৬০০৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহাবায়ি কিরাম (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০০৮-[২] আবূ বুরদাহ্ (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন নবী (সা.) , আকাশের দিকে মাথা তুলে তাকালেন। বস্তুত তিনি (সা.) প্রায় আসমানের দিকে মাথা তুলে দেখতেন। অতঃপর বললেন, তারকারাজি আকাশের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। যেদিন এ সমস্ত গ্রহগুলো চলে যাবে, সেদিন আকাশের তাই ঘটবে, যার প্রতিশ্রুতি পূর্বেই দেয়া হয়েছে (অর্থাৎ ধ্বংস হয়ে যাবে)। আর আমি হলাম আমার সাহাবীদের ওপর নিরাপত্তাস্বরূপ। অতএব আমি যখন চলে যাব, তখন আমার সাহাবীদের মধ্যে তাই সংঘটিত হবে, যার প্রতিশ্রুতি আগেই দেয়া হয়েছে। আর আমার সাহাবীগণ হলেন আমার উম্মতের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। যখন আমার সাহাবীগণ চলে যাবেন, তখন আমার উম্মতের ওপর তাই নেমে আসবে, আগেই যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে (শারী’আহ্ পরিপন্থী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে)। (মুসলিম)।

الفصل الاول (بَاب مَنَاقِب الصَّحَابَة)

وَعَن أبي بردة عَن أَبيه قَالَ: رَفَعَ - يَعْنِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم - رَأسه إِلَى السَّمَاء وَكَانَ كثيرا مَا يَرْفَعُ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ. فَقَالَ: «النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ فَإِذَا ذَهَبَتِ النُّجُومَ أَتَى السَّمَاءَ مَا توعَدُ وَأَنا أَمَنةٌ لِأَصْحَابِي فَإِذَا ذَهَبْتُ أَنَا أَتَى أَصْحَابِي مَا يُوعَدُونَ وَأَصْحَابِي أَمَنَةٌ لِأُمَّتِي فَإِذَا ذَهَبَ أَصْحَابِي أَتَى أُمتي مَا يُوعَدُون» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (207 / 2531)، (6466) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي بردة عن ابيه قال: رفع - يعني النبي صلى الله عليه وسلم - راسه الى السماء وكان كثيرا ما يرفع راسه الى السماء. فقال: «النجوم امنة للسماء فاذا ذهبت النجوم اتى السماء ما توعد وانا امنة لاصحابي فاذا ذهبت انا اتى اصحابي ما يوعدون واصحابي امنة لامتي فاذا ذهب اصحابي اتى امتي ما يوعدون» . رواه مسلم رواہ مسلم (207 / 2531)، (6466) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ) এখানে (أَمَنَةٌ)-এর ব্যাখ্যায় কেউ কেউ বলেছেন, (أَمَنٌ وَمَرْحَمَةٌ) অর্থাৎ নিরাপত্তা ও অনুগ্রহ। আবার কেউ বলেছেন, হিফাযতকারী।
(أَتَى السَّمَاءَ مَا توعَدُ) অর্থাৎ, আসমানের অঙ্গীকার হলো কিয়ামতের দিন তা বিদীর্ণ হবে এবং গুটিয়ে যাবে।
(ذَهَبَتِ النُّجُومَ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তারকারাজি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া।
(وَأَنا أَمَنةٌ لِأَصْحَابِي) আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (أَمَنةٌ) শব্দটিকে যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে সম্পৃক্ত করা হবে তখন তার দুই রকম অর্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। একটি হলো, অত্যধিক পরিমাণ অর্থে ব্যবহৃত হয় যেমন বলা হয়ে থাকে (رَجُلٌ عَدْلٌ) অর্থাৎ অধিক ন্যায়পরায়ণ লোক। আর অপরটি হলো বহুবচন অর্থে যেমন আল্লাহ বলেন, (شِهَابًا رَصَدً) অর্থাৎ (رَاصدٍينَ)। অনুরূপ আল্লাহ বলেন, (إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قًانِتًا) এখানে (أُمَّةً) বহুবচনের অর্থে এসেছে। অতএব রাসূল (সা.) তার সাহাবীর জন্য নিরাপত্তার দিক থেকে একটি জামা'আতের মতো।
(أَتَى أَصْحَابِي مَا يُوعَدُونَ) অর্থাৎ বিভিন্ন ফিতনাহ, মতানৈক্য দ্বন্দ্ব, সংঘাত, হত্যা ইত্যাদির সাথে সাহাবীগণ জড়িয়ে যাবে।
(أَتَى أُمتي مَا يُوعَدُون) এর অর্থ হলো সৎ লোকগুলো মারা যাবে। তাদের স্থানে অযোগ্য এবং অসৎ লোক আসবে দীনের মাঝে বিদ্আত, কুসংস্কার আর অপসংস্কৃতি সয়লাব করবে, চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। শয়তানের শিং উদিত হবে, রোমবাসীর উত্থান হবে, মক্কাহ মদীনাহ সহ পবিত্র স্থানগুলোর মর্যাদাহানী হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ, শারহুন নাবাবী ১৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)