সন্দেহের দিন হল ৩০শে শা’বান; যখন ২৯ তারিখে আকাশ ধূম্র বা মেঘাচ্ছন্ন থাকার ফলে চাঁদ দেখা সম্ভব হয় না। পক্ষান্তরে ২৯ তারীখে আকাশ পরিষ্কার থাকলে ৩০ তারিখ সন্দেহের দিন থাকে না।
বলা বাহুল্য, ১লা রমাযান কি না তা সন্দেহ করে পূর্বসতর্কতামূলক কাজ ভেবে ঐ দিন রোযা রাখা হারাম। এ কথার দলীল হল আম্মার বিন ইয়াসের (রাঃ)-এর উক্তি, ‘যে ব্যক্তি সন্দেহের দিন রোযা রাখল, সে আসলে আবুল কাসেম (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর নাফরমানী করল।’[1]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তোমরা রমাযানের আগে আগে এক অথবা দুই দিনের রোযা রেখো না। অবশ্য তার অভ্যাসগত কোন রোযা হলে সে রাখতে পারে।’’[2]
আর যেহেতু সন্দেহের দিন রোযা রাখা মহান আল্লাহর শরীয়ত-গন্ডীর এক প্রকার সীমালংঘন। কারণ, মহান আল্লাহ বলেন,
(فَمَنْ شَهِدَ منْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ)
অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে রোযা রাখে। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৫)
আর মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে ঈদ কর। কিন্তু আকাশে মেঘ থাকলে শা’বানের গুনতি ৩০ পূর্ণ করে নাও।’’[3]
যে ব্যক্তি সনেদহের সাথে ৩০শে শা’বান রোযা রাখে, অতঃপর বুঝতে পারে যে, সেদিন সত্য সত্যই ১লা রমাযান ছিল, সে ব্যক্তি এতদ্সত্ত্বেও ঐ দিনকার রোযা কাযা করবে। কারণ, সে আসলে ভিত্তিহীন রোযা রেখেছে। আর যে ব্যক্তি ভিত্তিহীন রোযা রাখে, তার রোযা যথেষ্ট নয়। সে তো আসলে চাঁদ না দেখে, চাঁদের অস্তিত্বের প্রমাণ না নিয়ে রোযা রেখেছে; যদিও প্রকৃতপক্ষে চাঁদ মেঘের আড়ালে বিদ্যমান ছিল।[4]
অবশ্য ঐ সন্দেহের দিন ৩০শে শা’বান যদি কেউ তার অভ্যাসগত রোযা (যেমন সোম অথবা বৃহস্পতিবার বলে) রাখে, তাহলে তা দূষণীয় নয়; যেমন সে কথা হাদীসেও স্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
[2] (বুখারী ১৯১৪, মুসলিম ১০৮২নং)
[3] (বুখারী ১৯০০, মুসলিম ১০৮০নং)
[4] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৩৯৬, তাযকীরু ইবাদির রাহমান, ফীমা অরাদা বিসিয়ামি শাহরি রামাযান ৩৯পৃঃ)