হাজ্জ সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা বলেছেন
وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا
‘এ ঘরে হাজ্জ করা মানুষের কাছে আল্লাহ্র প্রাপ্য (দাবী)। অবশ্য যার সামর্থ্য রয়েছে এ অবধি পৌছার।[১]
অন্য জায়গায় বলেছেন এভাবে,
وَأَذِّن فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَىٰ كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِن كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ
আর মানুষের মধ্যে হাজ্জের জন্য ঘোষণা করে দিন। তারা আপনার কাছে আসবে দূর দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে এবং জীর্ণশীর্ণ[২] উটের পিঠে চড়ে।[৩]
সূরা আল বাকারায় বলা হয়েছে,
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ
‘তোমরা হাজ্জ এবং উমরা পালন কর।”[৪]
সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবদুল্লাহ্ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
بني الإسلام على خمس شهادة أن لا اله الا الله وأن محمدا عبده ورسوله واقام الصلاة وإيتاء الزكاة وصوم رمضان وحج البيت
পাঁচটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত। ১. আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল’- একথার সাক্ষ্য দেয়া, ২. সালাত কায়েম করা, ৩. যাকাত দেয়া, ৪. রমযানের রোযা রাখা এবং ৫. বাইতুল্লাহয় হাজ্জ করা।[৫]
সহীহ মুসলিমে উমার (রাঃ) বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসে (যা হাদীসে জিবরীল নামে খ্যাত) বলা হয়েছে- আগন্তুক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন,
يا محمد ما الاسلام ؟ قال أن تشهد أن لا اله الا الله وأن محمداً رسول الله وأن تقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتحج البيت
‘হে মুহাম্মাদ! ইসলাম কী? তিনি বললেন- ইসলাম হচ্ছে তুমি এ কথার সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র রাসূল। নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে, রমযানের রোযা রাখবে আর বাইতুল্লাহয় হাজ্জ করবে।”[৬]
আবী উমামা আল বাহিলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
مَنْ لَمْ يَحْبِسْهُ مَرَضٌ أَوْ حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ أَوْ سُلْطَانٌ جَائِرٌ وَلَمْ يَحُجَّ فَلْيَمُتْ إِنْ شَاءَ يَهُودِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا
(হাজ্জ ফরয হয়েছে এমন ব্যক্তি) অসুখ বিসুখ যার বাধা হয়ে দাঁড়ালো না, গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রয়োজনও তার নেই। এমনকি অত্যাচারী কোনো শাসকের ভয়ও তাঁর নেই, এমতাবস্থায় সে হাজ্জ না করেই মারা গেল। চাই সে ইহুদী হয়ে মরুক কিংবা খৃস্টান হয়ে (তাতে আমার কিছু যায় আসে না)।[৭]
[২]. আরবী দা-মিরিন' (ضامر) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ- জীর্ণশীর্ণ কৃষকায় উট। একথা দিয়ে হাজ্জ করতে আসা ক্লান্তশ্রান্ত মুসাফিরের চিত্র অংকন করা হয়েছে। অর্থাৎ ঠিকমত আহার ও বিশ্রামের অভাবে মুসাফিরের সাথে সাথে তাদের উটগুলোও দুর্বল-কৃষ হয়ে যায়। -অনুবাদক।
[৩]. সূরা আল হাজ্জ, আয়াত : ২৭।
[৪]. সূরা আল বাকারা, আয়াত : ১৯৬।
[৫]. সহীহ্ আল বুখারী; সহীহ মুসলিম, (হাদীস-২১)।
[৬]. সহীহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, (হাদীস-১)।
[৭]. ইবনু আল জাওযী তার মাওযুআতের এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এ হাদীসটির সনদ সম্পর্কে অনেকের আপত্তি রয়েছে।