৯. ৬. ৩. ২. উভয় পক্ষের ৬৫ হাজার যোদ্ধা হত্যার ব্যবস্থা করলেন ঈশ্বর

এ ঘটনায় বনি-ইসরাইলরা বিনইয়ামীনদের কাছে অপরাধীদের সমর্পণ ও শাস্তির দাবি করেন। কিন্তু বিনইয়ামীন গোষ্ঠী তাতে রাজি না হয়ে যুদ্ধের প্রস্ত্ততি নেয়। বিনইয়ামীন গোষ্ঠীর ২৬ হাজার সৈন্য ও অন্যান্য গোষ্ঠীর চার লক্ষ সৈন্য জমায়েত হয় (কাজীগণ ২০/১-১৭) বনি-ইসরাইল ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে যুদ্ধ শুরু করে।

‘‘তারা বেথেল গিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে জানতে চাইল বিনইয়ামীনীয়দের সংগে যুদ্ধ করবার জন্য তাদের মধ্যে কে আগে যাবে? জবাবে মাবুদ জানালেন যে,&এহুদা গোষ্ঠী আগে যাবে। পরের দিন সকালে উঠে বনি-ইসরাইলরা গিবিয়ার কাছে ছাউনি ফেলল। তারপর তারা বিনইয়ামীনীয়দের সংগে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়ে সেখানে তাদের বিরুদ্ধে সৈন্য সাজাল। বিনইয়ামীনীয়রা গিবিয়া থেকে বের হয়ে আসল এবং সেই দিন বাইশ হাজার ইসরাইলীয়কে হত্যা করল। তখন বনি-ইসরাইলরা গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জানিয়ে বলল, আমরা কি আমাদের ভাই বিনইয়ামীনীয়দের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ করতে যাব? জবাবে মাবুদ বললেন, ‘‘যাও। এতে ইসরাইলীয় সৈন্যরা সাহসে বুক বেuঁধ প্রথম দিন যে জায়গায় যুদ্ধ করেছিল আবার সেখানে যুদ্ধ করবার জন্য প্রস্তুত হল। দ্বিতীয় দিনে তারা বিনইয়ামীন গোষ্ঠীর লোকদের বিরুদ্ধে এগিয়ে গেল। এইবার বিনইয়ামীনীয়রা তাদের বাঁধা দেবার জন্য গিবিয়া থেকে বের হয়ে এসে আরও আঠারো হাজার ইসরাইলীয়কে হত্যা করল। তারা সবাই ছিল তলোয়ারধারী সৈন্য।

তখন বনি-ইসরাইলদের সমস্ত লোক বেথেল গিয়ে মাবুদের সামনে বসে কাঁদতে লাগল। তারা সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখল এবং মাবুদের উদ্দেশ্যে পোড়ানো ও যোগাযোগ-কোরবানী দিল। সেই সময় আল্লাহর শরীয়ত-সিন্দুক বেথেলেই ছিল, আর হারুনের নাতি, অর্থাৎ ইলিয়াসের ছেলে পীনহস তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে ইমামের কাজ করতেন। সেজন্য বনি-ইসরাইলরা সেখানে মাবুদের ইচ্ছা জানবার জন্য জিজ্ঞাসা করল, ‘আমরা আমাদের ভাই বিনইয়ামীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ করতে যাব কি যাব না?’ মাবুদ জবাব দিলেন ‘যাও, কারণ কালকে আমি তোমাদের হাতে তাদের তুলে দিতে যাচ্ছি।’ ......

বনি-ইসরাইলদের বাধা দেবার জন্য বিনইয়ামীনীয়রা বেরিয়ে এসে শহর থেকে দূরে গেল। তারা আগের মতই বনি-ইসরাইলদের হত্যা করতে লাগল। ... প্রায় ত্রিশজন লোক মারা পড়ল। ... মাবুদ সেই দিন বনি-ইসরাইলদের কাছে বিনইয়ামীন গোষ্ঠীকে হার মানালেন এবং তারা পঁচিশ হাজার একশো বিনইয়ামীনীয় লোককে হত্যা করল। তারা সবাই ছিল তলোয়ারধারী সৈন্য। .... অন্যান্য বনি-ইসরাইলরা শহর ও গ্রাম থেকে বের হয়ে এসে সেখানেই তাদের হত্যা করল। তারা বিনইয়ামীনীয়দের তাড়া করে ঘিরে ফেলল এবং গিবিয়ার পূর্ব দিকে তাদের বিশ্রামের জায়গায় তাদের শেষ করে দিল। এতে আঠার হাজার বিনিইয়ামীনীয় মারা পড়ল; তারা সবাই ছিল শক্তিশালী যোদ্ধা।

যখন বাকী বিনইয়ামীনীয়রা ঘুরে মরুভূমির রিম্মোণ পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যাচ্ছিল তখন বনি-ইসরাইলরা পথের মধ্যেই তাদের পাঁচ হাজার লোককে হত্যা করল। তার পরেও তারা গিদোম পর্যন্ত বিনইয়ামীনীয়দের তাড়া করে নিয়ে গেল এবং আরও দুই হাজার লোককে হত্যা করল। সেই দিন মোট পঁচিশ হাজার বিনইয়ামীনীয় সৈন্য মারা পড়ল। তারা সবাই ছিল ভাল যোদ্ধা। কিন্তু বিনইয়ামীনীয়দের ছ’শ লোক ঘুরে মরুভূমির রিম্মোণ পাহাড়ে পালিয়ে গিয়ে চার মাস সেখানে রইল।’’ (কাজীগণ ২০/১৮-৪৭)