এক শনিবার ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় যীশুর শিষ্যরা ক্ষুধার তাড়নায় ফসলের কিছু দানা ভক্ষণ করেন। এতে তৌরাতের বিধান লঙ্ঘন হওয়ায় ইহুদি আলিমরা আপত্তি করেন। তখন যীশু বলেন যে, দাউদও তো এভাবে ক্ষুধার তাড়নায় তৌরাত নিষিদ্ধ খাদ্য ভক্ষণ করেছিলেন: ‘‘তিনি তাদেরকে বললেন, দাউদ ও তাঁর সঙ্গীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন কি করেছিলেন তা কি তোমরা পাঠ করনি? তিনি তো আল্লাহ গৃহে প্রবেশ করলেন এবং তাঁরা দর্শন-রুটি ভোজন করলেন, যা তাঁর ও তাঁর সঙ্গীদের ভোজন করা উচিত ছিল না, কেবল ইমামেরা তা ভোজন করতে পারত।’’ (মথি ১২/৩-৪, মো.-১৩। আরো দেখুন লূক ৬/৩-৪)
মার্ক ২/২৫-২৬ শ্লোক নিম্নরূপ: ‘‘তিনি তাদেরকে বললেন, দাউদ ও তাঁর সঙ্গীরা খাদ্যের অভাবে ক্ষুধিত হলে তিনি যা করেছিলেন, তা কি তোমরা কখনও পাঠ করনি? তিনি তো অবিয়াথর মহা-ইমামের (Abiathar the high priest) সময়ে আল্লাহর গৃহে প্রবেশ করে, যে দর্শন-রুটি ইমামেরা ছাড়া আর কারো ভোজন করা উচিত নয়, তা-ই ভোজন করেছিলেন এবং সঙ্গীদেরকেও দিয়েছিলেন।’’ ( মো.-১৩)
এখানে যীশু পুরাতন নিয়মের একটা ঘটনা উদ্ধৃত করেছেন, কিন্তু তিনি অনেকগুলো ভুল করেছেন: এখানে (১) ‘ও তাঁর সঙ্গীদের’, (২) ‘তাঁরা ... ভোজন করলেন’, (৩) ‘ও তাঁর সঙ্গীদের...’ এবং (৪) ‘সঙ্গীদেরকেও দিয়েছিলেন’ কথাগুলো সবই ভুল। কারণ ‘দর্শন-রুটি’ ভোজন করার সময় দাউদ ‘একা’ ছিলেন, তাঁর সাথে অন্য কেউ ছিল না। পঞ্চম ভুল মহাযাজকের নামে। যীশু বলেছেন: ‘‘অবিয়াথর মহাযাজকের সময়ে...’’। অথচ এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট মহাযাজকের নাম ছিল ‘অহীমেলক’ (Ahimelech)। ‘অবিয়াথর’ এ সময়ে ইমাম বা যাজক ছিলেন না। অবিয়াথর ছিলেন অহীমেলকের পুত্র। এ ঘটনার পরে অহীমেলকের মৃত্যুর পরে তিনি মহা-যাজক হন। ১ শমূয়েল-এর ২১ অধ্যায়ের ১-৯ শ্লোক ও ২২ অধ্যায়ের ৯-২৩ শ্লোকে মূল ঘটনা পাঠ করলেই পাঠক এ পাঁচটা ভুল সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।
ইঞ্জিল লেখকরা এ বক্তব্য যীশুর নামে লেখেছেন। যীশুর প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো মানুষের জন্য বিশ্বাস করা কঠিন যে, যীশু পবিত্র পুস্তকের উদ্ধৃতিতে এমন ভুল করতেন। যীশুকে দোষারোপ করার চেয়ে প্রচলিত ইঞ্জিলগুলোর অজ্ঞাতপরিচয় লেখক, লিপিকার ও সম্পাদকদের দোষারোপ করা অনেক সহজ।