কুরআনে বর্ণিত ২৫জন নবীর মধ্যে কারো-কারো বিষয়ে আল্লাহ বিস্তারিত কিছু বর্ণনা দান করেছেন। যেমন, নূহ, ইব্রাহিম, মূসা, ইউসূফ, ঈসা, হুদ, সালেহ, ও লুত। আর কারো কারো সম্পর্কে শুধুমাত্র নবূয়তের উল্লেখ করেছেন, যেমন যুলকিফল, ইলইয়াস. ইলইয়াসা’ (আলাইহিমুস সালাম)।
সকল নবীর ক্ষেত্রে কুরআনের বর্ণনা ও বিবরণ থেকে আমরা লক্ষ্য করি যে, কখনোই তাদের ব্যপারে ঐতিহাসিক বা ভৌগলিক তথ্য প্রদানের বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাদের বংশ বিবরণ, দেশ, যুগ, বয়স, ভাষা ইত্যাদি সম্পর্কে সাধারণভাবে কোনো কিছুই বলা হয়নি।
কুরআন কারীমে নূহ (আঃ)-এর বিষয়ে বলা হয়েছে যে, তিনি ৯৫০ বৎসর জীবিত ছিলেন। এছাড়া অন্য কোনো নবীর আয়ুষ্কাল কুরআন কারীমে উল্লেখ করা হয় নি। আদম (আঃ) এর আয়ুষ্কাল ১ হাজার বৎসর বলে একটি হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ক আর কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
মূলত কুরআন কারীমে নবী-রাসূলগণের বর্ণনার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র আলোচনা করা হয়েছে তাঁদের প্রতি আল্লাহর করুণা, সাহায্য, তাঁদের দাওয়াত বা তাঁদের জাতির প্রতি তাঁদের শিক্ষা ও আহবান কি ছিল, তাঁদের আহবানে তাদের জাতির প্রতিক্রিয়া কিরূপ ছিল, তাঁদের ডাকে যারা সাড়া দিয়েছেন এবং যারা অবিশ্বাস করেছেন তাঁদের প্রতি তাদের কি বক্তব্য ছিল, বিশ্বাসী অবিশ্বাসীদের মধ্যের বিরোধ ও দ্বন্ধ, তাদের কর্মের ফলাফল কি হয়েছিল ইত্যাদি সম্পর্কে । এ সকল বিষয়ের প্রয়োজনে কখনো কখনো কোনো কোনো নবীর পিতা বা মাতার নাম বা জন্মবৃত্তান্ত বা জীবনের কিছু ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, অন্যথায় এসকল বিষয় সম্পূর্নরূপে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন: ঈসা (আঃ)-এর জন্মবৃত্তান্ত ও তাঁর মাতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মুসা (আঃ)-এর জন্মবৃত্তান্ত ও দেশের উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ নবী, যেমন নূহ, লুত, হুদ, সালেহ, আইয়ূব, যূল-কিফ্ল ইলইয়াস প্রমুখ নবীর (আঃ) ক্ষেত্রে তাঁদের পিতা, মাতা, যুগ বা দেশের কোনো উল্লেখ করা হয়নি।