উত্তরঃ এই কাজ জায়েয হয়নি। যে মহিলা ওমরা করতে চায়, ঋতুগ্রস্ত থাকা সত্ত্বেও বিনা ইহরামে মীক্বাত অতিক্রম করা তার জন্য জায়েয নয়। সেজন্য সে ঋতুগ্রস্ত অবস্থায় ইহরাম বাঁধবে এবং তার ইহরাম সম্পন্ন ও শুদ্ধ হবে। এর পক্ষে দলীল হচ্ছে- আবু বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস (রাযিয়াল্লাহু আনহা) সন্তান প্রসব করলেন। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বিদায় হজ্জের উদ্দেশ্যে যুল হুলায়ফাতে অবতরণ করেছেন। এমতাবস্থায় তিনি রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট খবর পাঠালেন যে, আমি এখন কি করব? রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “তুমি গোসল কর এবং ওখানে একটা ন্যাকড়া বেঁধে ইহরাম বাঁধ।”[1] আর ঋতুর রক্ত প্রসূতি অবস্থার রক্তের মতই। সেজন্য ঋতুবতী ওমরা বা হজ্জের উদ্দেশ্যে মীক্বাত অতিক্রম করলে আমরা তাকে বলি, তুমি গোসল করে এবং একটা ন্যাকড়া বেঁধে ইহরাম বাঁধ। হাদীছে উল্লেখিত (الاستثفار) শব্দের অর্থ হলো, “সে তার লজ্জাস্থানে একটা ন্যাকড়া বাঁধবে”। অতঃপর হজ্জ বা ওমরার ইহরাম বাঁধবে। তবে সে ইহরাম বেঁধে মক্কায় পৌঁছে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত কাবা ঘরে আসবে না এবং তওয়াফও করবে না। এজন্য ওমরার মাঝামাঝি সময়ে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ঋতুগ্রস্ত হলে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উদ্দেশ্যে বলেন, “হজ্জ পালনকারী যা করে, তুমিও তাই কর। তবে পবিত্র না হয়ে তুমি কাবা ঘর তওয়াফ করো না।”[2] এটি হচ্ছে বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনা। ছহীহ বুখারীতে এসেছে, আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) উল্লেখ করেন, তিনি পবিত্র হয়ে কাবা ঘর তওয়াফ করেছেন এবং ছাফা-মারওয়া সাঈ করেছেন।[3] এই হাদীছ প্রমাণ করে যে, মহিলা যদি ঋতুগ্রস্ত অবস্থায় হজ্জ বা ওমরার ইহরাম বাঁধে অথবা তওয়াফের পূর্ব মুহূর্তে তার ঋতুস্রাব আসে, তাহলে সে পবিত্র না হয়ে এবং গোসল না করে তওয়াফ বা সাঈ কোনটাই করবে না।
তবে যদি সে পবিত্র অবস্থায় তওয়াফ করে এবং তওয়াফ শেষে তার ঋতুস্রাব আসে, তাহলে সে হজ্জ বা ওমরার কাজ অব্যাহত রাখবে এবং সাঈও করবে- যদিও তার শরীরে ঋতুস্রাব থাকে। এরপর চুল ছেঁটে ওমরার কাজ শেষ করবে। কেননা ছাফা-মারওয়াতে সাঈর জন্য পবিত্র থাকা শর্ত নয়।
1. বুখারী, 'হজ্জ' অধ্যায়, 'ঋতুবতী কা'বা ঘরের তওয়াফ ছাড়া হজ্জের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করবে' অনুচ্ছেদ হা/১৬৫০; মুসলিম, 'হজ্জ' অধ্যায়, 'ইহরামের বিভিন্ন ধরন বা পদ্ধতির বিবরণ' অনুচ্ছেদ হা/১২০, ১২১১।
2. বুখারী, 'ওমরা' অধ্যায়, 'তান'ঈম থেকে ওমরা' অনুচ্ছেদ হা/১৭৮৫।