হাদীসের নামে জালিয়াতি অশুদ্ধ হাদীসের বিষয়ভিত্তিক মূলনীতি ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
অশুদ্ধ হাদীসের বিষয়ভিত্তিক মূলনীতি

জাল ও অনির্ভরযেগা্য হাদীস সংকলনের একটি বিশেষ পদ্ধতি: যে সকল বিষয়ে সকল হাদীস বা অধিকাংশ হাদীস বানোয়াট বা অনির্ভরযোগ্য সে সকল বিষয়কে একত্রিত করে সংকলিত করা। বানোয়াট হাদীস চিহ্নিত করণের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে আগ্রহী মুসলিম বিভিন্ন গ্রন্থের সহায়তা ছাড়াই অতি সহজে বুঝতে পারেন যে, এ হাদীসটি বানোয়াট; কারণ হাদীসটি যে বিষয়ে বর্ণিত সে বিষয়ে কোনো সহীহ হাদীস নেই। এ পদ্ধতিতে রচিত গ্রন্থাবলির মধ্যে অন্যতম গ্রন্থ ৭ম হিজরী শতকের অন্যতম মুহাদ্দিস ও হানাফী ফকীহ উমার ইবনু বাদর আল-মাউসিলী (৫৫৭-৬২২ হি) রচিত ‘আল-মুগনী’ গ্রন্থ। এছাড়া হিজরী একাদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হানাফী ফকীহ ও মুহাদ্দিস মোল্লা আলী কারী (১০১৪ হি), ত্রয়োদশ হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ শাফিয়ী ফকীহ, মুহাদ্দিস ও সূফী সাধক মুহাম্মাদ ইবনুস সাইয়িদ দরবেশ হূত (১২৭৬ হি) এবং অন্যান্য মুহাদ্দিস এ বিষয়ক কিছু মূলনীতি উল্লেখ করেছেন।

(ক) উমার ইবনু বাদর মাউসিলী হানাফী

আল্লামা উমার ইবনু বাদর ইবনু সাঈদ আল-মাউসিলী হাদীস, তাফসীর, ফিক্হ ইত্যাদি বিষয়ে অনেক মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘‘আল-মুগনী আনিল হিফযি ওয়াল কিতাব বি-কাউলিহিম লাম ইয়াসিহ্ শাইউন ফী হাযাল বাব’’ নামক গ্রন্থটি। এ দীর্ঘ নামের প্রতিপাদ্য হলো: ‘মুহাদ্দিসগণ সে সকল বিষয়ে বলেছেন যে, এ বিষয়ে কোনো হাদীসই সহীহ নয় সে বিষয়গুলোর বিবরণ। এগুলোর জন্য অন্য কোনো গ্রন্থ পাঠ ও মুখস্থ করার আর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।’ এ গ্রন্থে সংক্ষিপ্ত পরিসরে তিনি ১০১ টি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন, যে সকল বিষয়ে বর্ণিত সকল হাদীসই অশুদ্ধ বলে মুহাদ্দিসগণ উল্লেখ করেছেন। কোনো বিষয়ে কিছু হাদীস বিশুদ্ধ হলে তা উল্লেখ করে বাকি সকল হাদীস অশুদ্ধ বলে জানিয়েছেন। তাঁর গবেষণায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে বর্ণিত সকল হাদীসই জাল অথবা অতি দুর্বল: