৬০৩৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৩৫-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মাঝে কিছু লোক মুহাদ্দাস ছিল। এমন কেউ আমার উম্মতের মধ্যে যদি থাকে, তবে সে ’উমারই হবে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب مَنَاقِب عمر)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ كَانَ فِيمَا قَبْلَكُمْ مِنَ الْأُمَمِ مُحَدَّثُونَ فَإِنْ يَكُ فِي أمّتي أحدٌ فإِنَّه عمر» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3689) و مسلم (23 / 2398)، (6204) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

عن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لقد كان فيما قبلكم من الامم محدثون فان يك في امتي احد فانه عمر» . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3689) و مسلم (23 / 2398)، (6204) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (مُحَدَّثُونَ) ‘আলিমগণ উক্ত শব্দের ব্যাখ্যা নিয়ে ইখতিলাফ করেছেন:
১. অধিকাংশ ‘আলিম বলেন, এমন ব্যক্তি যাকে ইলহাম করা হয়।
২. কেউ কেউ বলেন, এমন ব্যক্তি যে ভালো ও সৎ ধারণা করে থাকে।
৩. আবূ আহমাদ আল আসকারী দৃঢ়তার সাথে বলেন, এমন ব্যক্তি যার অন্তরে উচ্চপদস্থ মালায়িকার (ফেরেশতাদের) হতে কোন কিছু জাগিয়ে দেয়া হয় আর সেটা এমন হয়ে যায় যেন অন্য কেউ বলেছে।
৪. বলা হয়ে থাকে, যে ব্যক্তির কথায় উদ্দেশ্য ছাড়াই সত্য বের হয়ে আসে।
৫. কেউ কেউ বলেন, নুবুওয়্যাত ছাড়া মালাক (ফেরেশতা) যার সাথে কথা বলে।
উক্ত উক্তির সমর্থনে আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে মারফু সূত্রে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা.) -কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে সে কথা বলে থাকে? উত্তরে তিনি বললেন, মালাক তার ভাষায় কথা বলে।
৬. ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর হাদীসে রয়েছে, (محدث) হলো যাকে সঠিক ইলহাম করা হয় আর যেটা সে মুখ দিয়ে প্রকাশ করে থাকে। (ফাতহুল বারী হা. ৩৬৮৯)
(১) (وَإِنْ يَكُ فِىْ أُمَّتِيْ) উক্ত উক্তিটি সন্দেহ পোষণের উদ্দেশে বর্ণিত হয়নি। কেননা তার উম্মত হলো সকল উম্মতের মাঝে শ্রেষ্ঠ। অতএব যখন অন্যান্য উম্মতের মাঝে মুহাদ্দিসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে তখন তাঁর উম্মতের মাঝে পাওয়া যাওয়া বেশি যুক্তিসঙ্গত।
(২) কেউ কেউ বলেছেন, আলোচ্য অংশটুকু দৃঢ়তা বুঝানোর জন্য বর্ণিত হয়েছে। যেমন উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়, আমার যদি কোন বন্ধু থেকে থাকে তাহলে অমুক আমার বন্ধু। এ বাক্য দ্বারা সে তার বন্ধুগণের সম্পর্ক দূর করতে চেয়েছে, যাতে কোন কোন সন্দেহ নেই। কারণ বানী ইসরাঈলের মাঝে এরূপ লোকের অস্তিত্ব থাকা যুক্তিসঙ্গত ছিল। কেননা যখন তাদের মাঝে কোন নবী থাকতেন না তখন তারা এ সকল লোকের দিকে মুখাপেক্ষি হতেন। কিন্তু এই উম্মত এ সকল লোকের প্রতি মুখাপেক্ষী নয়। কুরআনের উপস্থিতি ও নতুন নবীর আগমনের সম্ভবনা না থাকায়।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মুহাদ্দাস হলো যাকে পরিপূর্ণ ইলহাম করা হয় এবং সততার ক্ষেত্রে নবী-এর স্তরে পৌঁছে যায়। এর অর্থ হলো, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের মাঝে কিছু নবী ছিলেন যাদের প্রতি ইলহাম করা হত। যদি আমার উম্মতের মাঝে এরূপ কেউ হয়ে থাকে তাহলে তিনি হলেন উমার (রাঃ)। হাদীসের উদ্দেশ্য হলো ‘উমার (রাঃ) -এর মর্যাদা বর্ণনা করা। (ফাতহুল বারী হা. ৩৬৮৯, মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৩৯৮)

(فإِنَّه عمر) ইমাম তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মুহাদ্দাস হলো যাদের কথা বার্তায় প্রকাশ পায় তিনি হলেন এমন ব্যক্তি যিনি সত্য চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে যার অন্তরে কোন কিছু জাগিয়ে দেয়া হয় মর্যাদা সম্পন্ন মালায়িকার (ফেরেশতাগণের) পক্ষ হতে আর সেটা এমন হয়ে যায় যেমন কোন ব্যক্তি কথা বলে থাকে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)