৫৫৮০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৫৮০-[১৫] উক্ত রাবী [আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে এবং জাহান্নামীগণ জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যার হৃদয়ে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান আছে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করে আন। তাদেরকে এমন অবস্থায় বের করা হবে যে, তারা পুড়ে কালো কয়লায় পরিণত হয়ে গেছে। অতঃপর তাদেরকে ’হায়াত’ নামক নহরে ফেলে দেয়া হবে। তাতে তারা স্রোতের ধারে যেন ঘাসের বীজ উদ্গত হয় তেমনি স্বচ্ছ-সুন্দর হয়ে উঠবে। তোমরা কি দেখনি, উক্ত গাছগুলো হলুদ রং জড়িত অবস্থায় অংকুরিত হয়? (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ وَأَهْلُ النَّارِ النَّارَ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجُوهُ فَيَخْرُجُونَ قَدِ امْتَحَشُوا وَعَادُوا حُمَمًا فَيُلْقَوْنَ فِي نَهْرِ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ أَلَمْ تَرَوْا أَنَّهَا تَخْرُجُ صَفْرَاءَ مُلْتَوِيَةً . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (6560) و مسلم (204 / 184)، (457) ۔
(متفّق عَلَيْهِ)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا دخل اهل الجنة الجنة واهل النار النار يقول الله تعالى: من كان في قلبه مثقال حبة من خردل من ايمان فاخرجوه فيخرجون قد امتحشوا وعادوا حمما فيلقون في نهر الحياة فينبتون كما تنبت الحبة في حميل السيل الم تروا انها تخرج صفراء ملتوية . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (6560) و مسلم (204 / 184)، (457) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: জান্নাতীরা জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশের পর আল্লাহ বলবেন, যাদের অন্তরে সরিষা দানা পরিমাণ ঈমান আছে তাদের বের কর। এ নির্দেশ নবী রাসূল, ফেরেশতা এবং অন্যান্য যারা শাফা'আতের অধিকার লাভ করবেন তাদের প্রতি করা হবে। সামনে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনায় এর বিস্তারিত বিবরণ আসছে। বলা হয় এ হাদীস থেকে প্রকাশ পায় যে, দয়াময় রহমান যাদের মুষ্ঠিতে ভরে জাহান্নাম থেকে বের করবেন তারা মু'মিন কিন্তু সম্পূর্ণ আ'মলবিহীন। উম্মাতের সর্ববাদী সম্মত মতে তারা কাফির ছিল না, যেটা অনেকেই মনে করে থাকেন। তাদের এমন অবস্থায় বের করা হবে যে তারা পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর বাণী: (قَدِ امْتَحَشُوا) তারা পুড়ে কয়লায় পরিণত হয়ে গেছে। এটাকে কর্তৃবাচ্য অথবা কর্ম বাচ্য উভয়ই ধরা হয়ে থাকে। এটা চামড়া এবং হাড়ের উপরিভাগ পুড়ে ফেলানোর অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘আল কামূস’ নামক বিশ্ববিখ্যাত অভিধান গ্রন্থে (إحْتَحَشَ) শব্দটি (إِحْتَرَقَ) পুড়িয়ে ফেলা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ইবনু হাজার আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) (إحْتَحَشَ) শব্দটিকে (إِحْتَرَقَ)-এর ওযনে এবং অর্থে ধরেছেন। কেউ এর ‘তা বর্ণে পেশ এবং ‘হা বর্ণে যের দিয়ে পাঠ করে থাকেন। কিন্তু অভিধানে এটাকে স্বকর্মক ক্রিয়া হিসেবে জানা যায় না। ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “তা বর্ণে, ‘হা' বর্ণে এবং ‘শীন বর্ণে যবর দিয়ে পাঠ-ই বিধেয়।
এ পদ্ধতিতেই বিভিন্ন রিওয়ায়াতে বর্ণিত হয়েছে। আল্লামাহ্ খত্ত্বাবী, হারুবী প্রমুখ এভাবেই হরকত দান করেছেন। জাহান্নামে পুড়ে পুড়ে তারা কয়লা হয়ে যাবে জাহান্নাম থেকে উঠিয়ে যখন তাদের হায়াত নদীতে ফেলা হবে তখন তাদের দেহ ড্রেনের দুই পাশের কর্দমাক্ত বা ভিজা পানিতে অঙ্কুরিত শস্য দানার মতো হলুদ, কোমল ও মসৃণ হয়ে যাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১১খণ্ড ৪৮৪ পৃ., হা. ৬৫৬০)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)