বাইআতের শর্ত বা দফাসমূহ পূর্বেই নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর ভয়াবহ দিক গুলো সম্পর্কে একবার ব্যাখ্যাও প্রদান করা হয়েছিল। যখন এ অতিরিক্ত সতর্কতার কথা বলা হল তখন লোকেরা সমস্বর বলে উঠলেন, ‘আস’আদ বিন যুরারাহ! নিজ হাত হটাও। আল্লাহর কসম! আমরা এ অঙ্গীকার ছাড়তে কিংবা ভঙ্গ করতে পারি না।[1] উপস্থিত জনতার এ উত্তরে আস’আদ বিন যুরারাহ ভালভাবে ওয়াকিফহাল হওয়ার সুযোগ লাভ করলেন যে, লোকেরা আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে আস’আদ বিন যুরারাহ মুসআব বিন উমায়েরের সাথে একযোগে মদীনায় ইসলাম প্রচার কার্যে লিপ্ত ছিলেন এবং সব চেয়ে বড় মুবাল্লেগ হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া যায় যে, তিনি অঙ্গীকার গ্রহণকারীদের ধর্মীয় নেতাও ছিলেন। ফলে তিনিই সর্বপ্রথম অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন। এ জন্য ইবনে ইসহাক্বের বর্ণনায় রয়েছে যে, বনু নাজ্জার বলেছেন আবূ উমামা আস’আদ বিন যুরারাহ সর্ব প্রথম মানুষ যিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন।[2] এরপর সাধারণ অঙ্গীকার অুনষ্ঠিত হয়। জাবির (রাঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে যে, আমরা একে একে দাঁড়ালাম আর নাবী কারীম (ﷺ) আমাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন। আর এর বিনিময়ে জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করলেন।[3]
অবশিষ্ট রইলেন দুজন মহিলা যাঁরা সেখানেই উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের শপথ হল মৌখিক। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কখনও কোন পরস্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন করেন নাই।[4]
[2] ইবনে ইসহাক্বের বর্ণনায় রয়েছে যে, বুন আব্দুল্ আশহাল বলেছেন সর্ব প্রথম অঙ্গীকার গ্রহণ করেন আবুল হাইশাম বিন তায়্যেহান। কা‘ব বিন মালিক বলেছেন যে, বারা বিন মা’রুর প্রথম অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। ইবনে হিশাম ১/৪৪৭ পৃঃ। আমার ধারনায় সম্ভবতঃ আবুল হাইশাম ও বারার সাথে বাইআতের পূর্বে যে কথাবার্তা হয়েছিল তাকেই মানুষ অঙ্গীকার বলে ধরে নিয়েছে। অন্যথায় এ সময় সর্বপ্রথম আগে যাওয়ার অধিকতর অধিকার আস’আদ বিন যুরারারই বয়েছে। আল্লাহই ভাল জানেন।
[3] মুসনাদে আহমাদ।
[4] সহীহুল মুসলিম বাবু কাইফিয়াতে বাইআতিন নিসা ২/ ১৩১ পৃঃ।