জিজ্ঞাসাবাদ ও বিচারের সময় নিয়ে যেমন বৈপরীত্য, তেমনি বৈপরীত্য রয়েছে জেরাকারীদের পরিচয়ে। যোহন লেখেছেন যে, গ্রেফতার করার পর সৈন্যরা ‘‘তাঁকে বেঁধে প্রথমে হাননের কাছে নিয়ে গেল। কারণ যে কাইয়াফা সেই বছর মহা ইমাম ছিলেন, এই হানন তাঁর সম্পর্কে শ্বশুর ছিলেন।’’ যীশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ‘‘হানন বাঁধা অবস্থায় তাঁকে মহা-ইমাম কাইয়াফার কাছে প্রেরণ করলেন।’’ এরপর কাইয়াফার কাছে যীশুকে আর কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে যোহন লেখেননি। বরং তিনি লেখেছেন, ‘‘পরে লোকেরা ঈসাকে কাইয়াফার কাছ থেকে খুব ভোরে রাজপ্রসাদে (রোমীয় শাসক পীলাতের বাড়িতে) নিয়ে গেল। (ইউহোন্না ১৮/১২-২৮)
যোহনের বক্তব্য থেকে আমরা নিশ্চিত হই যে, যীশুকে শুধু হাননই জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর কৈয়াফার বাড়িতে বন্দি অবস্থায় তিনি রাত কাটান। সকালে লোকেরা তাঁকে পীলাতের কাছে প্রেরণ করেন। কিন্তু লূকের বর্ণনা অনুসারে কাইয়াফা বা তার শ্বশুর হানন যীশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। বরং সকাল বেলায় ইহুদিদের ‘মহাসভা’ (council) বা মাহফিলের সদস্যরা তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
লূক লেখেছেন: ‘‘তারা তাঁকে ধরে নিয়ে গেল এবং মহা-ইমামের বাড়িতে আনলো।’’ এরপর পিতরের অস্বীকারের বর্ণনা দেওয়ার পর লেখেছেন: ‘‘যখন দিন হল, তখন লোকদের প্রাচীনদের সমাজ, প্রধান ইমামেরা আলেমরা একত্র হল এবং তাদের মাহ্ফিলের (ইংরেজি: council, কেরি: মহাসভা) মধ্যে তাঁকে আনালো, আর বললো... ’’। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের বর্ণনার পর বলেন: ‘‘পরে তারা দলসুদ্ধ সকলে উঠে তাঁকে পীলাতের কাছে নিয়ে গেল।’’ (লূক ২২/৫৪-৭১, ২৩/১, মো.-১৩)।
পক্ষান্তরে মথি ও মার্কের বর্ণনায় গ্রেফতারের পরে যীশুকে মহাপুরোহিতের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ‘মহাসভার’ সদস্যরা উপস্থিত হন এবং যীশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর ভোরে তারা পরামর্শ করে তাঁকে পীলাতের নিকট প্রেরণ করেন। (মথি ২৬/৫৭-৭৫, ২৭/১; মার্ক ১৪/৫৩-৭২, ১৫/১)