পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৮৩-[৪৯] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি কাবা ঘরের দরজা ধরে বললেন, আমি নবী (সা.) - কে বলতে শুনেছি, সাবধান! আমার আহলে বায়ত হলো তোমাদের জন্য নূহ (আঃ)-এর নৌকার মতো। যে তাতে আরোহণ করবে, সে পরিত্রাণ পাবে। আর যে তা হতে পশ্চাতে থাকবে, সে ধ্বংস হবে। (আহমাদ)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابِ مَنَاقِبِ أَهْلِ)
وَعَن أبي ذرٍ أَنَّهُ قَالَ وَهُوَ آخِذٌ بِبَابِ الْكَعْبَةِ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «أَلَا إِنَّ مِثْلَ أَهْلِ بَيْتِي فِيكُمْ مِثْلُ سَفِينَةِ نُوحٍ مَنْ رَكِبَهَا نَجَا وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا هلك» . رَوَاهُ أَحْمد
اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد فی فضائل الصحابۃ (2 / 785 ح 1402 ، زیادات القطیعی ، لیس فیہ احمد ولا ابنہ) [و الحاکم (3 / 150 ، 2 / 343)] * فیہ المفضل بن صالح النخاس الاسدی : ضعیف ، وابوہ اسحاق السبیعی مدلس و عنعن و للحدیث شواھد ضعیفۃ ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীসে (وَهُوَ آخِذٌ بِبَابِ الْكَعْبَةِ) অর্থাৎ তিনি কাবা ঘরের দরজা ধরে বললেন। এ অংশটি যুক্ত করা হয়েছে হাদীসের বিষয়বস্তুকে শক্তিশালী করার জন্য। আর আবূ যার (রাঃ) এ কাজটি করেছেন যেন মানুষেরা তার কথায় গুরুত্ব দেয় এবং তা মনে প্রাণে গ্রহণ করে।
(مَنْ رَكِبَهَا نَجَا وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا هلك) অর্থাৎ যে ব্যক্তি তাতে আরোহণ করবে সে মুক্তি পাবে আর যে তা থেকে পিছনে থেকে যাবে সেই ধ্বংস হবে।
এ কথার মাধ্যমে উপমা দিয়ে বুঝানো হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসবে এবং তাদের অনুসরণ করবে সেই দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তি পাবে। পক্ষান্তরে যে তা করবে না সেই দুনিয়া ও আখিরাতে ধ্বংস হবে।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এক বর্ণনায় আবূ যার বলেন, যে আমাকে চিনার সে তো চিনেছে আর যে চেনার সে চিনে রাখুক যে, আমি আবূ যার। আমি নবী (সা.) -কে বলতে শুনেছি, তোমরা শুনে রাখ নিশ্চয়, তোমাদের মাঝে আমার পরিবারের উদাহরণ হলো নূহ (আঃ)-এর কিশতির ন্যায়। এখানেও আবূ যার (রাঃ) তার এ কথার মাধ্যমে হাদীসের সত্যতা ও বিশ্বস্ততার প্রতি তাগিদ করেছেন।
দুনিয়ার কুফরী দ্রষ্টতা বিদ্আত মূখতা এবং বক্র প্রবৃত্তির অনুসরণের দৃষ্টান্ত হলো এমন উত্তাল সাগরের ন্যায় যার মাঝে বিশাল বিশাল ঢেউ একটি আরেকটির উপর আছড়ে পরছে। তার উপরে রয়েছে, বিশাল কালো অন্ধকার মেঘমালা তা যেন একেবারে পুরা পৃথিবীকে ছেয়ে ফেলেছে। সেই উত্তাল সাগরের মাঝ থেকে বাঁচার কোন পথ নেই, শুধুমাত্র একটি কিশতি ছাড়া আর কিছু নেই, কীশতিটিই হলো রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর পরিবার তথা আহলে বায়তের ভালোবাসা।
ইমাম ফাখরুদ্দীন রাযী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর তাফসীরের মধ্যে কতই না উত্তম কথা বলেছেন যে, আমরা আল্লাহর রহমতে আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের অনুসারী। আমরা আহলে বায়তদের ভালোবাসার কিশতিতে আরোহণ করেছি এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাহাবীদের নির্দেশিত পথে চলছি। তাই আমরা কিয়ামতের বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে এবং জাহান্নামের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির আশা করছি। সাথে সাথে আমরা এমন সঠিক পথের কামনা করছি যে, পথে চললে জান্নাতের স্থায়ী নি'আমাত অবধারিত।
মিরক্বাতুল মাফাতীহ প্রণেতা কিশতির ব্যাখ্যা সম্পর্কে আরো বলেন, সেই কিশতিতে যে সকল দল আরোহণ করেনি তাদের মধ্যে অন্যতম হলো খাওয়ারিজ এবং রাফিযীগণ। তারা প্রথমবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এমন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে যে, সেখান থেকে আর বের হয়ে আসতে পারছে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)