উত্তর: মুসাফির সাওম রাখা ও ভঙ্গ করার ব্যাপারে ইচ্ছাধীন। আল্লাহ বলেন,
﴿فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡر﴾ [البقرة: ١٨٥]
“আর যে লোক অসুস্থ অথবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করে নিবে।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫] সাহাবায়ে কেরাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সফরে থাকলে কেউ সাওম রাখতেন কেউ সাওম ভঙ্গ করতেন। কোনো সাওম ভঙ্গকারী অপর সাওম পালনকারীকে দোষারোপ করতেন না, সাওম পালনকারীও সাওম ভঙ্গকারীকে দোষারোপ করতেন না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও সফর অবস্থায় সাওম রেখেছেন। আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “একদা রামাযান মাসে কঠিন গরমের সময় আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সফরে ছিলাম। তখন আমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবদুল্লাহ্ ইবন রাওয়াহা ছাড়া আর কেউ সাওম রাখে নি।”[1]
মুসাফিরের জন্য মূলনীতি হচ্ছে, সে সাওম রাখা ও ভঙ্গ করার ব্যাপারে ইচ্ছাধীন। কিন্তু কষ্ট না হলে সাওম রাখাই উত্তম। কেননা এতে তিনটি উপকারিতা রয়েছে:
প্রথমত: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ।
দ্বিতীয়ত: সাওম রাখতে সহজতা। কেননা সমস্ত মানুষ যখন সাওম রাখে তখন সবার সাথে সাওম রাখা অনেক সহজ।
তৃতীয়ত: দ্রুত নিজেকে যিম্মামুক্ত করা।
কিন্তু কষ্টকর হলে সাওম রাখবে না। এ অবস্থায় সাওম রাখা পূণ্যেরও কাজ নয়। কেননা এক সফরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখলেন জনৈক ব্যক্তির পাশে লোকজন ভীড় করছে এবং তাকে ছাঁয়া দিচ্ছে। তিনি বললেন, এর কি হয়েছে? তারা বলল, লোকটি সাওম পালনকারী। তখন তিনি বললেন, لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ “সফর অবস্থায় সিয়াম পালন করা কোনো পূণ্যের কাজ নয়।”[2] এ ভিত্তিতে আমরা বলব, বর্তমান যুগে সাধারণতঃ সফরে তেমন কোনো কষ্ট হয় না। তাই সিয়াম পালন করাই উত্তম।
[2] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: কঠিন গরমে যাকে ছাঁয়া দেওয়া হচ্ছিল তার সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “সফর অবস্থায় সিয়াম পালন করা কোন পূণ্যের কাজ নয়।” মুসলিম, অধ্যায়: সিয়াম, অনুচ্ছেদ: পাপের সফর না হলে রামাযান মাসে মুসাফিরের সিয়াম রাখা ও ভঙ্গ করা উভয়টিই বৈধ।