শির্ক কী ও কেন? প্রথম পরিচ্ছেদ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী ১ টি

‘রাজা-উন’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে : মনের কামনা পূর্ণ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা। মানুষের মনের কামনা মূলত দু’প্রকারের হয়ে থাকে :

এক. এমন সব চাহিদা যা পূর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যে কর্ম করতে হয়, তা ব্যক্তির নিজের বা অপর যে কোনো মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে। এ জাতীয় চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অন্য জীবিত উপস্থিত মানুষের নিকট সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। তবে কোনো মৃত বা অনুপস্থিত কোনো মানুষের কাছে এ জন্য সাহায্যের আহ্বান করলে তা শির্কে আকবার এর অন্তর্গত হবে।দুই. এমন সব কামনা যা পূর্ণ করে দেয়া আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অপর কারো সামর্থ্যের মধ্যে নেই। যেমন: সন্তান দান করা, ব্যবসায় উন্নতি প্রদান করা, রোগ-ব্যাধি নিরাময় করা, সমুদ্র বা নদীতে ঝড় ও তুফানের হাত থেকে রক্ষা করা, জঙ্গলের হিংস্র জীব-জন্তুর হাত থেকে রক্ষা করা... ইত্যাদি। মানুষের এ জাতীয় চাহিদা পূরণ করা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অপর কারো সামর্থ্যের মধ্যে নেই। তাই এ জাতীয় কল্যাণার্জন ও অকল্যাণ দূরীকরণের জন্য কোনো অলি বা দরবেশের নিকট সাহায্য কামনা করা শির্কে আকবারের পর্যায়ভুক্ত; কেননা, এতে করে তাঁদেরকে আল্লাহর রুবূবিয়্যাতের বৈশিষ্ট্যের অধিকারীর মর্যাদায় উন্নীত করা হয় এবং তাঁদের কাছে কামনা-বাসনা করা হয়[1]।

>
[1] মনে রাখা জরূরী যে, কামনা-বাসনার মাধ্যমে শির্ক হওয়ার জন্য এটা জরূরী নয় যে, কেউ মনে করবে যে যাদের কাছে সে কামনা-বাসনা করছে, তাদের নিকট রুবুবিয়্যাতের কোনো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কারণ, যদি এরকম কোনো বিশ্বাস থাকে, তবে তা হবে, দু’দিক থেকে শির্ক। প্রথমত, রুবুবিয়্যাতে শির্ক, তারপর তার কাছে কামনা-বাসনার কারণে সে আল্লাহর উলুহিয়্যাতেও শির্ক করল। সুতরাং কেউ যদি কারও ব্যাপারে রুবুবিয়্যাতের কোনো বৈশিষ্ট্য নেই মনে করেও তার কাছে এমন কোনো কিছু পাওয়ার কামনা-বাসনা করে, যা একমাত্র আল্লাহর কাছেই থাকতে পারে, তাতেও সে আল্লাহর উলুহিয়্যাত তথা ইবাদাতে শির্ক করেছে বলে গণ্য হবে। [সম্পাদক]