ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) এরপর বলেছেন: ‘‘আল্লাহর নৈকট্য এবং তাঁর দূরত্ব কোনো স্থানের দূরত্ব বা স্থানের নৈকট্য নয়। সম্মান বা অসম্মানের অর্থেও নয়। অনুগত বান্দা কোনো স্বরূপ সন্ধান বা প্রকৃতি নির্ধারণ ছাড়াই আল্লাহর নিকটবর্তী। অবাধ্য বান্দা কোনো স্বরূপ সন্ধান বা প্রকৃতি নির্ধারণ ছাড়াই আল্লাহ থেকে দূরবর্তী। নৈকট্য, দূরত্ব, নিকটবর্তী হওয়া ইত্যাদি প্রার্থনাকারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অনুরূপভাবে জান্নাতে মহান আল্লাহর প্রতিবেশিত্ব বা নৈকট্য এবং মহান আল্লাহর সম্মুখে অবস্থান সবই স্বরূপ সন্ধান বা প্রকৃতি নির্ধারণ ছাড়া।’’

মহান আল্লাহ বিভিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বান্দার নিকটবর্তী, তিনি তার গলার ধমনী হতেও বেশি নিকটবর্তী, তিনি তার সাথে, তিনি নেককার বান্দাগণের নিকটবর্তী বা সাথে... ইত্যাদি। এগুলি সবই আল্লাহর সিফাত বা বিশেষণ। জাহমী ও মুতাযিলীগণ কখনো এ সকল বিশেষণের নানারূপ ব্যাখ্যা করেছে। কখনো এগুলির ভিত্তিতে মহান আল্লাহর আরশের উপর অধিষ্টিত হওয়ার বিশেষণ অস্বীকার করেছে। তাদের ধারণায় আল্লাহর নৈকট্য ও আরশের উপর অধিষ্ঠিত থাকার মধ্যে বৈপরীত্য রয়েছে। আসল বৈপরীত্য তাদের ধারণা ও চেতনায়; তারা মহান আল্লাহকে সৃষ্টির মত চিন্তা করে কল্পনা করেছে যে, তিনি একই সময়ে আরশে সমাসীন ও বান্দার নিকট হতে পারেন না। তারা ভাবতে পারে নি বা চায় নি যে, তিনি এরূপ মানবীয় সীমবদ্ধতার অনেক ঊর্ধ্বে। ইমাম আযম উল্লেখ করেছেন যে, এ সকল বিশেষণকেও একইভাবে কোনোরূপ তুলনা এবং স্বরূপসন্ধান ছাড়াই সরল অর্থে বিশ্বাস করতে হবে।