৬২৪৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২৪৪-[৪৯] ’আবদুর রহমান ইবনু আবূ ’আমীরাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। [নবী (সা.)] মু’আবিয়াহ্ -এর জন্য এভাবে দু’আ করেছেন- ’হে আল্লাহ! তুমি তাকে সঠিক পথপ্রদর্শনকারী, সত্য পথের অনুসারী কর এবং তার কর্তৃক মানুষদেরকে হিদায়াত কর।’ (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمِيرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ لِمُعَاوِيَةَ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا وَاهْدِ بِهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (3842 وقال : حسن غریب) ۔
(صَحِيح)

وعن عبد الرحمن بن ابي عميرة عن النبي صلى الله عليه وسلم انه قال لمعاوية: «اللهم اجعله هاديا مهديا واهد به» . رواه الترمذي اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (3842 وقال : حسن غریب) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যাঃ (عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ لِمُعَاوِيَةَ) এখানে সাধারণভাবে স্পষ্ট মনে উদয় হয় যে, তিনি হলেন মু'আবিয়াহ্ ইবনু আবূ সুফইয়ান। এছাড়া মু'আবিয়াহ্ ইবনুল হাকাম, মু'আবিয়াহ্ ইবনু জাহিমাহ্ ও অন্যতম সাহাবী (রাঃ) ছিলেন। যেমনটি সম্মানিত লেখক তার রিজালশাস্ত্রে উল্লেখ করেন।
(اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ هَادِيًا) অর্থাৎ মানুষের পথপ্রদর্শক অথবা কল্যাণের পথনির্দেশক।
(وَاهْدِ بِهِ) অর্থাৎ মু'আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর মাধ্যমে মানুষকে হিদায়াত দান করুন। এতে (الْهِدَايَةِ) শব্দটি যে (مُتَعَدَّي) সে অর্থের তাগিদ রয়েছে। জেনে রাখ! (الْهِدَايَةِ) শব্দটি শুধু পথপ্রদর্শন অর্থে অথবা এমন নির্দেশনা অর্থে ব্যবহার হয় যা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছিয়ে দেয়।
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেন, (فَهَدَيْنَاهُمْ) অর্থ –( دَلَلْنَاهُمْ عَلَى الْخَيْرِ وَالشَّرِّ) অর্থাৎ কল্যাণ এবং অকল্যাণের পথ দেখালাম। যেমন- আল্লাহ তা'আলার বাণী: (وَ هَدَیۡنٰهُ النَّجۡدَیۡنِ) “আর আমি তাকে (পাপ ও পুণ্যের) দুটো পথ দেখিয়েছি”- (সূরা আল বালাদ ৯০: ১০)।
আর (الْهَدْي) (পথপ্রদর্শন) অর্থে ব্যবহার হয় তা (إِرْشَادِ) (সৌভাগ্যবান করা) অর্থে ব্যবহার হয়েছে। সে অর্থে মহান আল্লাহর বাণী: (اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ هَدَی اللّٰهُ فَبِهُدٰىهُمُ اقۡتَدِهۡ) “ওরা হলো তারা যাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত দান করেছিলেন, তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর...”- (সূরাহ্ আল আ'আম ৬: ৯০)।
আরো কেউ বলেন, (الْهِدَايَةِ) শব্দের আভিধানিক অর্থ (الدَّلَالَةُ) (পথ প্রদর্শন)। যখন কাউকে পথ দেখানো হয় তখন বলা হয় (هَدَاهُ فِي الدِّينِ يَهْدِ يهِ هِدَايَةً) الْإرْشَادِ এর আসল অর্থে ব্যবহারের জন্য (الْهَدْي) -কে উল্লেখ করা হয়। সে কারণ হ্যাঁ-বোধক ও না-বোধক উভয় জায়িয। আল্লাহ তা'আলা বলেন, (اِنَّکَ لَا تَهۡدِیۡ مَنۡ اَحۡبَبۡتَ) “তুমি যাকে ভালোবাস তাকে সৎপথ দেখাতে পারবে না...”- (সূরাহ আল কাসাস ২৮: ৫৬)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, (وَ اِنَّکَ لَتَهۡدِیۡۤ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ)“...তুমি নিশ্চিতই (মানুষদেরকে) সঠিক পথের দিকে নির্দেশ করছ”- (সূরা আশ শূরা- ৪২: ৫২)।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যদি রাসূল (সা.) -এর বাণী: (هَادِيًا)-কে প্রথম অর্থে ধরা হয়, তাহলে (مَهْدِيَّا) তার পূর্ণাঙ্গতা হিসেবে ধরতে হবে। কারণ তিনি পথপ্রদর্শক হতে পারেন, কিন্তু সুপথপ্রাপ্ত করতে পারেন না। আর (وَاهْدِ بِهِ)-কে তার পূর্ণতা হিসেবে গণ্য হবে। যেহেতু যার পথপ্রদর্শনে সফলতা পাওয়া যায় তাকে প্রত্যেকে অনুসরণ করে পূর্ণাঙ্গতাকে সুসম্পন্ন করে। তবে যখন দ্বিতীয় অর্থে ধরা হয়, তখন (مَهْدِيَّا) -কে তাগিদ হিসেবে ধরা হবে। আর (اهْدِبِهِ) হবে তার পরিপূর্ণতাস্বরূপ, অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গতায় পরিপূর্ণ। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, রাসূল (সা.) -এর দু'আ কবুলযোগ্য। অবস্থা যখন এই তখন তার ব্যাপারে কিভাবে সন্দেহ পোষণ করা যায়? আর যে ব্যক্তি (الْهِدَايَةِ) -এর আরো অর্থ বের করতে চাইবে তার জন্য অদৃশ্য খুলে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেখানে তার জন্য যথেষ্ট কিছু রয়েছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)