ঈশ্বরের প্রিয় প্রজারা তাঁদের ভাইদের মধ্য থেকে সৈন্যদেরকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হননি। তাঁরা অযোদ্ধা ভ্রাতা, ভগিনী, ভাবী, ভাতিজা-ভাতিজিদেরকে এবং তাদের গৃহপালিত পশুগুলোকেও হত্যা করলেন। উপরন্তু তাঁরা তাঁদের ভাইদের গ্রাম ও শহরগুলোকে আগুনে জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দিলেন। ‘‘এর মধ্যে বনি-ইসরাইলরা ফিরে বিনইয়ামীনীয়দের বাকী লোকদের সবাইকে হত্যা করল এবং শহর ও গ্রামের মধ্যে পশু আর অন্যান্য যাদেরকে পেল সবাইকে শেষ করে দিল। তারা যে সব শহর ও গ্রামে গেল তার সবগুলোই আগুন লাগিয়ে দিল।’’ (কাজীগণ ২০/৪৮)
বনি-ইসরাইলরা কতজন অযোদ্ধা ভাই-ভাবী ও ভাতিজা-ভাতিজী হত্যা করলেন তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে আমরা দেখেছি যে, ইউসুফের (আ) সময়ে তাঁর পিতা ও পুরো পরিবারের ৭০ জন মানুষ মিসরে প্রবেশ করেন। মাত্র ২০০ বছরে ৪ প্রজন্মে তাঁদের সংখ্যা হয় ত্রিশ লক্ষ। মূসা (আ.)-এর সাথে প্রায় ত্রিশ লক্ষ বনি-ইসরাইল মিসর পরিত্যাগ করেন। অর্থাৎ প্রতি গোষ্ঠীতে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। মূসা (আ.)-এর প্রায় শতবর্ষ পরে একেক গোষ্ঠীতে ৪/৫ লক্ষ মানুষ থাকার কথা। এতে প্রতীয়মান হয় যে, যুদ্ধে সক্ষম মানুষ বিনইয়ামীনদের মধ্যে আরো অনেক ছিল এবং এ সকল পুরুষসহ বনি-ইসরাইলরা ৪/৫ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছিলেন।
ন্যূনতম হিসাবে নিহত অযোদ্ধাদের সংখ্যা দেড় লক্ষর কম হবে না। কারণ আমরা দেখেছি যে, বনি-ইসরাইলদের একেক জনের কয়েক ডজন স্ত্রী এবং অর্ধশত সন্তান থাকত। যদি ছাবিবশ হাজার তলোয়ারধারী সৈন্যের প্রত্যেকের জন্য একজন স্ত্রী, দুজন বৃদ্ধ পিতামাতা ও দুজন শিশু-কিশোর অযোদ্ধা সন্তান ধরা হয় তবে প্রত্যেক যোদ্ধার বিপরীতে কমপক্ষে ৫ জন অযোদ্ধা মানুষ হয়। তাহলে ঈশ্বরের প্রিয় প্রজারা কমপক্ষে প্রায় দেড় লক্ষ নিরীহ নিরস্ত্র বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, মহিলা ও শিশু হত্যা করে। কৃষি ও পশুপালন নির্ভর এ সকল মানুষের প্রতিটা পরিবারের জন্য কমপক্ষে ৪টা গৃহপালিত পশু ধরা হলেও তারা লক্ষাধিক অবলা প্রাণিকে হত্যা করে বলে আমরা নিশ্চিত হই। এ সবই ঘটে ঈশ্বরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায়।