সকল প্রশংসা পরম করুণাময় আল্লাহ তা‘আলার জন্য। আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি, ক্ষমা চাই এবং তাঁর কাছে তাওবা করি। আমাদের নিজ নফসের অনিষ্টতা এবং আমাদের আমলের অযাচিত দিকগুলো থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। আল্লাহ তা‘আলা যাকে হিদায়েত দান করেন তাকে পথচ্যুত করার কেউ নেই; আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হিদায়েত করার কেউ নেই। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

‘আল্লাহ তা‘আলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র: কিছু আদর্শিক নীতিমালা’ শীর্ষক গ্রন্থটিতে এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে যা পাঠকের বিশ্বাসে যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা, তার বিশ্বাসকে পৌঁছে দিতে পারে স্বচ্ছতার শীর্ষে। উদাহরণত, আমাদের অনেকেই এ বিশ্বাস পোষণ করে থাকি যে, আল্লাহ তা‘আলা সত্তাগতভাবে মানুষের সঙ্গে অবস্থান করছেন। এটি একটি অবান্তর ধারণা যা শুধরিয়ে নেওয়া প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে উক্ত বিষয়সহ আল্লাহ তা‘আলার নামসমগ্রের প্রতি বিশ্বাসের ধরন-ধারণ কী হবে তা বিশ্লেষণসহ আলোচনা করা হয়েছে।

প্রখ্যাত ইসলামী শরীয়তবিদ প্রয়াত শায়খ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমীন রাহেমাহুল্লাহ কর্তৃক রচিত এই গ্রন্থটি আরবী থেকে ইংরেজিতে ভাষান্তরিত করেন জনাব ফয়সল শফীক। তিনি ইংরেজি সংস্করণের নাম দিয়েছেন- ‘The Beautiful Names and Attributes of Allah: Important Principles to Remember’ আমেরিকায় যারা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আকীদা-বিশ্বাস বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাদের কাছে অনুবাদগ্রন্থটি অন্ত্যন্ত প্রিয়। বইটির বাংলা সংস্করণ তৈরি করা যায় কি-না সে ব্যাপারে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং শায়খ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উছাইমিন রাহেমাহুল্লাহ-এর লেখা মূল আরবি সংস্করণটি সংগ্রহ করে সরাসরি আরবি থেকে অনুবাদকর্ম সম্পন্ন করেন। বইটি তাত্ত্বিক আলোচনা-নির্ভর হওয়ায় এর বাংলা সংস্করণ তৈরি করা সহজসাধ্য ব্যাপার ছিল না। মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক এজন্য বিশেষ ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। আল্লাহ তা‘আলা তাকে জাযায়ে খায়ের দান করুন।

আবহাস এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মাওলানা আবদুল্লাহ শহীদ আবদুর রহমান বইটির পাণ্ডুলিপি পড়েছেন এবং আমাদের সার্বিক সহযোগিতায় আবহাস-এর পক্ষ থেকে বইটি প্রকাশ করার জন্য আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বলে তাকে ও আবহাসের অন্যান্য পরিচালকবৃন্দকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সবাইকে জাযায়ে খায়ের দান করুন।

পরিশেষে আল্লাহ তা‘আলার কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন এই অনুবাদকর্মটি কবুল করেন এবং আমাদের সকলের নাজাতের উসিলা বানান। আমিন।

মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন (এফ.সি.এ)

মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম

রফিকুল হক রঞ্জু

টেক্সাস, হিউস্টন, আমেরিকা

৩০ আগস্ট ২০১৩

আকীদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা একটি অনিবার্য বিষয়। আকীদা-বিশ্বাস অস্বচ্ছ বা অযথার্থ হলে আমল ও আচার-অনুষ্ঠানগত একনিষ্ঠতা, ত্যাগ ও কুরবানী গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে, এ বিষয়টি আমাদের সকলেরই জানা। তবু দেখা যায় যে, আমাদের মধ্যে অনেকেই আকীদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রটিকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। বরং প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকেই তারা আকীদা-বিশ্বাস হিসেবে ধারণ করে চলেন। পক্ষান্তরে আকীদা-বিশ্বাসের প্রতিটি উপায়-উপকরণের ক্ষেত্রেই আমাদের হতে হবে অতিমাত্রায় সংবেদনশীল, সমধিক গুরুত্বারোপকারী ও ঐকান্তিক। বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার উলুহিয়াত, (ইবাদত) রুবুবিয়াত (প্রভুত্ব), আসমা ও সিফাত (নাম ও গুণাবলী) সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী। কেননা তাওহিদ বলতে আমরা যা বুঝি, তা এ বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। অতএব এ ক্ষেত্রে কোনো বিচ্যুতির অর্থ মূল বিশ্বাসের জায়গাটি ত্রুটিপূর্ণ থাকা, যা কোনোভাবেই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আল্লাহ তা‘আলার আসমা ও সিফাত তথা নাম ও গুণসমগ্রের ব্যাপারে আমাদের কী ধরনের বিশ্বাস পোষণ করতে হবে সে ব্যাপারে গবেষণাধর্মী কোনো বই বাংলা ভাষায় এখনো আমার নজরে পড়েনি। অতএব ঈমানী তাগিদ থেকেই আমি অনুভব করি যে, প্রখ্যাত শরীয়তবিদ শায়খ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উছাইমীন র. রচিত ‘আল কাওয়িদুল মুছলা ফী সিফাতিল্লাহি তা‘আলা ওয়া আসমাইহিল হুসনা’ গ্রন্থটি বাংলা ভাষায় অনূদিত হওয়া উচিত। আর তাই বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করার প্রস্তাব আমি অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গেই গ্রহণ করি।

হানাফী মাযহাবের মূল বিশ্বাসের সঙ্গে বইটিতে উল্লিখিত বক্তব্যমালার কোনো সংঘর্ষ নেই। যা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মৌল আকীদা বলে স্বীকৃত।

মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন (এফ.সি.এ) এবং হিউস্টন প্রবাসী সর্বজনাব শহীদুল ইসলাম, রফিকুল হক রঞ্জু বক্ষ্যমাণ বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ ও প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করায় অশেষ ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। আবহাস এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটির সম্মানিত পরিচালকবৃন্দ, বিশেষ করে মাওলানা আবদুল্লাহ শহীদ আবদুর রহমান, মাওলানা ইকবাল হোসাইন মাছুম, মাওলানা চৌধুরী আবুল কালাম আযাদ, মাওলানা আখতারুজ্জামান ও মাওলানা কামাল উদ্দিন মোল্লা বইটি আবহাসের পক্ষ থেকে প্রকাশের সম্মতি জ্ঞাপন করায় তাদের সকলের জন্য রইল আমার আন্তরিক দো‘আ। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সকলকে জাযায়ে খায়ের দান করুন। আমিন।

মুহাম্মদ শামসুল হক সিদ্দিক

সভাপতি ও মহাপরিচালক

আবহাস এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি

ইদ্রিস টাওয়ার, টংগী কলেজ গেট, টংগী, গাজীপুর।

৩০ আগস্ট ২০১৩

শায়খ আল্লামা আবদুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ ইবন বায র. এর ভূমিকা

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، وعلى آله وأصحابه ومن اهتدى بهداه. أما بعد،

‘আল্লাহ তা‘আলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র: কিছু আদর্শিক নীতিমালা’ শিরোনামে আমাদের সম্মানিত ভাই আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ সালেহ আল উসাইমীন রচিত মূল্যবান গ্রন্থটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি শুনেছি। এ এক অতি মূল্যবান গ্রন্থ। এতে আছে আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণসমূহের ব্যাপারে সালাফদের আকীদার বর্ণনা, আল্লাহ তা‘আলার নাম ও সিফাত বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নীতিমালা এবং খুব উপকারী কিছু আলোচনা। আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক তাঁর মাখলুকের ‘সঙ্গে থাকা’র অর্থ কি লেখক তা ব্যাখ্যা করেছেন, হোক তা সুনির্দিষ্টভাবে সঙ্গে থাকার বিষয় উল্লিখিত হওয়ার ক্ষেত্রে অথবা অনির্দিষ্টভাবে সঙ্গে থাকার বিষয় উল্লিখিত হওয়ার ক্ষেত্রে। তিনি বলেছেন যে এ ‘সঙ্গে থাকা’র যে প্রকৃত অর্থ রয়েছে সে অনুযায়ী তা হক ও সত্য। আর এ ‘সঙ্গে থাকা’ মাখলুকের সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকা বা মিশে থাকাকে দাবি করে না। পবিত্র মহান আল্লাহ তা‘আলা বরং আরশের ওপরে- যেভাবে তিনি নিজ সম্পর্কে সংবাদ দিয়েছেন এবং যেভাবে আল্লাহ সুবহানাহুর জন্য উপযোগী ঠিক সেভাবে- আছেন বরং এ ‘সঙ্গে থাকা’র অর্থ হলো, বান্দা সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার সম্যক জ্ঞান ও অবগতি এবং সর্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণ। তাদের কথাবার্তা ও নাড়াচাড়া শোনা। তাদের অন্তর্গত ও বহির্গত অবস্থা দেখা। তাঁর রাসূলগণ ও মুমিনদের হিফাজত করা ও সুরক্ষা দেওয়া। তাদের সাহায্য করা ও তাওফিক দেওয়া ইত্যাদি।

এ গ্রন্থে আরো আছে বাতিলপন্থীদের আকীদা বিশ্বাসের খণ্ডন ও প্রতিবাদী বিশ্লেষণ। আল্লাহ তাকে জাযায়ে খায়ের দান করুন, তার ছাওয়াব বাড়িয়ে দিন, আমাদেরকে ও তাকে আরো অধিক জ্ঞান, হিদায়েত ও তাওফিক দান করুন। পাঠকসহ সকল মুসলিমকে এ গ্রন্থ থেকে উপকার লাভের তাওফিক দান করুন। নিশ্চয় তিনি দো‘আ কবুলের মালিক এবং প্রার্থনা মঞ্জুর করে নেয়ার ব্যাপারে অতি ক্ষমতাবান।

অনুলিপি করিয়েছেন আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষী আবদুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ ইবন বায- আল্লাহ তাকে মাগফিরাত দানে ভূষিত করুন। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণের প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।

আবদুল আযীয ইবন আবদুল্লাহ ইবন বায

মহাপরিচালক

ইলমী গবেষণা, ইফতা, দাওয়াত ও ইরশাদ বিষয়ক অফিসমূহ

৫/১১/১৪০৪ হি.

সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য। আমরা তাঁর প্রশংসা করি। তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। তাঁর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি। আমাদের নিজ নাফসের খারাবি এবং কর্মসমূহের মধ্যে যা অসাধু তা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। যাকে আল্লাহ হিদায়েত দান করেন তাকে গোমরাহকারী কেউ নেই, আর যাকে তিনি গোমরাহ করেন তাকে হিদায়েতকারী কেউ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনি একক। তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রতি, তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি, তাঁর সাহাবীগণের প্রতি এবং যারা সততার সাথে তাঁদের অনুসরণ করেছেন তাদের প্রতি সালাত বর্ষণ করুন এবং উত্তম শান্তিতে ভূষিত করুন।

এরপর কথা হলো, আল্লাহর নাম ও গুণাবলির প্রতি ঈমান আনা ঈমানের স্তম্ভসমূহের মধ্যে একটি। আর সে রুকনগুলো হচ্ছে, মহান আল্লাহর অস্তিত্বের ঈমান[1], তাঁর রুবুবিয়াত তথা প্রভুত্বের উপর ঈমান। তাঁর উলুহিয়াত তথা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করতে হবে সেটার উপর ঈমান এবং আসমা ওয়াস্ সিফাত তথা আল্লাহর যাবতীয় নাম ও গুণাবলীর উপর যথার্থ ঈমান।

নাম ও গুণের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলাকে অদ্বিতীয় মানা তাওহীদের তিন প্রকারের মধ্যে একটি। আর তা হচ্ছে, তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ (প্রভুত্বে একত্ব) তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ (ইবাদতের ক্ষেত্রে একত্ব) তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত (নাম ও গুণের ক্ষেত্রে একত্ব)।

[দ্বীনে ইসলামে আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা]

দ্বীন ইসলামে তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাত তথা নাম ও গুণসমগ্রের ক্ষেত্রে তাওহীদের মর্যাদা অত্যন্ত উঁচু। এর গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকলে তা কোনো ব্যক্তিকেই পরিপূর্ণরূপে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার সুযোগ দেয় না, পক্ষান্তরে এর জ্ঞান থাকলে সে আল্লাহ তা‘আলাকে সুস্পষ্ট জ্ঞানসহ ইবাদত করতে পারবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَلِلَّهِ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ فَٱدۡعُوهُ بِهَاۖ ﴾ [الاعراف: ١٨٠]

“আর আল্লাহর জন্যই রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামের মাধ্যমেই ডাক।” (সূরা আল আরাফ: ১৮০)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলাকে তাঁর নামের মাধ্যমে ডাকার যে কথাটি রয়েছে, এই ডাকা দুই প্রকার। একটি হলো আল্লাহ তা‘আলার কাছে কোনো কিছু চাওয়ার জন্য ডাকা, অপরটি হলো এই নামগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করার উদ্দেশে ডাকা।

চাওয়ার জন্য ডাকা

চাওয়ার জন্য ডাকার অর্থ হলো, আপনি আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাওয়ার পূর্বে এমন নাম চয়ন করবেন যা আপনার প্রার্থিত বিষয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। যেমন আপনি বলবেন, ‘হে ক্ষমাশীল আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, হে দয়াময় আপনি আমার প্রতি দয়া করুন, হে হিফাজতকারী আপনি আমাকে হিফাজত করুন, ইত্যাদি।

ইবাদতের উদ্দেশ্যে ডাকা

ইবাদতের উদ্দেশ্যে ডাকার অর্থ হলো, আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহের যে দাবি রয়েছে সে দাবি অনুযায়ী আপনি আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবেন। অতএব আপনি তাওবা করবেন, কারণ আল্লাহ তা‘আলা হলেন অতি তাওবা কবুলকারী। আপনি জিহ্বা ব্যবহার করে আল্লাহ তা‘আলার যিকির করবেন, কেননা তিনি সর্বশ্রোতা। আপনি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবেন; কারণ তিনি সর্বদ্রষ্টা। আপনি গোপনেও আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করবেন; কারণ তিনি হলেন আল্-লাতীফ আল খাবীর অর্থাৎ অতিসূক্ষ্ণদর্শী ও সকল বিষয়ে সম্যক অবহিত।

[এ গ্রন্থ রচনার মূল কারণ]

নাম ও গুণ বিষয়ক তাওহীদের এ মর্যাদার কারণে আর এ ব্যাপারে মানুষের, কখনো হক আবার কখনো অজ্ঞতা ও একঘেয়েমিবশত বাতিল, কথাবার্তার কারণে আমি এ ব্যাপারে কিছু নীতিমালা লিপিবদ্ধ করার ইচ্ছা পোষণ করেছি। আল্লাহ তা‘আলার কাছে আমার প্রত্যাশা তিনি যেন আমার এ আমলকে একমাত্র তাঁর উদ্দেশেই ঐকান্তিকভাবে পেশ করার তাওফিক দান করেন। আমার এ কাজকে তাঁর সন্তুষ্টির অনুগামী বানান এবং তাঁর বান্দাদের জন্য উপকারী বানান। আমি এ গ্রন্থের নাম দিয়েছি:

القواعد المثلى في صفات الله تعالى وأسمائه الحسنى

(আল্লাহর গুণাবলি ও তাঁর নামসমূহের বিষয়ে চমৎকার নীতিমালা)লেখক

>
[1] আল্লাহর অস্তিত্বের বিষয়টির প্রমাণ অগণিত অসংখ্য। তবে সেটা প্রমাণে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের নিজস্ব কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যা কালাম শাস্ত্রবিদদের ব্যবহৃত নিয়মের সাথে অনেক সময়েই খাপ খায় না। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য খালেদ আবদুল লতিফ মুহাম্মাদ নূর লিখিত মানহাজু আহলিস সুন্নাত ওয়াল-জামা‘আত ওয়া মানহাজুল আশা‘য়েরা এবং আবদুর রহমান সালেহ আলে মাহমূদ রচিত মাওকাফু ইবনু তাইমিয়্যাহ মিনাল আশা‘য়েরা গ্রন্থদ্বয় দেখা যেতে পারে।
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে