এক শীতের রাতে উমর তাঁর নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন মদীনার পথে পথে, তখন তিনি বাচ্চাদের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলেন। শব্দ অনুসরণ করে কারণ খুঁজতে গেলেন তিনি, দেখলেন একজন বিধবার চারপাশ ঘিরে কয়েকটি বাচ্ছা কাঁদছে। কারণ জিজ্ঞাসা করতেই মহিলাটি বললেন যে, ক্ষুধার জ্বালায় তারা কাঁদছে। চুলায় তখন হাঁড়িতে কি যেন টগবগ করে ফুটছিল।ওমর জিজ্ঞাসা করলেন: চুলার উপর হাঁড়িটিতে কি আছে? মহিলাটি উত্তর দিলেন যে ওতে কয়েকটি নুড়ি পাথর ছাড়া আর কিছুই নেই। বাচ্চাদের এভাবে ভুলিয়ে রাখা হচ্ছে যতক্ষণ না তারা ঘুমিয়ে যায়। মহিলাটি খলিফার বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুললেন। ওমরের দুচোখ বেয়ে পানির ধারা নেমে এলো। তিনি বায়তুল মালে ছুটে গেলেন এবং সেখান থেকে আটার বস্তা ও তেল পিঠে করে বয়ে নিয়ে এলেন। নিজে ফুঁ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে খাবার তৈরি করে বাচ্চাদের খাওয়ালেন। তারপর তিনি মহিলাটিকে বললেন বায়তুল মাল থেকে সে যেন তার প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী খাবার নিয়ে আসে।
তাঁর খিলাফতের এলাকায় কোথায় কার কি অবস্থা তার সবকিছু জানার কথা নয় তাঁর, তবু তিনি নিজেকে জনগণের জন্য দায়িত্বশীল মনে করতেন এবং আল্লাহর কাছে এজন্য জবাবদিহি করতে হবে সে ভয় করতেন।
কয়েকজন ক্রীতদাস একটি উট চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। খলিফা দেখলেন লোকগুলো একেবারেই হাড্ডিসার। তিনি বুঝলেন যে ক্ষুধার তাড়নায় তারা চুরি করেছে। তাদের শাস্তি দেয়ার বদলে তিনি তাদের মালিককে ভৎর্সনা করলেন তাদেরকে যথেষ্ট পরিমাণে খেতে না দেওয়ার জন্য। তারপর তিনি ক্রীতদাসদের মালিকদের চুরি যাওয়া উটের মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দিলেন। আর ক্রীতদাসদের সতর্ক করে দিলেন যে তারা যেন আর চুরি না করে।