৫৫৫৩

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা

৫৫৫৩-[৫] আবূ সাঈদ [আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন নূহ আলাহিস সালাম-কে উপস্থিত করে প্রশ্ন করা হবে, তুমি কি আমার হুকুম-আহকাম মানুষদের কাছে পৌছিয়েছিলে? তিনি বলবেন, হ্যাঁ, পৌছিয়ে ছিলাম হে আমার রব! তখন তার উম্মতগণকে প্রশ্ন করা হবে, তিনি কি তোমাদেরকে (আমার হুকুম-আহকাম) পৌছিয়ে দিয়ে ছিলেন? তারা বলবে, আমাদের কাছে (এ দিন সম্পর্কে) কোন ভয় প্রদর্শনকারী আসেনি। তখন নূহ আলায়হিস সালাম-কে বলা হবে, তোমার সাক্ষী কে আছে? উত্তরে নূহ আলায়হিস সালাম বলবেন, মুহাম্মাদ (সা.)  তাঁর উম্মতগণ! রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদেরকে তখন উপস্থিত করা হবে এবং তোমরা এ সাক্ষ্য দিবে যে, অবশ্যই নূহ আলায়হিস সালাম তাঁর উম্মাতের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) এ আয়াতটি পাঠ করলেন- অর্থাৎ আর আমি তোমাদেরকে এভাবেই একটি মধ্যপন্থী উম্মতরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানব জাতির সাক্ষী হতে পার। আর রাসূল (মুহাম্মাদ) তোমাদের জন্য সাক্ষী হন। (বুখারী)

الفصل الاول (باب الحساب و القصاص و المیزان )

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُجَاءُ بِنُوحٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ لَهُ: هَلْ بَلَّغْتَ؟ فَيَقُولُ: نَعَمْ يَا رَبِّ فَتُسْأَلُ أُمَّتُهُ: هَلْ بَلَّغَكُمْ؟ فَيَقُولُونَ: مَا جَاءَنَا مِنْ نَذِيرٍ. فَيُقَالُ: مَنْ شُهُودُكَ؟ فَيَقُولُ: مُحَمَّدٌ وَأُمَّتُهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فيجاء بكم فتشهدون على أنَّه قد بلَّغَ» ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدا) رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (3339) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يجاء بنوح يوم القيامة فيقال له: هل بلغت؟ فيقول: نعم يا رب فتسال امته: هل بلغكم؟ فيقولون: ما جاءنا من نذير. فيقال: من شهودك؟ فيقول: محمد وامته . فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «فيجاء بكم فتشهدون على انه قد بلغ» ثم قرا رسول الله صلى الله عليه وسلم (وكذلك جعلناكم امة وسطا لتكونوا شهداء على الناس ويكون الرسول عليكم شهيدا) رواه البخاري رواہ البخاری (3339) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: এটা আল্লাহ তা'আলার বাণী, (یَوۡمَ یَجۡمَعُ اللّٰهُ الرُّسُلَ فَیَقُوۡلُ مَا ذَاۤ اُجِبۡتُمۡ ؕ قَالُوۡا لَا عِلۡمَ لَنَا ؕ اِنَّکَ اَنۡتَ عَلَّامُ الۡغُیُوۡبِ) “আল্লাহ যেদিন রাসূলগণকে একত্রিত করবেন, অতঃপর বলবেন, তোমাদেরকে কী জবাব দেয়া হয়েছিল। তারা বলবে, আমরা কিছুই জানি না, তুমিই সকল গোপন তত্ত্ব জান”- (সূরাহ্ আল মায়িদাহ ৫:১০৯); এর বিপরীত নয়। কারণ সাড়া দেয়া এক জিনিস এবং প্রচার করা অন্য জিনিস। তাছাড়া রাসূলগণ এ বিষয়টিকে আল্লাহর ‘ইলমের উপর ছেড়ে দিবেন।

(وَسَطًا) শব্দের অর্থ মধ্যম। কেউ কেউ ন্যায়পরায়ণ ও শ্রেষ্ঠ বলেন, কারণ তারা নাসারাদের মতো বাড়াবাড়ি করেন না। আর ইয়াহুদীদের মতো অবহেলা বা সম্মানকে খাটো চোখে দেখে না, নবীদের ব্যাপারে তাদের অস্বীকার করা হত্যা করা বা শূলে চড়ানোর মতো অতি বাড়াবাড়ি করে না। উপরন্তু (الوَسَطًا) এর ব্যাখ্যা (العدل) ন্যায়পরায়ণতা (هو من وسط قو مه) সে তাদের কওমের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
(عَلَيْكُمْ شَهِيدا) অর্থাৎ তিনি তোমাদের পর্যবেক্ষক এবং তোমাদের ব্যাপারে অবগত। তিনি তোমাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি লক্ষ্য রাখেন এবং কথার প্রশংসা করেন আর তোমাদের জন্য সাক্ষী।
(شَهِيد) শব্দটি (رَقِيبَ) অর্থে ব্যবহার হয়েছে। কারণ ন্যায়পরায়ণতার জন্য পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন। সে কারণে তাদের গোপন ও বাহ্যিক বিষয়সমূহ অবগত হওয়ার জন্য তিনি তাদের অবস্থাসমূহকে সংরক্ষণ করবেন। অতঃপর তাদের প্রশংসা করবেন। আর এজন্যও যে, তারা সমস্ত উম্মতের মধ্যে ন্যায়পরায়ণ। উম্মতে মুহাম্মাদী পূর্বের উম্মতদের সাক্ষ্য হবেন আর তিনি (সা.) তাঁর উম্মাতের সাক্ষ্য হবেন। সমস্ত নবী সবার সাক্ষ্য প্রদান করবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)