পরিচ্ছেদঃ মুসল্লী ব্যক্তির কিছু রুকূ‘ ও সাজদার বিবরণ
১৮৮৪. আব্দুল্লাহ বিন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি কিছু বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে চাই।” জবাবে তিনি বলেন, “বসো।” অতঃপর সাকীফ গোত্রের এক ব্যক্তি এসে বললো, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি কিছু বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে চাই।” জবাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আনসারী সাহাবী তোমার আগে প্রশ্ন করেছে।” তখন আনসারী ব্যক্তি বলেন, “নিশ্চয়ই সে প্রবাসী ব্যক্তি। আর প্রবাসী ব্যক্তির অধিকার রয়েছে (আগে উত্তর পাওয়ার)। কাজেই আপনি আগে তার প্রশ্নেরই উত্তর দিন।” অতঃপর তিনি সাকাফী গোত্রের ব্যক্তির প্রতি মনোনিবেশ করলেন এবং তাকে বললেন, “যদি তুমি চাও, তবে তুমি যা জানতে চাও, তার জবাব দিবো (আমাকে বলার আগেই) আর যদি চাও তাহলে তুমি আমাকে প্রশ্ন করো, তারপর আমি তোমাকে উত্তর দিবো।” তখন সেই ব্যক্তি বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি বরং আমাকে সেই বিষয় জানিয়ে দিন, আমি আপনাকে যে বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই!” জবাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তুমি আমার কাছে এসেছো রুকূ‘, সাজদা, সালাত ও সিয়াম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য।” তখন সেই ব্যক্তি বলেন, “ঐ সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, না, আমার মনে যা রয়েছে, তাতে আপনি কোন ভুল করেননি!”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যখন তুমি রুকূ‘ করবে, তখন তুমি তোমার হাতের তালূ তোমার দুই হাঁটুর উপর রাখবে। তারপর তুমি তোমার আঙ্গুলগুলোর মাঝে ফাঁকা রাখবে। তারপর দেরি করবে, যাতে প্রত্যেকটি অঙ্গ স্বস্থানে ফিরে যায়। আর যখন তুমি সাজদা করবে, তখন তুমি তোমার কপাল মাটিতে স্থান দিবে; ঠোকর দিবে না। তুমি দিবসের প্রথম ও শেষ ভাগে সালাত আদায় করবে।” সেই ব্যক্তি বললেন, “হে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যদি আমি এর মাঝে সালাত আদায় করি?”
জবাবে তিনি বলেন, “তাহলে তো তুমি পুরো দস্তুর মুসল্লী। আর প্রত্যেক মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে সিয়াম রাখবে।” তখন সাকাফী ব্যক্তি দাঁড়িয়ে চলে গেলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনসারী ব্যক্তির প্রতি মনোনিবেশ করে বললেন, যদি তুমি চাও, তবে তুমি যা জানতে চাও, তার জবাব দিবো (আমাকে বলার আগেই) আর যদি চাও তাহলে তুমি আমাকে প্রশ্ন করো, তারপর আমি তোমাকে উত্তর দিবো।” আনসারী ব্যক্তি বললেন, “না, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি বরং আমাকে সেই বিষয় জানিয়ে দিন, আমি আপনাকে যে বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই!” জবাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তুমি আমার কাছে এসেছো এটা জিজ্ঞেস করার জন্য যে, হজ্জ পালনকারী ব্যক্তির জন্য কী প্রতিদান রয়েছে, যখন তিনি হজ্জ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হন, তার জন্য কী প্রতিদান রয়েছে, যখন তিনি আরাফায় দন্ডায়মান হন, তার জন্য কী প্রতিদান রয়েছে, যখন তিনি জামরায় পাথর নিক্ষেপ করেন, তার জন্য কী প্রতিদান রয়েছে, যখন তিনি মাথা মুন্ডন করেন, তার জন্য কী প্রতিদান রয়েছে, যখন তিনি বাইতুল্লায় বিদায়ী তাওয়াফ করেন?”
“তখন সেই ব্যক্তি বলেন, “হে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ঐ সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, না, আমার মনে যা রয়েছে, তাতে আপনি কোন ভুল করেননি!” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই হজ্জ আদায়ে ইচ্ছুক ব্যক্তি যখন বাড়ি থেকে বের হন, তখন তার বাহন একটি পদক্ষেপ ফেললে, এর বদৌলতে তার জন্য একটি সাওয়াব লিখে দেওয়া হয় অথবা এজন্য তার একটি গোনাহ মোচন করা হয়, অতঃপর যখন সে আরাফার মাঝে দন্ডায়মান হয়, তখন মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন অতঃপর বলেন, “এলোমেলো কেশবিশিষ্ট ধুলোমলিন আমার বান্দাদের প্রতি লক্ষ্য করো, তোমরা সাক্ষ্যি থাকো, আমি তাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দিলাম, তাদের পাপ আসমানের বৃষ্টির পানির ফোঁটা ও স্তুপের বালিকণার সমান হয়। যখন সে জামরায় পাথর নিক্ষেপ করে, তখন কেউ জানে না যে, তার জন্য কী পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, এমনকি কিয়ামতের দিন তাকে এর পরিপূর্ণ সাওয়াব প্রদান করা হবে। যখন সে মাথা মুন্ডন করে, তখন তার মাথা থেকে একটি চুল পড়ে গেলে, এর বদৌলতে কিয়ামতের দিন তার জন্য একটি নূর হবে। আর যখন সে বাইতুল্লায় বিদায়ী তাওয়াফ করে, তখন ঐ দিনের মতো (নিষ্পাপ) হয়ে যায়, যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।”[1]
ذِكْرُ وَصْفِ بَعْضِ السُّجُودِ وَالرُّكُوعِ لِلْمُصَلِّي فِي صلاته
1884 - أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُصْعَبٍ السِّنْجِيُّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُمَرَ بْنِ الْهَيَّاجِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَرْحَبِيُّ حَدَّثَنِي عُبَيْدَةُ بن الأسود عن الْقَاسِمُ بْنُ الْوَلِيدِ عَنْ سِنَانِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ مُصَرِّفٍ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يا رسول اللَّهِ كَلِمَاتٌ أَسْأَلُ عَنْهُنَّ قَالَ (اجْلِسْ) وَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ ثَقِيفٍ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَلِمَاتٌ أَسْأَلُ عَنْهُنَّ فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
(سَبَقَكَ الْأَنْصَارِيُّ) فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ: إِنَّهُ رَجُلٌ غَرِيبٌ وَإِنَّ لِلْغَرِيبِ حَقًّا فَابْدَأْ بِهِ فَأَقْبَلَ عَلَى الثَّقَفِيِّ فَقَالَ: (إِنْ شِئْتَ أَجَبْتُكَ عَمَّا كُنْتَ تَسْأَلُ وَإِنْ شِئْتَ سَأَلْتَنِي وأُخبرك) فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ بَلْ أَجِبْنِي عَمَّا كُنْتُ أَسْأَلُكَ قَالَ: (جِئْتَ تَسْأَلُنِي عَنِ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ وَالصَّلَاةِ وَالصَّوْمِ) فَقَالَ: لَا وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَخْطَأْتَ مِمَّا كَانَ فِي نَفْسِي شَيْئًا قال:
(فإذا ركعت فضع راحتيك على ركبتين ثُمَّ فَرِّجْ بَيْنَ أَصَابِعِكَ ثُمَّ أَمْكُثْ حَتَّى يَأْخُذَ كُلُّ عُضْوٍ مَأْخَذَهُ وَإِذَا سَجَدْتَ فَمَكِّنْ جَبْهَتَكَ وَلَا تَنْقُرُ نَقْرًا وصَلِّ أَوَّلَ النَّهَارِ وآخره) فقال: يا نبي الله فإن صَلَّيْتُ بَيْنَهُمَا؟ قَالَ: (فَأَنْتَ إِذًا مُصَلِّي وصُمْ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَ عَشْرَةَ وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ وَخَمْسَ عَشْرَةَ) فَقَامَ الثَّقَفِيُّ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى الْأَنْصَارِيِّ فَقَالَ: (إِنْ شِئْتَ أَخْبَرْتُكَ عَمَّا جِئْتَ تَسْأَلُ وَإِنْ شِئْتَ سَأَلْتَنِي فأُخبرك) فَقَالَ: لَا يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَخْبَرَنِي عَمَّا جِئْتُ أَسْأَلُكَ قَالَ: (جِئْتَ تَسْأَلُنِي عَنِ الحاجِّ مَا لَهُ حِينَ يَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهِ وَمَا لَهُ حِينَ يَقُومُ بِعَرَفَاتٍ وَمَا لَهُ حِينَ يَرْمِي الْجِمَارَ وَمَا لَهُ حِينَ يَحْلِقُ رَأْسَهُ وَمَا لَهُ حِينَ يَقْضِي آخِرَ طَوَافٍ بِالْبَيْتِ) فَقَالَ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَخْطَأْتَ مِمَّا كَانَ فِي نَفْسِي شَيْئًا قَالَ:
(فَإِنَّ لَهُ حِينَ يَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهِ أَنَّ رَاحِلَتَهُ لَا تَخْطُو خُطْوَةً إِلَّا كُتِبَ لَهُ بِهَا حَسَنَةٌ أَوْ حُطَّت عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ فَإِذَا وَقَفَ بِعَرَفَةَ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَنْزِلُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ: انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي شُعثاً غُبراً اشْهَدُوا أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ ذُنُوبَهُمْ وَإِنْ كَانَ عَدَدَ قَطْرِ السَّمَاءِ وَرَمْلِ عالجٍ وَإِذَا رَمَى الْجِمَارَ لَا يَدْرِي أَحَدٌ مَا لَهُ حَتَّى يُوَفَّاهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَإِذَا حَلَقَ رَأْسَهُ فَلَهُ بِكُلِّ شَعْرَةٍ سَقَطَتْ مِنْ رَأْسِهِ نُورٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَإِذَا قَضَى آخِرَ طَوَافِهِ بِالْبَيْتِ خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أمه)
الراوي : أَنَس بْن مَالِكٍ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 1884 | خلاصة حكم المحدث : حسن لغيره ـ ((التعليق الرغيب)) (2/ 129 ـ 130).
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ যঈফ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে হাসান লিগাইরিহী বলেছেন। (আত তা‘লীকুর রাগীব: ২/১২৯-১৩০)