাইলে আরো দেন এবং বলেন:

يَا حَكِيْمُ! إِنَّ هَذَا الْـمَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ، فَمَنْ أَخَذَهُ بِسَخَاوَةِ نَفْسٍ بُوْرِكَ لَهُ فِيْهِ، وَمَنْ أَخَذَهُ بِإِشْرَافِ نَفْسٍ لَمْ يُبَارَكْ لَهُ فِيْهِ كَالَّذِيْ يَأْكُلُ وَلَا يَشْبَعُ.

‘‘হে ’হাকীম! এ দুনিয়ার সম্পদ তো হৃদয়গ্রাহী মনোরম। (অতএব তা সবাই সঞ্চয় করতে চাইবে) সুতরাং যে ব্যক্তি তার প্রতি লালায়িত না হয়ে তা গ্রহণ করে তাতে সত্যিই বরকত হয়। আর যে ব্যক্তি তার প্রতি লালায়িত হয়ে সঞ্চয় করে তাতে বরকত দেয়া হয় না। যেমন: যে ব্যক্তি খায় কিন্তু তার পেট ভরে না’’। (বুখারী ১৪৭২)

ভিক্ষা করার চাইতে নিজের হাতে কামাই করে খাওয়া অনেক উত্তম।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

لَأَنْ يَأْخُذُ أَحَدُكُمْ حَبْلَهُ ثُمَّ يَغْدُوَ إِلَى الْـجَبَلِ، فَيَحْتَطِبَ، فَيَبِيْعَ، فَيَأْكُلَ وَيَتَصَدَّقَ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَّسْأَلَ النَّاسَ.

‘‘তোমাদের কেউ ভোর বেলায় রশি হাতে নিয়ে পাহাড়ে গিয়ে কাঠ কেটে তা বিক্রি করে বিক্রিলব্ধ পয়সা কিছু খাবে আর বাকিটুকু সাদাকা করবে তা তার জন্য অনেক উত্তম মানুষের নিকট হাত পাতার চাইতে’’। (বুখারী ১৪৮০; মুসলিম ১০৪২)