আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«بِتُّ عِنْدَ خَالَتِيْ مَيْمُونَةَ بِنْتِ الـْحَارِثِ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَهَا فِي لَيْلَتِهَا فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيْ مِنْ اللَّيْلِ فَقُمْتُ أُصَلِّي مَعَهُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِرَأْسِيْ فَأَقَامَنِيْ عَنْ يَمِينِهِ».
“আমি একদা আমার খালা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী হযরত মাইমূনা বিনতে আল-হারিস-এর নিকট রাত্রি যাপন করেছি। সে রাত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরেই ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রি বেলায় সালাত আদায় করতে উঠলে আমিও তাঁর সাথে সালাত আদায়ের জন্য উঠলাম। অতঃপর আমি তাঁর বাঁয়েই দাঁড়ালাম। কিন্তু তিনি আমাকে আমার মাথা ধরে তাঁর ডানেই দাঁড় করিয়ে দিলেন”।[1]
মালিক ইবন হুওয়াইরিস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَتَى رَجُلَانِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُرِيدَانِ السَّفَرَ، فَقَالَ النَّبِـيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا أَنْتُمَا خَرَجْتُمَا، فَأَذِّنَا، ثُمَّ أَقِيمَا، ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا».
“একদা দু’ ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট সফরের মানসিকতা নিয়েই দেখা করতে আসলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন: যখন তোমরা সফরের উদ্দেশ্যে বের হবে তখন তোমরা (জামা‘আতে সালাত আদায়ের জন্য) আযান-ইক্বামত দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যিনি বয়স্ক তিনিই তোমাদের ইমামতি করবেন”।[2]
>[2] বুখারী, হাদীস নং ৬৩০ মুসলিম, হাদীস নং ৬৭৪
আবু সাঈদ ও আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত তারা বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا اسْتَيْقَظَ الرَّجُلُ مِنْ اللَّيْلِ وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّيَا رَكْعَتَيْنِ كُتِبَا مِنْ الذَّاكِرِينَ اللهُ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ».
“যখন কোনো পুরুষ রাত্রি বেলায় জাগে এবং নিজ স্ত্রীকেও জাগায় অতঃপর উভয়ে দু’ রাকাত সালাত পড়ে তখন তাদের উভয়কে আল্লাহর অত্যধিক যিকিরকারী পুরুষ ও অত্যধিক যিকিরকারিণী মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়”।[1]
মূলতঃ দু’ জন পুরুষে যেমন জামা‘আত হয় তেমনিভাবে একজন পুরুষ ও একজন মহিলা নিয়েও জামা‘আত হবে। এটিই হচ্ছে একটি মৌলিক বিধান। আর এর বিপরীত কোনো প্রমাণ নেই। যে ব্যক্তি তা নিষেধ করবে তাকে অবশ্যই এর বিপরীত প্রমাণ দিতে হবে। তবে মহিলাটি উক্ত পুরুষের কোনো মাহরম মহিলা না হলে একান্তে তাদের উভয়ের জামা‘আত শুদ্ধ হবে না।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا مَعَ ذِي مَحْرَمٍ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ! امْرَأَتِيْ خَرَجَتْ حَاجَّةً، وَاكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا، قَالَ: ارْجِعْ فَحُجَّ مَعَ امْرَاَتِكَ».
“কোনো পুরুষ কোনো বেগানা মহিলার সাথে কখনো একান্তে অবস্থান করবে না। তবে কোনো মাহরাম মহিলাকে নিয়ে একান্তে অবস্থান করা যায়। জনৈক ব্যক্তি তখন দাঁড়িয়ে বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্ত্রী তো একাকী হজ করতে বেরিয়েছে অথচ আমার নামটুকু অমুক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য লেখা হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন: তুমি চলে যাও। তোমার স্ত্রীর সাথে হজ করো”।
একজন নাবালক ছেলে যেমন ফরয বা নফল সালাতের ইমাম হতে পারে তেমনিভাবে তাকে নিয়ে জামা‘আতের একটি সারিও হতে পারে:
আমর ইবন সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমার পিতা বলেন:
«جِئْتُكُمْ وَاللَّهِ مِنْ عِنْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَقًّا فَقَالَ: صَلُّوا صَلَاةَ كَذَا فِيْ حِينِ كَذَا وَصَلُّوا صَلَاةَ كَذَا فِيْ حِينِ كَذَا فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ فَلْيُؤَذِّنْ أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْثَرُكُمْ قُرْآنًا، فَنَظَرُوْا فَلَمْ يَكُنْ أَحَدٌ أَكْثَرَ قُرْآنًا مِنِّيْ، لِمَا كُنْتُ أَتَلَقَّى مِنَ الرُّكْبَانِ فَقَدَّمُوْنِيْ بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ، وَأَنَا ابْنُ سِتٍّ أَوْ سَبْعِ سِنِينَ، وَكَانَتْ عَلَيَّ بُرْدَةٌ كُنْتُ إِذَا سَجَدْتُ تَقَلَّصَتْ عَنِّي فَقَالَتْ امْرَأَةٌ مِنَ الْحَيِّ أَلَا تُغَطُّوا عَنَّا اسْتَ قَارِئِكُمْ فَاشْتَرَوْا فَقَطَعُوْا لِيْ قَمِيصًا فَمَا فَرِحْتُ بِشَيْءٍ فَرَحِيْ بِذَلِكَ الْقَمِيصِ».
“আল্লাহর কসম! আমি সত্যিই তোমাদের নিকট নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে এসেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেন: তোমরা এ সালাত এ সময়ে পড়বে এবং ও সালাত ও সময়ে পড়বে। যখন সালাতের সময় হবে তখন তোমাদের কোনো একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে কুর’আন বেশি জানে সে ইমামতি করবে। যখন তারা গোত্রের সবার ওপর চোখ বুলিয়ে দেখলো তখন তারা আমার চেয়ে বেশি কুরআন জানে এমন কাউকে খুঁজে পায় নি। কারণ, আমি তো ইতোমধ্যেই পথচারী আরোহীদের থেকে অনেক কিছুই শিখে ফেলেছি। তখন তারা আমাকে ইমামতির জন্য সামনে বাড়িয়ে দিলো। আমার বয়স ছিলো তখন ছয় বা সাত বছর। আমার গায়ে ছিলো তখন একটি চাদর। আমি যখন সাজদায় যেতাম তখন আমার চাদর খানা একটু উপরে চলে আসতো। তখন পাড়ার এক মহিলা বললো: তোমরা কি তোমাদের ইমাম সাহেবের পাছা খানা ঢেকে দিবে না। তখন তারা কাপড় কিনে আমাকে একটি জামা সেলাই করে দিলো। তাতে আমি এতো বেশি খুশি হলাম যা ইতোপূর্বে আর কখনো হই নি”।[2]
উক্ত মজার ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায়ই ঘটেছিলো। তিনি অবশ্যই তা জেনেছেন ও সমর্থন করেছেন। তা না হলে আল্লাহ তা‘আলা তো তা অবশ্যই জানতেন। যদি তা সঠিকই না হতো তাহলে তিনি অবশ্যই তা ওহী মারফত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানিয়ে দিতেন। কারণ, তখন তো ছিলো বিধান নাযিল হওয়ার যুগ। আর কিছু সংখ্যক সাহাবায়ে কিরাম দীর্ঘ সময় একটি ভুলের ওপর থাকবেন অথচ আল্লাহ তা‘আলা তা দেখেও নীরব থাকবেন তা কখনোই হতে পারে না।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«دَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْنَا وَمَا هُوَ إِلَّا أَنَا وَأُمِّيْ وَأُمُّ حَرَامٍ خَالَتِيْ فَقَالَ: قُومُوا فَلِأُصَلِّيَ بِكُمْ - فِي غَيْرِ وَقْتِ صَلَاةٍ - فَصَلَّى بِنَا، فَقَالَ رَجُلٌ لِثَابِتٍ: أَيْنَ جَعَلَ أَنَسًا مِنْهُ؟ قَالَ: جَعَلَهُ عَلَى يَمِينِهِ، ثُمَّ دَعَا لَنَا أَهْلَ الْبَيْتِ بِكُلِّ خَيْرٍ مِنْ خَيْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِــرَةِ، فَقَالَتْ أُمِّيْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ! خُوَيْدِمُكَ ادْعُ اللَّهَ لَهُ، قَالَ: فَدَعَا لِي بِكُلِّ خَيْرٍ، وَكَانَ فِيْ آخِـرِ مَا دَعَا لِيْ بِهِ أَنْ قَالَ: اللَّهُمَّ أَكْثِرْ مَالَهُ وَوَلَدَهُ وَبَارِكْ لَهُ فِيهِ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএকদা আমাদের ঘরে আসলেন। তখন আমাদের ঘরে ছিলাম আমি, আমার আম্মা ও আমার খালা উম্মু হারাম। তখন তিনি বললেন: তোমরা দাঁড়িয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে নিয়ে সালাত পড়বো। তখন কোনো ফরয সালাতের সময় ছিলো না। অতঃপর তিনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত পড়লেন। জনৈক ব্যক্তি বর্ণনাকারী হযরত সাবিত রহ. কে জিজ্ঞাসা করলো: আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো পার্শ্বে ছিলেন? তিনি বলেন: তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ডান পার্শ্বে ছিলেন। অতঃপর তিনি আমাদের ঘরের সকলের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সমূহ কল্যাণের দো‘আ করলেন। আমার আম্মু বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার ছোট খাদেমটির জন্য বিশেষভাবে দো‘আ করুন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার জন্য সমূহ কল্যাণের দো‘আ করলেন। তিনি আমার জন্য সর্ব শেষ যে দো‘আটি করলেন তা হলো: হে আল্লাহ! আপনি এর সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দিন এবং সেগুলোর মধ্যে বরকত দিন”[3]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন:
«أَنَّ جَدَّتَهُ مُلَيْكَةَ دَعَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِطَعَامٍ صَنَعَتْهُ فَأَكَلَ مِنْهُ ثُمَّ قَالَ: قُومُوا فَأُصَلِّيَ لَكُمْ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ: فَقُمْتُ إِلَى حَصِيرٍ لَنَا قَدْ اسْوَدَّ مِنْ طُولِ مَا لُبِسَ فَنَضَحْتُهُ بِمَاءٍ فَقَامَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصَفَفْتُ أَنَا وَالْيَتِيمُ وَرَاءَهُ وَالْعَجُوزُ مِنْ وَرَائِنَا فَصَلَّى لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ انْصَرَفَ».
“একদা তার দাদী মুলাইকাহ রাদিয়াল্লাহ আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য কিছু খানা বানিয়ে তা খাওয়ার জন্য তাঁকে দাওয়াত করলেন। তখন তিনি এসে তা খেলেন অতঃপর বললেন: তোমরা দাঁড়িয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে নিয়ে সালাত পড়বো। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমি একটি পুরাণ পাটির উপর যা দীর্ঘ দিন থাকতে থাকতে কালো হয়ে গিয়েছিলো তার ওপর পানি ছিঁটিয়ে দিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর দাঁড়ালেন এবং আমি ও একজন এতিম তাঁর পেছনে দাঁড়ালাম। আর আমার দাদী আমাদের পেছনে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আমাদেরকে নিয়ে দু’ রাকাত সালাত পড়লেন। অতঃপর চলে গেলেন”।[4]
>[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৩০২।
[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬০।
[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৫৮।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنْ الصَّلَاةِ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ».
“যে ব্যক্তি কোনো সালাতের একটি রাকাত (ইমামের সাথে) পেলো সে যেন পুরো সালাতই ইমামের সাথে পেলো”।[1]
আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনি একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রুকু অবস্থায় পেলে তিনি তখন সালাতের সারিতে না পৌঁছেই সারির পেছনেই রুকু’ করে ফেললেন। ব্যাপারটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানানো হলে তিনি তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
«زَادَكَ اللهُ حِرْصًا وَلَا تَعُدْ».
“আল্লাহ তা‘আলা তোমার সালাতের প্রতি আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিন। তবে এ কাজ তুমি আর কখনো করবে না। তথা সারিতে না পৌঁছেই সারির পেছনে কখনো দ্রুত রুকু’ করবে না”।[2]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا جِئْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ وَنَحْنُ سُجُوْدٌ فَاسْجُدُوْا وَلَا تَعُدُّوْهَا شَيْئًا وَمَنْ أَدْرَكَ الرَّكْعَةَ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ».
“যখন তোমরা আমাদেরকে সালাতের সেজদাহরত অবস্থায় পাও তখন তোমরাও সাজদাহ করো। তবে উহাকে রাকাত হিসেবে ধরবে না। আর যে ব্যক্তি রুকু’ তথা রাকাত পেলো সে যেন পুরো সালাতই পেলো”।[3]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য বর্ণনায় রয়েছে তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الصَّلاَةِ فَقَدْ أَدْرَكَهَا قَبْلَ أَنْ يُقِيمَ الإِمَامُ صُلْبَهُ».
“যে ব্যক্তি ইমাম সাহেব রুকু’ থেকে নিজ পিঠ উঠানোর আগেই তাঁর সাথে রুকু’ পেলো সে যেন পুরো সালাতই পেলো”।[4]
তবে কোনো ব্যক্তি ওযরবশতঃ সালাতে হাজির হতে দেরি করে ফেললে এবং সে মসজিদে এসে সালাতের রুকু না পেয়ে তার কোনো একটি অংশ পেলে অথচ সে সর্বদা সালাতের পাবন্দ তবুও সে জামা‘আত পেলো না বলে ধরে নেওয়া হবে। কিন্তু তাকে নিয়্যাত ভালো ও ওযর থাকার দরুন জামা‘আতের সাওয়াব দেওয়া হবে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوْءَهُ ثُمَّ رَاحَ فَوَجَدَ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا أَعْطَاهُ اللهُ جَلَّ وَعَزَّ مِثْلَ أَجْرِ مَنْ صَلَّاهَا وَحَضَرَهَا لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَجْرِهِمْ شَيْئًا».
“যে ব্যক্তি ভালোভাবে অযু করে মসজিদে গেলো অতঃপর দেখলো মানুষ সালাত পড়ে ফেলেছে তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে সালাত পড়ুয়াদের ন্যায় জামা‘আতের সাওয়াব দিয়ে দিবেন। এমনকি তাদের সাওয়াবে একটুও ঘাটতি করা হবে না”।[5]
আবু মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا مَرِضَ الْعَبْدُ أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيمًا صَحِيحًا».
“যখন কোনো বান্দা রোগাক্রান্ত অথবা সফররত অবস্থায় থাকে তখন তার জন্য তার আমলনামায় মুক্বীম (নিজ এলাকা অথবা তেমন কোনো এলাকায় ইক্বামতের নিয়্যাতে অবস্থানরত অবস্থা) ও সুস্থ অবস্থার আমলের ন্যায় আমল লেখা হবে”।[6]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তাবুক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে তিনি বললেন:
«إِنَّ أَقْوَامًا بِالـْمَدِينَةِ خَلْفَنَا مَا سَلَكْنَا شِعْبًا وَلَا وَادِيًا إِلَّا وَهُمْ مَعَنَا فِيهِ حَبَسَهُمْ الْعُذْرُ».
“কিছু সংখ্যক লোক এমন রয়েছে যাদেরকে আমরা মদিনায় রেখে এসেছি অথচ আমরা যে কোনো গিরি পথ ও উপত্যকায় গিয়েছিলাম তারা সেখানে আমাদের সাথেই ছিলো। তাদেরকে মদিনায় একমাত্র ওযরই আটকে রেখেছে”।[7]
অন্য বর্ণনায় রয়েছে,
«إِنَّ بِالْـمَدِينَةِ أَقْوَامًا مَا سِرْتُمْ مَسِيرًا، وَلَا قَطَعْتُمْ وَادِيًا إِلَّا كَانُوا مَعَكُمْ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ! وَهُمْ بِالـْمَدِينَةِ؟ قَالَ: وَهُمْ بِالـْمَدِينَةِ حَبَسَهُمْ الْعُذْرُ».
“মদিনায় এমন কিছু সংখ্যক লোক রয়েছে; তোমরা যে পথ বা উপত্যকাই অতিক্রম করেছো তারা তোমাদের সাথেই ছিলো। সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! তারা তো বস্তুতঃ মদিনায় রয়েছে অথচ তারা আমাদের সাথে থাকলো কি ভাবে? তিনি বললেন: তারা সত্যিই মদিনায়। একমাত্র ওযরই তাদেরকে সেখানে আটকে রেখেছে। তবে তারা মানসিকভাবে তথা আগ্রহ ও উৎসাহের দিক দিয়ে তোমাদের সাথেই রয়েছে”।[8]
উক্ত হাদীসগুলো থেকে এ কথা সুস্পষ্ট হয়ে গেলো যে, কেউ কোনো শর’য়ী ওযরের কারণে কোনো সৎকর্ম করতে না পারলে তাকে উক্ত কর্ম সম্পাদনের সমপরিমাণই সাওয়াব দেওয়া হয়।
>[2] বুখারী, হাদীস নং ৭৮৩
[3] আবু দাউদ, হাদীস নং ৮৯৩।
[4] বায়হাক্বী, হাদীস নং ২৬৭৮; দারাক্বুত্ব্নী, হাদীস নং ১; ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১৫৯৫।
[5] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৬৪।
[6] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯৯৬।
[7] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৮৩৮, ২৮৩৯।
[8] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪২৩।
একই মসজিদে দ্বিতীয় জামা‘আত করার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে যা নিম্নরূপ:
১. একই মসজিদে নিয়মিত দু’ বা ততোধিক জামা‘আত করা। তথা প্রতি বেলায় কোনো মসজিদে দু’ বা ততোধিক জামা‘আত করা। এমনটি করা বিদ‘আত।
২. কখনো কখনো কোনো মসজিদে দু’ বা ততোধিক জামা‘আত করা। যা নিয়মিত নয়। তথা নিয়মিত ইমাম একটি জামা‘আত সম্পন্ন করে গেছেন। এ দিকে দু’ বা ততোধিক ব্যক্তি কোনো ওযরবশতঃ উক্ত জামা‘আতে হাজির হতে পারেনি। তখন তারা কি উক্ত মসজিদেই দ্বিতীয় জামা‘আত করতে পারবে? না কি নয়। তা নিয়েই আমাদের উক্ত আলোচনা।
কেউ কেউ বলেন: উক্ত মসজিদে দ্বিতীয় জামা‘আত আর করা যাবে না। বরং তারা একাকী সালাত আদায় করবে। আর কেউ কেউ বলেন: তাদের জন্য দ্বিতীয় জামা‘আত করা জায়িয ও মুস্তাহাব। এটিই সঠিক মত। যা নিম্নে প্রমাণ সহ বর্ণিত হবে। ইনশাআল্লাহ।
৩. কোনো রাস্তা-ঘাটের মসজিদ। যেখানে কোনো নিয়মিত ইমাম নেই। সেখানে প্রতি বেলায় দু’ বা ততোধিক লোক ঢুকছে। আর সালাত পড়ে চলে যাচ্ছে। আবার দু’ বা ততোধিক লোক ঢুকছে। আর সালাত পড়ে চলে যাচ্ছে। এ জাতীয় মসজিদে দ্বিতীয় জামা‘আত একেবারেই বৈধ। তাতে কোনো দ্বিমত নেই।
নিম্নে একই মসজিদে অনিয়মিত দ্বিতীয় জামা‘আত বৈধ হওয়ার প্রমাণ উল্লিখিত হয়েছে। যা উপরে বর্ণিত দ্বিতীয় পদ্ধতি।
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে নিয়ে জোহরের সালাত আদায় করলেন। ইতিমধ্যে জনৈক সাহাবী মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন: তুমি আমাদের সাথে জামা‘আতে উপস্থিত হলে না কেন? তখন তিনি কোনো একটি ওযর দেখিয়ে একাকী সালাত আদায় করতে শুরু করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
«أَلَا رَجُلٌ يَتَصَدَّقُ عَلَى هَذَا فَيُصَلِّيَ مَعَهُ؟».
“এমন কি কেউ আছে যে এর ওপর সাদাকা করবে তথা এর সাথে সালাত পড়বে”?[1]
অন্য বর্ণনায় রয়েছে,
«أَيُّكُمْ يَتَّجِرُ عَلَى هَذَا؟ فَقَامَ رَجُلٌ فَصَلَّى مَعَهُ».
“এমন কি কেউ আছে যে এর সাথে ব্যবসা করবে তথা এর সাথে সালাত পড়বে? তখন জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে তার সাথে সালাত পড়লো”।[2]
ইমাম শাওকানী রহ. বলেন: যিনি তাঁর সাথে সালাত আদায় করতে দাঁড়ালেন তিনি ছিলেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু।[3]
উক্ত হাদীস থেকে দু’টি জিনিস সুস্পষ্ট। যার একটি হচ্ছে, কাউকে কখনো একাকীভাবে ওয়াক্তিয়া তথা তখনকার ফরয সালাত আদায় করতে দেখলে উক্ত ফরয সালাত কিংবা নফল সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে তার সাথে যে কেউ দাঁড়াতে পারে। যদিও সে ইতোপূর্বে নিয়মিত জামা‘আতের সাথে উক্ত ফরয সালাত আদায় করে থাকে। তেমনিভাবে হাদীসটি একই মসজিদে অনিয়মিত দ্বিতীয় জামা‘আত জায়েয হওয়া প্রমাণ করে। জামা‘আতের ফযীলত সংক্রান্ত হাদীসগুলোও দূর থেকে এর সমর্থন করে। কেউ যদি বলে, জামা‘আতের ফযীলতগুলো শুধু প্রথম জামা‘আতের সাথেই সীমাবদ্ধ তাহলে তাকে এ সংক্রান্ত অন্তত একটি বিশেষ প্রমাণ হলেও উল্লেখ করতে হবে।
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু একদা কিছু সংখ্যক লোককে সাথে নিয়ে একবার জামা‘আত অনুষ্ঠিত হয়েছে এমন মসজিদে আযান ও ইক্বামত দিয়ে দ্বিতীয় জামা‘আত আদায় করেন।[4]
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং আলকামা, মাসরূক, আসওয়াদ, হাসান, ক্বাতাদাহ ও আত্বা রহ. তার এক বর্ণনায় উক্ত মত পোষণ করেন।
এদিকে আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীস যাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لَا تُصَلُّوا صَلَاةً فِي يَوْمٍ مَرَّتَيْنِ».
“একই দিনে একই সালাত দু’ বার পড়া যাবে না”।[5]তা থেকে উদ্দেশ্য একই দিনে একই ফরয সালাত ফরযের নিয়্যাতে দু’ বার পড়া। একই ফরয সালাত দ্বিতীয়বার নফলের নিয়্যাতে পড়া কখনো এর বিরোধী নয়।
>[2] তিরমিযী, হাদীস নং ২২০।
[3] নাইলুল-আওত্বার ২/৩৮০।
[4] সহীহ বুখারী/জামা‘আতে সালাত পড়ার ফযীলত অধ্যায়।
[5] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৭৯; নাসাঈ, হাদীস নং ৮৬০।
আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
«كَيْفَ أَنْتَ إِذَا كَانَتْ عَلَيْكَ أُمَرَاءُ يُؤَخِّرُونَ الصَّلَاةَ عَنْ وَقْتِهَا أَوْ يُمِيتُوْنَ الصَّلَاةَ عَنْ وَقْتِهَا؟ قَالَ: قُلْتُ: فَمَا تَأْمُرُنِيْ؟ قَالَ: صَلِّ الصَّلَاةَ لِوَقْتِهَا فَإِنْ أَدْرَكْتَهَا مَعَهُمْ فَصَلِّ فَإِنَّهَا لَكَ نَافِلَةٌ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: وَلاَ تَقُلْ: إِنِّيْ قَدْ صَلَّيْتُ فَلاَ اُصَلِّيْ».
“তুমি তখন কি করবে? যখন তোমার ওপর এমন সকল আমীর-উমারা’ নিযুক্ত হবে। যারা সময় মতো সালাত না পড়ে সালাতকে সত্যিকারার্থে নির্জীব করে দিবে। তিনি বলেন: তখন আমি বললাম: আপনি তখন আমাকে কি করার নির্দেশ দিচ্ছেন? তিনি বলেন: তুমি সময় মতো নিজের সালাতটুকু পড়ে নিবে। অতঃপর তুমি আবার তাদেরকে উক্ত সালাত জামা‘আতে পড়তে দেখলে তা দ্বিতীয়বার পড়ে নিবে যা তোমার জন্য নফল হিসেবেই বিবেচিত হবে। তুমি কখনো এমন বলবে না যে, আমি তো উক্ত সালাত একবার পড়ে ফেলেছি। তাই আর পড়বো না”।[1]
ইয়াযীদ ইবন আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হজ করতে গিয়েছিলাম। তখন আমি তাঁর সাথে মাস্জিদুল-খাইফে ফজরের সালাত আদায় করলাম। সালাত শেষে যখন তিনি মানুষের দিকে ফিরলেন তখন তিনি দু’ জন ব্যক্তিকে সবার পেছনে মসজিদের এক কোনায় সালাত না পড়ে বসে থাকতে দেখলেন। তখন তিনি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন: এদেরকে আমার কাছে নিয়ে আসো। অতঃপর তাদেরকে ভয়ার্তাবস্থায় তাঁর কাছে নিয়ে আসা হলে তিনি তাদেরকে বললেন: তোমরা আমাদের সাথে সালাত পড়লে না কেন? তারা বললো: হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো ইতোপূর্বে নিজ নিজ ঘরে সালাত পড়ে এসেছি। তখন তিনি বললেন:
«فَلَا تَفْعَلَا؛ إِذَا صَلَّيْتُمَا فِي رِحَالِكُمَا، ثُمَّ أَتَيْتُمَا مَسْجِدَ جَمَاعَةٍ، فَصَلِّيَا مَعَهُمْ ؛ فَإِنَّهَا لَكُمَا نَافِلَةٌ».
“তোমরা কখনো আর এমন করো না। তোমরা নিজ নিজ ঘরে সালাত পড়ে থাকলে অতঃপর মসজিদে আসলে সবার সাথে আবার মসজিদে সালাত পড়বে। যা তোমাদের জন্য নফল হবে”।[2]
অন্য বর্ণনায় রয়েছে,
«لَا تَفْعَلُوا، إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فِي رَحْلِهِ، ثُمَّ أَدْرَكَ الْإِمَامَ وَلَمْ يُصَلِّ، فَلْيُصَلِّ مَعَهُ؛ فَإِنَّهَا لَهُ نَافِلَةٌ».
“তোমরা কখনো আর এমন করো না। তোমাদের কেউ নিজ ঘরে সালাত পড়ে থাকলে অতঃপর (মসজিদে এসে) আবারো ইমাম সাহেবকে উক্ত সালাত না পড়াবস্থায় পেলে সে যেন তার সাথে আবার সালাতটুকু পড়ে নেয়। যা তার জন্য নফল হবে”।[3]
মিহজান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসা ছিলাম। আর ইতিমধ্যে সালাতের আযান হয়ে গেলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে উঠে গিয়ে সালাত পড়ে আবার ফিরে আসলেন অথচ আমি সেখানেই বসে ছিলাম। তাঁর সাথে আমি সালাত আদায় করতে যাই নি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
«مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ أَلَسْتَ بِرَجُلٍ مُسْلِمٍ؟ قَالَ: بَلَى، وَلَكِنِّي كُنْتُ قَدْ صَلَّيْتُ فِي أَهْلِي، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا جِئْتَ فَصَلِّ مَعَ النَّاسِ، وَاِنْ كُنْتَ قَدْ صَلَّيْتَ».
“তুমি কেন আমাদের সাথে সালাত পড়লে না? তুমি কি মুসলমান নও? মিহজান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমি নিশ্চয় মুসলিম। তবে আমি ঘরে সালাত পড়ে এসেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন: তুমি যখন (মসজিদে) আসবে তখন মানুষের সাথে সালাত পড়বে। যদিও ইতোপূর্বে সালাত পড়ে থাকো”।[4]
উবাদাহ ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّهَا سَتَكُونُ عَلَيْكُمْ بَعْدِيْ أُمَرَاءُ، تَشْغَلُهُمْ أَشْيَاءُ عَنِ الصَّلَاةِ لِوَقْتِهَا، حَتَّى يَذْهَبَ وَقْتُهَا، فَصَلُّوا الصَّلَاةَ لِوَقْتِهَا، فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ! أُصَلِّي مَعَهُمْ؟ قَالَ: نَعَمْ، اِنْ شِئْتَ».
“অচিরেই আমার মৃত্যুর পর তোমাদের ওপর এমন কিছু আমীর-উমারা’ নিযুক্ত হবে যাদেরকে দুনিয়ার প্রচুর ঝামেলাময় কর্মকান্ড সময় মতো সালাত পড়া থেকে বিরত রাখবে। এমনকি কখনো কখনো সালাতের সঠিক সময়টুকুও পার হয়ে যাবে। তখন তোমরা সময় মতো সালাত পড়ে নিবে। জনৈক ব্যক্তি বললো: হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি পরবর্তীতে উক্ত সালাত তাদের সাথে আবার পড়বো? হ্যাঁ। তোমার যদি মনে চায়”।[5]
আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
«كَيْفَ بِكُمْ إِذَا أَتَتْ عَلَيْكُمْ أُمَرَاءُ، يُصَلُّونَ الصَّلَاةَ لِغَيْرِ مِيقَاتِهَا؟!، قُلْتُ: فَمَا تَأْمُرُنِي؟ إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ! قَالَ: صَلِّ الصَّلَاةَ لِمِيقَاتِهَا وَاجْعَلْ صَلَاتَكَ مَعَهُمْ سُبْحَةً».
“তোমরা তখন কি করবে? যখন তোমাদের ওপর এমন কিছু আমীর-উমারা’ নিযুক্ত হবে। যারা অসময়ে সালাত পড়বে। আমি বললাম: তখন আপনি আমাকে কি করার নির্দেশ দিচ্ছেন? হে আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি সময় মতো নিজের সালাতটুকু পড়ে নাও এবং তাদের সাথে যে সালাত পড়বে তা হবে তোমার জন্য নফল”।[6]
>[2] তিরমিযী, হাদীস নং ২১৯; নাসাঈ, হাদীস নং ৮৫৮।
[3] আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৭৫।
[4] নাসাঈ, হাদীস নং ৮৫৭।
[5] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৩৩।
[6] আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৩৩।
মুগীরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা তাবুক যুদ্ধে থাকাবস্থায় ফজরের সালাতের কিছু পূর্বে আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষজন থেকে একটু দূরে সরে গেলাম। ইতিমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের পিঠ থেকে নেমে প্রস্রাব করলেন। অতঃপর আমি ঘটি থেকে তাঁর হাতে পানি প্রবাহিত করলে তিনি সর্বপ্রথম তাঁর উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করেন। এরপর তাঁর মুখমণ্ডল ধৌত করেন। অতঃপর তিনি তাঁর উভয় হাত কনুই পর্যন্ত খুলতে চাইলে তা না পেরে তিনি হাত দু’টো জুববার নিচ থেকে বের করলেন। এরপর তিনি হাত দু’টো কনুই পর্যন্ত ধুলে এবং মাথা ও মোজা মাসেহ করলে আমি ও তিনি উটে সাওয়ার হলাম। আমরা সবার নিকট পৌঁছুলে দেখলাম, আব্দুর রহ্মান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাত পড়াচ্ছেন। ইতোমধ্যে ফজরের এক রাকাত সালাত শেষ হয়ে গেলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের সাথে সারিবদ্ধ হয়ে আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুর পেছনে দ্বিতীয় রাকাত আদায় করলেন। আব্দুর রহ্মান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাম ফিরালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাকি সালাত পুরো করার জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন। এ দিকে মুসলমানরা হতভম্ব হয়ে বার বার “সুব্হানাল্লাহ” “সুব্হানাল্লাহ” বলতে লাগলো। কারণ, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগেই তাদের সালাত শেষ করে ফেলেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরিয়ে তাদেরকে বললেন:
«قَــدْ أَصَبْتُـمْ أَوْ قَدْ اَحْسَنْتُـمْ».
“তোমরা ঠিক করেছো কিংবা ভালো করেছো”।[1]
উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের পর বাকি সালাতটুকু পুরো করলেন থেকে বুঝা যায় তাঁর পূর্বের সালাতটুকু তাঁর শুরু সালাত ছিলো। নিম্নোক্ত হাদীসও এর প্রমাণ বহন করে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا سَمِعْتُمْ الْإِقَامَـةَ فَامْشُوا إِلَى الصَّلَاةِ، وَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ وَالْوَقَارِ، وَلاَ تُسْرِعُوا، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا، وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا».
“তোমরা যখন ইক্বামত শুনবে তখনই সালাতের দিকে রওয়ানা করবে। চলার সময় প্রশান্তি ও ভদ্রতা বজায় রাখবে। দৌড়ে যাবে না। অতঃপর যা পাবে তাই ইমামের সাথে পড়ে নিবে। আর বাকিটুকু পুরো করে নিবে”।[2] কোনো কোনো বর্ণনায় فَاقْضُوْا শব্দ থাকলেও তা থেকে কোনো কাজ সম্পাদন করার অর্থই বুঝতে হবে। কোনো ছেড়ে যাওয়া কাজ হুবহু করার অর্থ নয়। তাহলে সবগুলো বর্ণনার মাঝে একটা সামঞ্জস্য সাধিত হবে।
>[2] বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯০৮।
আলী ও মুআয রাদিয়াল্লাহ আনহুমা থেকে বর্ণিত তারা বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا أَتَى أَحَدُكُمْ الصَّلَاةَ، وَالْإِمَامُ عَلَى حَالٍ، فَلْيَصْنَعْ كَمَا يَصْنَعُ الْإِمَامُ».
“তোমাদের কেউ যখন জামা‘আতের সালাতে উপস্থিত হয়। আর সে দেখতে পাচ্ছে, ইমাম সাহেব কোনো এক অবস্থায় রয়েছেন। তখন সে তাই করবে যা ইমাম সাহেব করছেন”।[1]
তবে কোনো রাকাতের রুকু’ পেলেই উক্ত রাকাত পেয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। নতুবা নয় যা ইতোপূর্বে বিস্তারিত উল্লেখ হয়েছে।
কেউ কেউ নিজ প্রাইভেট ড্রাইভার কিংবা দোকানের কর্মচারীদেরকে জামা‘আতে সালাত আদায় করতে বাধা দিয়ে থাকে। তা করা কোনোভাবেই তার জন্য জায়িয নয়। কারণ, জামা‘আতে সালাত পড়া ওয়াজিব এবং তা আল্লাহ তা‘আলার একান্ত অধিকার তথা আনুগত্যও বটে। আর এ কথা জানা যে, আল্লাহ তা‘আলার অধিকার ও আনুগত্য সবার অধিকার ও আনুগত্যের ওপর। তাই আল্লাহ তা‘আলার অধিকার খর্ব করার সাধ্য কারোর নেই।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ﴾ [المائدة: ٢]
“তোমরা নেক ও আল্লাহ্ভীরুতার কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো। গুনাহ ও হঠকারিতার কাজে কাউকে সহযোগিতা করো না। সর্বদা আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কঠিন শাস্তিদাতা”। [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ২]
জামা‘আতের কাতার সোজা করা সুন্নাত। তবে কেউ কেউ তা ওয়াজিব বলেও মত ব্যক্ত করেছেন।
নু‘মান ইবন বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত আমাদের কাতারগুলো সোজা করতেন যেন তিনি তীর সোজা করছেন। যতক্ষণ না তিনি বুঝলেন, আমারা ব্যাপারটি বুঝে ফেলেছি। একদা তিনি সালাতের তাকবীর দিবেন দিবেন এমতাবস্থায় দেখলেন, জনৈক সাহাবীর ছাতি অন্যদের তুলনায় একটু সামনের দিকে বের হয়ে আছে তখন তিনি সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন:
«لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ».
“তোমরা সালাতের কাতারগুলো সোজা করবে। নয় তো আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের মাঝে ভিন্নতা সৃষ্টি করবেন”।[1]
>“ইমাম সাহেব যখন তাকবীর দিয়ে পুরোপুরি রুকুতে চলে যাবেন তখন মুক্তাদিগণ রুকু করতে অগ্রসর হবেন। তেমনিভাবে ইমাম সাহেব যখন তাকবীর দিয়ে সাজদাহ’র জন্য জমিনে কপাল ঠেকাবেন তখনই মুক্তাদিগণ তাকবীর দিয়ে সিজদায় যাবেন। ইমাম সাহেবের আগে, বহু পরে ও সমানতালে কোনো রুকন আদায় করা যাবে না”।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَمَا يَخْشَى الَّذِيْ يَرْفَعُ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ أَنْ يُحَوِّلَ اللهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ أَوْ يُحَوِّلَ صُوْرَتَهُ صُوْرَةَ حِمَارٍ ».
“ঐ ব্যক্তি কি ভয় পাচ্ছে না যে ইমাম সাহেবের পূর্বেই রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে নেয় যে, আল্লাহ তা‘আলা তার মাথাকে গাধার মাথায় রূপান্তরিত করবেন অথবা তার গঠনকে গাধার গঠনে পরিণত করবেন”।[1]
আবু মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«الإِمَامُ يَرْكَعُ قَبْلَكُمْ وَيَرْفَعُ قَبْلَكُمْ».
“ইমাম সাহেব তোমাদের আগেই রুকু করবেন এবং তোমাদের আগেই রুকু থেকে মাথা উঠাবেন”।[2]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لاَ تَسْبِقُوْنِيْ بِالرُّكُوْعِ وَلاَ بِالسُّجُوْدِ وَلاَ بِالْقِيَامِ وَلاَ بِالْقُعُوْدِ وَلاَ بِالاِنْصِرَافِ».
“তোমরা আমার আগে রুকু, সাজদাহ, উঠা-বসা ও সালাম আদায় করো না”।[3]
আব্দুল্লাহ ইবন মাস’ঊদ্ ও আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত তারা একদা রুকন আদায়ে ইমামের অগ্রবর্তী জনৈক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
«لاَ وَحْدَكَ صَلَّيْتَ وَلاَ بِإِمَامِكَ اِقْتَدَيْتَ».
“(তোমার সালাতই হয় নি) না তুমি একা সালাত পড়লে। না ইমাম সাহেবের সাথে পড়লে”।[4]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوْا وَلاَتُكَبِّرُوْا حَتَّى يُكَبِّرَ، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوْا وَلاَ تَرْكَعُوْا حَتَّى يَرْكَعَ».
“মূলতঃ ইমাম সাহেব হচ্ছেন অনুসরণীয়। তাই তিনি তাকবীর সমাপ্ত করলে তোমরা তাকবীর বলবে। তোমরা কখনো তাকবীর বলবে না যতক্ষণ না তিনি তাকবীর বলেন। তিনি রুকুতে চলে গেলেই তোমরা রুকু শুরু করবে। তোমরা রুকু করবে না যতক্ষণ না তিনি রুকু করেন”।[5]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا كَبَّرَ الإِمَامُ فَكَبِّرُوْا وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوْا وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ وَقَاْلَ: سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَارْفَعُوْا وَقُوْلُوْا رَبَّنَا وَلَكَ الْـحَمْدُ وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوْا».
“যখন ইমাম সাহেব তাকবীর সমাপ্ত করবেন তখন তোমরা তাকবীর বলবে। আর যখন তিনি রুকুতে চলে যাবেন তখন তোমরা রুকু শুরু করবে। আর যখন তিনি রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে “সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলবেন তখন তোমরা রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে “রাববানা ওয়া লাকাল হাম্দ” বলবে। আর যখন তিনি সাজদায় যাবেন তখন তোমরা সাজদাহ শুরু করবে”।[6]
বারা ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا انْحَطَّ لِلسُّجُوْدِ لاَ يَحْنِيْ أَحَدٌ ظَهْرَهُ حَتَّى يَضَعَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَبْهَتَهُ عَلَى الأَرْضِ».
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামযখন সাজদাহ’র জন্য ঝুঁকে পড়তেন তখনো আমাদের কেউ নিজ পৃষ্ঠদেশ বাঁকা করতো না যতক্ষণ না নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামনিজ কপাল জমিনে রাখতেন”।[7]
>[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪০৪; ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১৫৯৩।
[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪২৬।
[4] উমদাতুল-ক্বারি ৮/৩৮৩; আবু দাউদ/আইনি ৩/১৫০।
[5] সহীহবুখারী, হাদীস নং ৩৭৮, ৮০৫, ১১১৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪১৪, ৪১৭; আবু দাউদ, হাদীস নং ৬০৩।
[6] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২২, ৭৩৪, ৮০৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪১৪।
[7] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯০, ৮১১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৭৪; আবু দাউদ, হাদীস নং ৬২১।