বস্তুত মুসলিম সমাজের সকল শিরক, কুফর ও বিভ্রান্তির মূল ইহূদী আন্দোলন, যেমন খৃস্টান ধর্মের বিকৃতির মূল কারণ ইহূদী আন্দোলন। ইহূদী পৌল যেমন কাশফ, কারামত ইত্যাদির দাবি করে খৃস্টান সেজে ক্রমান্বয়ে খৃস্টান ধর্মকে বিকৃত করে, তেমনি আব্দুল্লাহ ইবনু সাবা মুসলিম সেজে ক্রমান্বয়ে মুসলিম বিশ্বাস বিকৃত করে। পৌল যিরুশালেমের হাওয়ারী ও ইসরায়েলীয় খৃস্টানদের মধ্যে সুবিধা করতে না পেরে ‘পরজাতিদের’ নিকট গমন করে। ইবনু সাবা মদীনা-মক্কায় সুবিধা করতে না পেরে কুফা, বসরা, মিসর ইত্যাদি দূরবর্তী অঞ্চলে নতুন প্রজন্মের নও মুসলিমদের নিকট গমন করে। উভয়েরই দাবি দাওয়ার ভিত্তি ‘অতিভক্তি’র মাধ্যমে মুক্তি। তবে পৌল খৃস্টধর্মের মূল উৎসগুলি বিকৃত করতে সক্ষম হয়, ফলে মূল খৃস্টধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যায়। পক্ষান্তরে ইবনু সাবা এরূপ কিছু করতে সক্ষম হয় না। সে অগণিত মিথ্য কথা প্রচার ও প্রসার করে যায় এবং কুরআন ও সুন্নাহ যেন কেউ গ্রহণ না করে তার ব্যবস্থা করে যায়। তবে সে মূল কুরআন ও সুন্নাহকে বিকৃত করতে পারে নি।
মুসলিম উম্মাহর সকল শিরক-এর উৎস আব্দুল্লাহ ইবনু সাবা এবং তার প্রচারিত শীয়া মতবাদ। দ্বাদশ ইমাম পন্থী শীয়া এবং বিশেষ করে বাতিনী শীয়া. কারামিতা, নুসাইরিয়্যাহ, দুরুয ইত্যাদি সম্প্রদায় অগণিত শিরক-কুফর মুসলিম সমাজে ছাড়িয়েছে। বিশেষত ইসলামের প্রথম তিন শতাব্দী গত হওয়ার পরে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ সকল বিভ্রান্ত দল রাষ্টীয় ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়। বাগদাদে মূল কেন্দ্রে বনূ বুওয়াইহিয়া শীয়াগণ ক্ষমতা দখল করে। কারামাতিয়্যা, বাতিনীয়া, হাশাশিয়া, ফাতিমীয়া বিভিন্ন শীয়া সম্প্রদায় মিসর, তিউনিসিয়া, মরক্কো, ইয়ামান, কূফা, বসরা, নজদ, খুরাসান, ভারত, বাংলা ইত্যাদি অঞ্চলে রাষ্ট ক্ষমতা দখল করে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। এরা সাধারণ সরলপ্রাণ ‘সুন্নী’ মুসলিম, সূফী, দরবেশ ও ইলম-হীন নেককার মানুষদের মধ্যেও এদের শিরক প্রসার করতে সক্ষম হয়। মুসলিম উম্মাহর সকল শিরকের উৎস মূলত এখানেই।