(২৩) মার্ক ১২/৩৫-৩৭ (মথি ২২/৪২-৪৬ ও লূক ২০/৪১-৪৪)

মার্ক লেখেছেন: ‘‘আর বায়তুল মোকাদ্দসে উপদেশ দেবার সময়ে ঈসা জিজ্ঞাসা করে বললেন, আলেমেরা কেমন করে বলে যে, মসীহ দাউদের সন্তান? দাউদ নিজেই তো পাক-রূহের আবেশে এই কথা বলেছেন, ‘প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, তুমি আমার ডান দিকে বস, যতদিন তোমার দুশমনদেরকে তোমার পায়ের তলায় না রাখি।’ দাউদ নিজেই তো তাঁকে প্রভু বলেন, তবে তিনি কিভাবে তাঁর সন্তান হলেন? আর সাধারণ লোকে আনন্দপূর্বক তাঁর কথা শুনতো।’’ (মার্ক ১২/৩৫-৩৭, মো.-১৩। একই বক্তব্য দেখুন: মথি ২২/৪২-৪৬ ও লূক ২০/৪১-৪৪)

মার্গারেট এস. কিং একজন প্রসিদ্ধ নৃতত্ববিদ (anthropologist)। বাইবেল বিষয়ে তিনি একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। ২০১২ সালে প্রকাশিত তার একটা পুস্তক ‘Unveiling The Messiah in the Dead Sea Scrolls’ : ‘মৃত সাগরের পাণ্ডুলিপি থেকে মসীহের উন্মোচন’।[1] এ পুস্তকে তিনি মার্কের এ উদ্ধৃতিকে মুহাম্মাদ (ﷺ) বিষয়ক ভবিষ্যদ্বাণী বলে গণ্য করেছেন। এ প্রসঙ্গে উইকিপিডিয়া লেখেছে:

“These scrolls predict the coming of two messiahs. These two messiahs are referred to as a priestly messiah from the lineage of Aaron and a kingly messiah from the lineage of David. The priestly messiah of Aaron is identified as Jesus son of Mary in the light of Qur'an 19:28 which says that Mary "the mother of Jesus" came from the lineage of Aaron. The kingly messiah is identified as Muhammad in the light of the gospel of Barnabas, Mark 12:35-37, Luke 20:41-44 and Matthew 22:42-46 which all assert that the coming messiah ‘the kingly messiah’ is not going to be from the lineage of David. Margaret S. King argues, in Chapter 12 of her book ‘Unveiling The Messiah in the Dead Sea Scrolls’, that the Jews were informed by the son of Mary that the kingly messiah whom they were expecting would come from the lineage of Ishmael.”

‘‘এ পাণ্ডুলিপিগুলো দুজন মসীহের আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী করছে। এ দুজন মসীহের একজনকে বলা হয়েছে ‘যাজকীয় মসীহ’, যিনি হারুনের বংশধর হবেন এবং আরেকজন ‘রাজকীয় মসীহ’ যিনি দাউদের বংশধর হবেন। হারুন বংশের যাজকীয় মসীহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে মরিয়মের পুত্র যীশুকে। কুরআনের ১৯ সূরার (সূরা মরিয়ম) ২৮ আয়াতের আলোকে এ দাবি করা হয়। এখানে বলা হয়েছে যে, যীশুর মাতা মরিয়ম হারুনের বংশধারার ছিলেন। আর রাজকীয় মসীহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে। বার্নাবাসের ইঞ্জিল, মার্ক ১২/৩৫-৩৭, লূক ২০/৪১-৪৪ এবং মথি ২২/৪২-৪৬-এর আলোকে এ দাবি করা হয়। এ সকল বক্তব্য সবগুলোই নিশ্চিত করছে যে, রাজকীয় মসীহ দাউদের বংশ থেকে আগমন করবেন না। (প্রসিদ্ধ নৃতত্ববিদ) মার্গারেট এস. কিং তাঁর রচিত মৃত সাগরের পাণ্ডুলিপি থেকে মসীহের প্রকাশ’ গ্রন্থের ১২ পরিচ্ছেদে প্রমাণ করেছেন যে, মরিয়মের পুত্র (যীশু) ইহুদিদেরকে জানিয়েছেন যে, যে রাজকীয় মসীহের জন্য তারা অপেক্ষা করছে তিনি ইসমাইলের বংশধারা থেকে আগমন করবেন।’’[2]

[1] ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত মৃত সাগর বা লবন সাগর: (Dead Sea/ Salt Sea)। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এর পার্শবর্তী কয়েকটা গুহার ভিতরে পবিত্র বাইবেলের প্রাচীনতম কিছু পাণ্ডুলিপি ও প্রথম খ্রিষ্টীয় শতকের লেখা কতিপয় পুস্তকের পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়। এ পাণ্ডুলিপিগুলো মৃত সাগরের পাণ্ডুলিপি (Dead Sea Scrolls) বা কুমরান গুহার পাণ্ডুলিপি (Qumran Caves Scrolls) নামে পরিচিত। দেখুন: https://en.wikipedia.org/wiki/Dead_Sea_Scrolls.
[2] https://en.wikipedia.org/wiki/Muhammad_in_the_Bible