হে মুক্তির পথের পথিক বান্দা! জেনে রাখুন, তাওবা হলো ইসলামের মূলনীতিসমূহের অন্যতম একটি; আর তা হলো মহাশক্তিধর মালিকের নিকট নিশ্চিত অবস্থানের দিকে ভ্রমণকারীদের প্রথম মানযিল এবং পরকালের দিকে অভিযাত্রীদের দীর্ঘ পথের সূচনা।
তা সত্ত্বেও এটা যেমনিভাবে সূচনা, ঠিক অনুরূপভাবে এটা মাঝামাঝি ও শেষও বটে; সুতরাং তা থেকে কোনো নৈতিকতা সম্পন্ন বান্দা বিচ্ছিন্ন হতে পারে না এবং মৃত্যু পর্যন্ত সে তা অব্যাহত রাখবে। আর তাওবার সূচনা হল এমনভাবে লজ্জিত বা অনুশোচনা করা, যা এ দৃঢ়তা, সঠিক ইচ্ছাশক্তি ও প্রকৃত জ্ঞানবোধ জন্ম দিবে যে, পাপরাশি হলো বান্দা ও তার প্রতিপালকের মাঝখানে পর্দা বা অন্তরায়; কেননা, তা অন্তরের ময়লা বা কালিমা; সুতরাং সে দ্রুত মুক্তি ও শান্তির দিকে চলবে; আর আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া ছাড়া তাঁর থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই; আর যে ব্যক্তি তার রবের নিকট আশ্রয় নেয়, সে এমন আশ্রয়ে চলে যায়, যেখানে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এবং কখনও সে ফিরে আসবে না শূন্য হাতে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمۡ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمۡ سَئَِّاتِكُمۡ
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর---বিশুদ্ধ তাওবা; সম্ভবত তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দেবেন।”[1]
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« التَّائِبُ مِنْ الذَّنْبِ كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ » . ( رواه ابن ماجه ) .
“গুনাহ্ থেকে তাওবাকারী ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির মত, যার কোনো গুনাহ্ নেই।”[2]
অতএব, হে আমার ভাই! তাওবা ও তোমার মাঝে প্রতিবন্ধকতার দেয়াল রচিত হওয়ার পূর্বেই তুমি তাওবার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন কর; কারণ, কোনো ব্যক্তিই জানে না যে, আল্লাহ তার সাথে কেমন আচরণ করবেন।
জনৈক কবির কবিতা:
قَدِّمْ لِنَفْسِكَ تَوْبَةً مَرْجُوَّةً
قَبْلَ المَمَاتِ وَقَبْلَ حَبْسِ الأَلْسُنِ
(তুমি তোমার নিজের জন্য প্রত্যাশিত তাওবা পেশ কর
মৃত্যুর পূর্বে এবং কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই)।
بادِر بها غَلقَ النّفوس فإنَّها
ذُخرٌ وغُنم للمُنيب المحسِنِ
(সুযোগ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই তুমি তা সম্পন্ন কর; কারণ, তা হলতাওবাকারী সৎকর্মশীল ব্যক্তির জন্য সঞ্চিত ধন ও গনীমত)।
>[2] ইবনু মাজাহ, হাদিস নং- ৪২৫০ এবং অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ হাদিসটি আবদুল্লাহ আবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন। আমি বলি: হাদিসটি হাসান পর্যায়ের।