তারাবীহ ও শেষ দশকের কিয়ামুল লাইলের মাঝে রাকআত সংখ্যা ও নিয়ম-পদ্ধতির দিক থেকে কোন পার্থক্য নেই। উভয় নামায এক ও অভিন্ন। (তবে সাধারণতঃ এশার পর পড়লে তারাবীহ এবং মধ্য রাত্রির পর পড়লে কিয়ামুল লাইল বলা হয়।) শেষ দশকেও ঐ ১১ রাকআতই নামায সুন্নত। কারণ, মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘তিনি রমাযানে এবং অন্যান্য মাসেও ১১ রাকআত অপেক্ষা বেশী নামায পড়তেন না।’[1] এখানে তিনি শেষ দশকে পৃথক রাকআত সংখ্যার কথা উল্লেখ করেন নি। সুতরাং রমাযানের সকল রাত্রেই ১১ রাকআত কিয়াম পড়াই উত্তম। তবে শেষ দশকে ঐ নামায বেশী দীর্ঘ হবে। যেহেতু রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ঐ শেষ দশকে সারা সারা রাত নামায পড়তেন।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘শেষ দশক এসে প্রবেশ করলে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নিজের লুঙ্গি বেঁধে নিতেন, তার রাত্রি জাগরণ করতেন এবং নিজ পরিবারকে জাগাতেন।’[2] কারণ, শেষ দশকে রয়েছে বর্কতময় রাত্রি শবেকদর। যে রাত্রি হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। অতএব এ রাতগুলিতে নামায লম্বা হওয়াই বাঞ্ছনীয়। অর্থাৎ, ঐ ১১ রাকআত নামাযকে এশার পর থেকে শুরু করে ফজরের প্রায় ১ ঘ¦টা আগে পর্যন্ত লম্বা করে পড়াই উত্তম।
কিন্তু যদি মসজিদের জামাআত এত দীর্ঘ রাকআত পড়তে কষ্টবোধ করে, ক্বিরাআত, রুকূ ও সিজদাহ তথা রাকআত ছোট করতে ও সেই হিসাবে তার সংখ্যা বেশী করতে পছন্দ করে এবং বলে, এটাই আমাদের জন্য সহজ, তাহলে তাদের মতে তাই করা ইমামের জন্য দোষাবহ নয়। এ ব্যাপারে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর ব্যাপক নির্দেশ হল, ‘‘তোমরা সহজ কর এবং কঠিন করো না।’’[3] তিনি আরো বলেন, ‘‘তোমাদের কেউ লোকেদের ইমামতি করলে, সে যেন নামায হাল্কা করে পড়ে।---’’[4]
সুতরাং বিষয়টি যখন ধরাবাঁধা নিষিদ্ধ কোন বিষয় নয়, তখন আল্লাহ আমাদেরকে যাদের দায়িত্ব প্রদান করেছেন, তাদের জন্য সহজ করাটাই উত্তম ও শ্রেষ্ঠতর।[5]
[2] (বুখারী ২০২৪, মুসলিম ১১৭৪নং)
[3] (বুখারী ৬৯, মুসলিম ১৭৩৪নং)
[4] (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী ৭০৩নং, মুসলিম ৪৬৭নং, তিরমিযী)
[5] (দ্রঃ ৪/৭১-৭২, সালাতুল-লাইলি অত্-তারাবীহ, ইবনে বায ১৬পৃঃ)