লগইন করুন
মুগীরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা তাবুক যুদ্ধে থাকাবস্থায় ফজরের সালাতের কিছু পূর্বে আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষজন থেকে একটু দূরে সরে গেলাম। ইতিমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের পিঠ থেকে নেমে প্রস্রাব করলেন। অতঃপর আমি ঘটি থেকে তাঁর হাতে পানি প্রবাহিত করলে তিনি সর্বপ্রথম তাঁর উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করেন। এরপর তাঁর মুখমণ্ডল ধৌত করেন। অতঃপর তিনি তাঁর উভয় হাত কনুই পর্যন্ত খুলতে চাইলে তা না পেরে তিনি হাত দু’টো জুববার নিচ থেকে বের করলেন। এরপর তিনি হাত দু’টো কনুই পর্যন্ত ধুলে এবং মাথা ও মোজা মাসেহ করলে আমি ও তিনি উটে সাওয়ার হলাম। আমরা সবার নিকট পৌঁছুলে দেখলাম, আব্দুর রহ্মান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাত পড়াচ্ছেন। ইতোমধ্যে ফজরের এক রাকাত সালাত শেষ হয়ে গেলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের সাথে সারিবদ্ধ হয়ে আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুর পেছনে দ্বিতীয় রাকাত আদায় করলেন। আব্দুর রহ্মান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাম ফিরালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাকি সালাত পুরো করার জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন। এ দিকে মুসলমানরা হতভম্ব হয়ে বার বার “সুব্হানাল্লাহ” “সুব্হানাল্লাহ” বলতে লাগলো। কারণ, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগেই তাদের সালাত শেষ করে ফেলেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরিয়ে তাদেরকে বললেন:
«قَــدْ أَصَبْتُـمْ أَوْ قَدْ اَحْسَنْتُـمْ».
“তোমরা ঠিক করেছো কিংবা ভালো করেছো”।[1]
উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের পর বাকি সালাতটুকু পুরো করলেন থেকে বুঝা যায় তাঁর পূর্বের সালাতটুকু তাঁর শুরু সালাত ছিলো। নিম্নোক্ত হাদীসও এর প্রমাণ বহন করে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا سَمِعْتُمْ الْإِقَامَـةَ فَامْشُوا إِلَى الصَّلَاةِ، وَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ وَالْوَقَارِ، وَلاَ تُسْرِعُوا، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا، وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا».
“তোমরা যখন ইক্বামত শুনবে তখনই সালাতের দিকে রওয়ানা করবে। চলার সময় প্রশান্তি ও ভদ্রতা বজায় রাখবে। দৌড়ে যাবে না। অতঃপর যা পাবে তাই ইমামের সাথে পড়ে নিবে। আর বাকিটুকু পুরো করে নিবে”।[2] কোনো কোনো বর্ণনায় فَاقْضُوْا শব্দ থাকলেও তা থেকে কোনো কাজ সম্পাদন করার অর্থই বুঝতে হবে। কোনো ছেড়ে যাওয়া কাজ হুবহু করার অর্থ নয়। তাহলে সবগুলো বর্ণনার মাঝে একটা সামঞ্জস্য সাধিত হবে।
>[2] বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯০৮।