যথা সময়ে নামায পড়াই প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর জন্য ফরয। কিন্তু দলীলের ভিত্তিতেই নিম্নোক্ত সময় ও অবস্থায় এক সময়ের নামাযকে অন্য সময়ের নামাযের সাথে জমা করে পড়া বৈধ :-

আরাফাত ও মুযদালিফায় :

বিদায়ী হ্‌জ্জে মহানবী (ﷺ) আরাফাতে যোহ্‌র ও আসরের নামাযকে যোহরের সময় এবং মুযদালিফায় মাগরেব ও এশার নামাযকে এশার সময় জমা করে পড়েছিলেন।

সফরে মুসাফির অবস্থায় :

সফরে পথে অথবা কোন অবস্থান ক্ষেত্রে বা বাসায় জমা (ও কসর) করে নামায পড়া যায়। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে নবী (ﷺ)-এর নামায সম্পর্কে বর্ণনা দেব না?’ লোকেরা বলল, ‘অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘সফর করার সময় অবস্থান ক্ষেত্রে থাকতে থাকতেই যদি সূর্য ঢলে যেত, তাহলে সওয়ার হওয়ার আগেই যোহ্‌র ও আসরকে জমা করে পড়ে নিতেন। আর সূর্য না ঢললে তিনি বের হয়ে যেতেন। অতঃপর আসরের সময় হলে সওয়ারী থেকে নেমে যোহ্‌র ও আসরকে এক সঙ্গে জমা করে পড়ে নিতেন। অনুরুপ যদি অবস্থান ক্ষেত্রে থাকতে থাকতেই সূর্য ডুবে যেত, তাহলে মাগরেব ও এশার নামাযকে এক সঙ্গে জমা করে নিতেন। আর সূর্য না ডুবলে তিনি বের হয়ে যেতেন। অতঃপর এশার সময় হলে তিনি সওয়ারী থেকে নেমে মাগরেব ও এশার নামাযকে এক সঙ্গে জমা করে পড়ে নিতেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, শাফেয়ী, দ্র: বুখারী ১১১১-১১১২নং)

হযরত মুআয (রাঃ) বলেন, তবুক অভিযানে গিয়ে আল্লাহর রসূল (ﷺ) একদা দেরী করে নামায পড়লেন। তিনি বাইরে এসে যোহ্‌র ও আসরকে এক সাথে জমা করে পড়লেন। তারপর তিনি ভিতরে চলে গেলেন। অতঃপর বাইরে এসে তিনি মাগরেব ও এশাকে এক সাথে জমা করে পড়লেন। (মুসলিম, মালেক, মুঅত্তা)

দুই নামাযকে একত্রে জমা করে পড়ার সময় সুন্নত হল নামাযের পূর্বে একটি আযান হবে এবং প্রত্যেক নামায শুরু করার আগে ইকামত হবে। আর উভয় নামাযের মাঝে কোন সুন্নত পড়া যাবে না। মহানবী (ﷺ) আরাফাত ও মুযদালিফায় অনুরুপই করেছিলেন। (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ, সুনান)

দুই নামায জমা করার সময় উভয়ের মাঝে সামান্য ক্ষণ দেরী হয়ে যাওয়া দোষাবহ্‌ নয়। কারণ, মুযদালিফায় পৌঁছে মহানবী (ﷺ) মাগরেবের নামায পড়েন। অতঃপর প্রত্যেকে নিজ নিজ উট নিজ নিজ অবতরণ স্থলে বসিয়ে দিল। তারপর এশার নামায পড়লেন এবং মাঝে কোন নামায পড়েননি। (বুখারী ১৬৭২, মুসলিম, সহীহ)