সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময়ের ব্যাপারে আলেমগণের মাঝে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশ আলেমের মতে ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় এক মুহূর্তের জন্যও হতে পারে। এটি ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের মাযহাব। দেখুন: আদ্দুরুল মুখতার (১/৪৪৫), আলমাজমু (৬/৪৮৯), আলইনস্বাফ (৭/৫৬৬)।
ইমাম নববী আল মাজমূ (৬/৫১৪) গ্রন্থে বলেছেন:
“আর ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় সম্পর্কে অধিকাংশ আলেম দৃঢ়তার সাথে যে মত ব্যক্ত করেছেন সেটাই সঠিক মত। তা হচ্ছে- ইতিকাফের জন্য মসজিদে অবস্থান করা শর্ত। সেটা বেশি সময়ের জন্য হতে পারে, কম সময়ের জন্যেও হতে পারে। এমনকি সামান্য সময় বা এক মুহূর্তের জন্যেও হতে পারে।” সমাপ্ত ও সংক্ষেপিত।
এ মতের পক্ষে তাঁরা কয়েকটি দলীল পেশ করেছেন :
১. ইতিকাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- অবস্থান করা। এটি দীর্ঘ সময়ের জন্যেও হতে পারে, অল্প সময়ের জন্যেও হতে পারে। শরিয়তের এমন কোন দলীল পাওয়া যায় না যা নির্দিষ্ট কোন সময়সীমার মধ্যে ইতিকাফকে সীমাবদ্ধ করে দিবে।
ইবনে হাযম বলেছেন:
“আরবী ভাষায় ইতিকাফ শব্দের অর্থ-অবস্থান করা। তাই আল্লাহর মসজিদে তাঁর নৈকট্য লাভের আশায় যে কোন অবস্থানই হল ইতিকাফ। সেটা কম সময়ের জন্যে হোক অথবা বেশি সময়ের জন্যে হোক। যেহেতু কুরআন ও সুন্নাহ নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বা সময় নির্ধারণ করেনি” সমাপ্ত। [আল-মুহাল্লা (৫/১৭৯)]
২. ইবনে আবু শাইবাহ ইয়ালা ইবনে উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন: “আমি মসজিদে অল্প কিছু সময় অবস্থান করলেও সেটা আমি ইতিকাফের নিয়্যতে অবস্থান করি।” ইবনে হাযম ‘আল-মুহাল্লা’ গ্রন্থে (৫/১৭৯) এই রেওয়ায়েত দিয়ে দলীল পেশ করেছেন এবং হাফেজ ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে তা উদ্ধৃত করেছেন; কিন্তু কোন মন্তব্য করেননি। রেওয়ায়েতটিতে الساعة (ঘন্টা) দ্বারা বর্তমান পরিভাষায় যা বুঝি ৬০ মিনিট সেটা উদ্দেশ্য নয়। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- কিছু সময়।
কিছু কিছু আলেমের মতে ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় একদিন। ইমাম আবু হানিফা থেকে ও মালেকি মাযহাবের কোন কোন আলেম থেকে এ ধরনের একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।
শাইখ ইবনে বায ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’ গ্রন্থে (১৫/৪৪১) বলেছেন: “ইতিকাফ হলো আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করা, সময় কম হোক অথবা বেশি হোক। কারণ আমার জানা মতে এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না যা একদিন, দুইদিন বা এর চেয়ে বেশী দিনের জন্য ইতিকাফ করাকে নির্দিষ্ট করবে। ইতিকাফ শরিয়তসম্মত ইবাদত। তবে কেউ যদি মান্নত করে তখন মান্নতের কারণে তার উপর ইতিকাফ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। ইতিকাফের বিধান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।”