নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ অবৈধ ঝাড়-ফুঁক, তাবীজ-কবজ ও “তেওয়ালা” (আসক্ত করা যাদু) নিশ্চয়ই শিরকের অন্তর্ভুক্ত। (মুসনাদে আহমদঃ ১/৩৮১, আবু দাউদঃ ৩৮৮৩ ইত্যাদি আলবানী (রহঃ) সহীহ বলেছেন।)
আল্লামা ইবনে আছীর (রাহেমাহুল্লাহ) বলেন, “তেওয়ালা" অর্থ হল এমন পস্থা অবলম্বন করা যার ফলে স্ত্রী স্বামীর নিকট যাদু বা অন্য কিছুর মাধ্যমে প্রিয় হয়ে যায়। যা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেননা তাদের বিশ্বাস হয় যে, এসব কিছু আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীর ব্যতীতই এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে এমনটি হয়ে গেল। (আন-নিহায়াঃ ১/২০০)। আমি এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে চাই যে, হাদীসে যে বিষয়ের ঝাড়-ফুক নিষেধ এসেছে তা সেই সব ঝাড়-ফুক যার দ্বারা জ্বিন শয়তান ও অন্য কিছুর সাহায্য নেয়া হয় ও যার মধ্যে শিরক আছে। তবে যেই ঝাড়-ফুক কুরআন আর হাদীস থেকে হবে তা জায়েয তাতে কোন মতবিরোধ নেই। সহীহ মুসলিমে আছে, ঝাড়-ফুকে কোন সমস্যা নেই যদি তাতে কোন শিরক না থাকে।
আসক্তকারী যাদুর লক্ষণসমূহঃ
১। অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে যাওয়া ও ভালোবাসা।
২। সর্বদায় সহবাস করতে চাওয়া।
৩। সহবাসের জন্য অধৈর্য হয়ে যাওয়া।
৪। স্ত্রীকে দেখার জন্যে অস্থির হয়ে যাওয়া।
৫। স্ত্রীর বশে ও তাবে হয়ে যাওয়া ।
সাধারণত স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েই থাকে আবার তা স্বাভাবিক হয়ে যায়; কিন্তু কতক মহিলা অধৈর্য হয়ে যাদুকরের কাছে ছুটে যায় যাতে যাদুর মাধ্যমে ভালবাসা অধিক মাত্রায় আদায় করতে পারে। এর কারণ মহিলার দ্বীনদারীর অভাব ও তার অজ্ঞতা যে, এটি নিশ্চয়ই হারাম। যাদুকর মহিলার কাছে তার স্বামীর কোন কাপড় যেমনঃ রুমাল, টুপি, জামা, গেঞ্জি ইত্যাদি চায় যাতে তার ঘামের গন্ধ থাকে যা নতুন অথবা ধোয়া নয়, বরং ব্যবহৃত। যাদুকর তা থেকে সূতা নেয় আর তাতে গিরা লাগিয়ে কিছু পড়ে ফু দেয়। এরপর সেই মহিলাকে বলে, এই সূতাগুলো নির্জন স্থানে পূতে রাখার জন্যে অথবা খাদ্য দ্রব্যে অথবা পানিতে যাদুর ফু দিয়ে দেয়। এই যাদুর নিকৃষ্ট পদ্ধতি হল, অপবিত্র জিনিষ দ্বারা যাদু করা। যেমনঃ হয়েযের রক্ত দিয়ে যাদু করা। অতঃপর সেই মহিলাকে বলা হয়, তা তার স্বামীকে খাইয়ে দিবে বা তার আতর সুগন্ধির সাথে মিশিয়ে দেবে।
১ । কখনো যাদুর দ্বারা স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জানি, যে তিন বছর এই প্রকার যাদুর প্রভাবে অসুস্থ ছিল।
২। কখনো আবার ভালবাসার পরিবর্তে ঘৃণা সৃষ্টি হতে থাকে। আর এটা এজন্য যে, কিছু যাদুকর যাদুর মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান রাখে না।
৩। কখনো স্ত্রী তার স্বামীর জন্য এমন যাদু করে বসে যে, তার স্বামী যেন সব মহিলাকে ঘৃণা করে কেবল তাকেই ভালবাসে। যার ফলে সেই ব্যক্তি নিজের মা-বোন এবং তার আত্মীয় মহিলাদের ঘৃণা করতে থাকে।
৪। কখনও তার দ্বিমূখী যাদুর ক্রিয়া উল্টে গিয়ে স্বামী সকল মহিলাকে ঘৃণার সাথে স্ত্রীকেও ঘৃণা করা শুরু করে। এমন খবরও পেয়েছি যে, স্বামী কাছে যায় যাতে যাদুর প্রভাব নষ্ট করে দেয়; কিন্তু ঘটনাক্রমে যাদুকর তার পোঁছার আগেই মারা গেছে।
১ । স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মাঝে মতভেদ।
২। স্বামীর ধনের প্রতি স্ত্রীর লোভ, বিশেষ করে যদি স্বামী ধনি হয়ে থাকে।
৩। স্ত্রীর ধারণা যে, স্বামী হয়ত অন্য বিবাহ করবে, অথচ শরীয়তে তা জায়েয, তাতে কোন দোষ নেই; কিন্তু বর্তমান যুগের মহিলা বিশেষ করে ধ্বংসাত্মক মিডিয়া প্রভাবিত মহিলারা ধারণা করে থাকে যে, তাদের স্বামী অন্য বিবাহ করার অর্থ হলো সে তাকে ভালোবাসে না। এটি একটি মারাত্মক ভুল। কেননা এমন অনেক কারণ রয়েছে যার ফলে পুরুষ এক, দুই, তিন ও চার পর্যন্ত বিবাহ করে। অথচ দেখা যায় সে তার প্রথম স্ত্রীকেই বেশি ভালোবাসে। যেমনঃ কেউ অধিক সন্তান লাভের জন্য বা কেউ স্ত্রীর ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসবোত্তর স্রাবের সময় সহবাস না করে ধৈর্য ধরতে পারে না বা কেউ কোন বিশেষ পরিবারের সাথে সম্পর্ক গড়তে চায় বা আরো অনেক কারণ থাকতে পারে।
এটা এমন এক বিষয় যা আমি ফরজ মনে করি মুসলিম রমনীদের জানানো। কথা হল যে, প্রত্যেক নারীই তার স্বামীর ভালবাসা পাওয়ার জন্যে বৈধ যাদু বা পন্থা অবলম্বন করতে পারে।
যেমন স্ত্রী তার স্বামীর জন্যে নিজেকে সুসজ্জিত ও পরিপাটি করে রাখবে, স্বামীর সাথে মিষ্টি কথা বলবে, অনুরূপ ফুটন্ত মুচকি হাসি উত্তম ব্যবহার করবে। যাতে তার স্বামী এদিক সেদিক দৃষ্টি না দেয়; বরং নিজের স্ত্রীর দ্বারাই প্রভাবিত থাকে। এছাড়া স্বামীর সম্পদের হেফাযত করবে, তার সন্তানদের যত্ন নিবে। আল্লাহর অবাধ্যতায় ব্যতীত স্বামীকে মান্য করে চলবে; কিন্তু আজকের বিশ্বে দৃষ্টি দিলে সম্পূর্ণই এর বিপরীত দেখতে পাওয়া যায়।
কোন মহিলা কোন অনুষ্ঠানে গেলে অথবা নিজের বান্ধবীদের সাক্ষাতে গেলে এমন ভাবে সাজ-গোছ করে ও গয়না পরে, যেন সে বাসর রাতের বধু। অতঃপর যখন সে সেখান হতে ফিরে আসে সম্পূর্ণরূপে তা খুলে স্বীয় স্থানে রেখে পরবর্তী অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় থাকে অথচ তার স্বামী বেচারা যে তার জন্য এসব বস্ত্র ও গয়না ক্রয় করেছে সে বঞ্চিতই থেকে যায় তা উপভোগ করা হতে। সে তাকে গৃহে সেই পুরাতন পোশাকেই পায়, যা হতে পিয়াজ ও রসুন ও পাকের দুর্গন্ধই বের হয়। নারী যদি জ্ঞান করে তবে সে অবশ্যই বুঝবে যে, নিশ্চয়ই তার স্বামীই তার সাজ-সজ্জা ও সৌন্দর্য উপভোগের অগ্রাধিকারী। সুতরাং তোমার স্বামী যখন কাজের জন্য বেরিয়ে যায়, তখন দ্রুত তুমি ঘরের কাজ-কর্ম সেরে গোসল করে, সৌন্দর্য ও সুসজ্জিত হয়ে তার অপেক্ষায় থাক। স্বামী কর্ম হতে ফিরলে তাকে মুচকি হাসি দিয়ে অভ্যর্থনা জানাও। সে যখন গৃহে প্রত্যাবর্তন করে তার সুন্দরী স্ত্রীকে সামনে পাবে, পানাহারও প্রস্তুত, ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, তবে অবশ্যই তার ভালোবাসা তোমার প্রতি অনেক গুণে বেড়ে যাবে। আল্লাহর শপথ! এটিই তোমার জন্য বৈধ যাদু হিসেবে পাবে। বিশেষ করে তুমি যদি তোমার সৌন্দর্য গ্রহণের নিয়ত কর আল্লাহর হুকুমের অনুসরণ তারপর স্বামীর দৃষ্টিশক্তি অবনমিত করা। কেননা পরিতৃপ্ত কখনও খাদ্যের আগ্রহ রাখে না; বরং যে তা হতে বঞ্চিত সেই আগ্রহ রাখে। এ মূল্যবান কথাটির প্রতি একটু দৃষ্টি দিবে।
১। রোগীর জন্যে সেই সব আয়াত পড়তে হবে যা পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে। তার মধ্যে সূরা বাকারার ১০২ না পড়ে বরং সূরা তাগাবুন-এর ১৪, ১৫ ও ১৬ নং আয়াত পড়বেঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلَادِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ وَإِنْ تَعْفُوا وَتَصْفَحُوا وَتَغْفِرُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ، إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَاللَّهُ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ، فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَأَنْفِقُوا خَيْرًا لِأَنْفُسِكُمْ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
অর্থঃ হে মুমিনগণ! নিশ্চয় তোমাদের স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে কতক তোমাদের শক্র । অতএব এদের থেকে সাবধান থাক। আর যদি তাদের ক্ষমা করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল ও করুণাময়। নিশ্চয় তোমাদের সম্পদসমূহ ও সন্তানাদি পরীক্ষাস্বরূপ আর আল্লাহর কাছে অনেক নেকী রয়েছে। সুতরাং আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর এবং তার কথা শোন এবং মান আর তোমাদের নিজেদের মঙ্গলের জন্যে (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় কর। আর যারা নিজেকে কৃপণতা থেকে বাঁচালো তারাই সফলকাম। (সূরা সোয়াদঃ ১০৮, ১১৬) পড়তে হবে।
২। এক্ষেত্রে রোগী সাধারণতঃ বেহুশ হবে না তবে পার্শ্বদেশ অবশ হয়ে আসবে। মাথা ব্যথা ও বুক ধড়ফড় অনুভব করবে অথবা সে বারবার বমি করবে অথবা পেটে চরম ব্যাথা করবে যদি বিশেষ করে যাদু পান করানো হয়। সুতরাং সে যদি পেটে ব্যাথা অনুভব করে অথবা বমি করতে চায় তবে নিম্নের আয়াতসমূহ পড়ে পানিতে ফু দিবে আর সেই পানি নিজের সামনেই রোগীকে পান করাবে। যদি পানি পান করার পর রোগীর কাল অথবা লাল বমি হয় তবে বুঝতে যে, যাদু শেষ হয়ে গেছে। আর না হয় এই পানি তিন সপ্তাহ অথবা এর বেশী পান করতে বলা হবে। যাতে যাদু শেষ হয়ে যায়। সেই আয়াত হল এইঃ
১।
فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ، وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ
অর্থঃ “অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করলো, তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ যাদু এটাই; নিশ্চয়ই আল্লাহ এখনই এটাকে বানচাল করে দিবেন; (কেননা) আল্লাহ এমন বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাজ সম্পন্ন হতে দেন না। আর আল্লাহ স্বীয় অঙ্গীকার অনুযায়ী হক প্রতিষ্ঠিত করে দেন, যদিও পাপাচারীরা তা অপ্রীতিকর মনে করে।" (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)
২।
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ، فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ، فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانْقَلَبُوا صَاغِرِينَ، وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ، قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ، رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ
অর্থঃ “তখন আমি মূসা-এর নিকট এই প্রত্যাদেশ পাঠালামঃ তুমি তোমার লাঠিখানা নিক্ষেপ কর, মূসা (আলাইহিস সালাম) তা নিক্ষেপ করলে ওটা একটা বিরাট সাপ হয়ে সহসা ওদের অলীক (মিথ্যা) সৃষ্টিগুলোকে গিলে ফেলল। পরিশেষে যা হক ছিল তা সত্য প্রমাণিত হলো, আর যা কিছু বানানো হয়েছিল তা বাতিল প্রমাণিত হলো। আর ফিরাউন ও তার দলবলের লোকেরা মুকাবিলার ময়দানে পরাজিত হলো এবং লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে গেল। যাদুকরগণ তখন সিজদায় পড়ে গেল। তারা আনলাম। (জিজ্ঞেস করা হলো— কোন বিশ্ব প্রতিপালকের প্রতি? তারা উত্তরে বললো) মূসা ও হারূনের প্রতিপালকের প্রতি " (সূরা আরাফঃ ১১৭-১২২)
৩।
إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ
অর্থঃ “তারা যা করেছে তা তো শুধু যাদুকরের কৌশল; যাদুকর যেখানেই আসুক সফল হবে না।" (সূরা ত্বো-হাঃ ৬৯)
৪।
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
অর্থঃ “আল্লাহ তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি চিরজীবন্ত ও সবার রক্ষণা-বেক্ষণকারী, তন্দ্রা ও নিদ্রা তাকে স্পর্শ করে না, নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সব তারই এমন কে আছে যে তার অনুমতি ব্যতীত তার নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখের ও পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন; তিনি যা ইচ্ছে করেন তা ব্যতীত তার অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না; তার কুরসী নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল পরিব্যপ্ত হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাকে পরিশ্রান্ত করে না এবং তিনি সমুন্নত, মহীয়ান!" (সূরা বাকরাঃ ২৫৫)
আয়াতগুলি পানির উপর পড়ুন তবে স্ত্রীর অগোচরে পড়তে হবে। কেননা সে জানতে পারলে পুনরায় সে যাদুর আশ্রয় নিবে।
এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে বলতে লাগল, প্রথম অবস্থায় আমি আমার স্ত্রীর সাথে স্বাভাবিক জীবন -যাপন করতাম। এখন জানি না কি হয়ে গেল স্ত্রী থেকে দূরে থাকতে পারি না। কাজের সময়ও তারই ধ্যান চলে আসে। কাজ শেষ হলে দ্রুত স্ত্রীর কাছে পৌছার জন্যে তৎপর থাকি। যদি মেহমানদের মাঝে বসে থাকি তবুও বার বার তাদেরকে রেখে স্ত্রীর কাছে চলে যাই। সব সময় আমি তার পিছনেই থাকি। বুঝে আসছে না আমার কি হয়ে গেল। তাকে ছাড়া আমি আর টিকতে পারছি না। সেই যেন আমাকে এখন পরিচালনা করছে। সে যদি রান্না ঘরে যায় আমি তার পিছে, সে যদি শয়ন কক্ষে যায় আমি তার পিছে পিছে, আমি তার পিছে পিছে সে যখন ঝাড় দেয়। জানি না আমার কি হয়ে গেছে। সে যখন কোন কিছুর আবদার করে সঙ্গে সঙ্গেই তা আমি পূরণ করে দেই।
এসব কথা শোনার পর আমি উল্লেখিত আয়াত পড়ে পানিতে ফু দিয়ে দিলাম আর তাকে দিয়ে বললাম, তিন সপ্তাহ পর্যন্ত পানি পান করবে এবং তা দিয়ে গোসল করবে। আর তিন সপ্তাহ পর আমার কাছে আসতে বললাম এবং সাবধান করলাম যে, তার স্ত্রী যেন জানতে না পারে। সে এমনটিই করল এবং সে বলল যে সে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে তবে কিছু লক্ষণ এখনো আছে। আমি তার জন্য দ্বিতীয়বার সেই চিকিৎসাই করলাম। আলহামদুলিল্লাহ এসব আল্লাহ তায়ালার করুণা। আমার এর মধ্যে কোন কর্তৃত্ব নেই।