৫৪৭২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - কিয়ামতের পূর্বলক্ষণসমূহ এবং দাজ্জালের বর্ণনা

৫৪৭২-[৯] আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে একটি কথা বলব না? সে কথাটি অতীতের কোন নবীই তার সম্প্রদায়কে বলেননি। আর তা হলো, নিশ্চয় সে (দাজ্জাল) হবে কানা। সে জান্নাত ও জাহান্নামের সাদৃশ্য সাথে নিয়ে আসবে। তখন সে যা বলবে জান্নাত, প্রকৃতপক্ষে তা হবে জাহান্নাম। তার সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে সাবধান করছি যেমন নূহ আলাইহিস তাঁর সম্প্রদায়কে তার সম্পর্কে সাবধান করেছিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ الْعَلَامَاتِ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ وَذِكْرِ الدَّجَّالِ)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِلَّا أحدثكُم حَدِيثا عَن الدَّجَّال ماحدث بِهِ نبيٌّ قومَه؟ : إِنَّه أعوَرُ وإِنَّه يَجِيءُ مَعَهُ بِمِثْلِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَالَّتِي يَقُولُ: إِنَّهَا الْجَنَّةُ هِيَ النَّارُ وَإِنِّي أُنْذِرُكُمْ كَمَا أنذر بِهِ نوح قومه . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3338) و مسلم (109 / 2936)، (7372) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: الا احدثكم حديثا عن الدجال ماحدث به نبي قومه؟ : انه اعور وانه يجيء معه بمثل الجنة والنار فالتي يقول: انها الجنة هي النار واني انذركم كما انذر به نوح قومه . متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (3338) و مسلم (109 / 2936)، (7372) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: (إِنَّه أعوَرُ وإِنَّه يَجِيءُ مَعَهُ بِمِثْلِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ) সে তার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম সদৃশ জিনিস নিয়ে মানুষের নিকট আগমন করবে। যা আল্লাহ তা'আলা মু'মিন ব্যক্তির জন্য আসল অবস্থায় রূপান্তর করে দেখাবেন। সে যেটাকে জান্নাত বলবে বস্তুত সেটাই হবে জাহান্নামের আগুন। আর যেটাকে আগুন বলবে সেটা হবে জান্নাত”। হাদীসের ভাষ্যকার বলেন, যে তার জান্নাতে প্রবেশ করবে সে জাহান্নামের অধিবাসী হবে। কেননা সে তাকে বিশ্বাস করেছে। অনুরূপভাবে যে তার আনুগত্য করবে না সে তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবে, মূলত সেই জান্নাতের অধিকারী হবে, কেননা সে তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে।
ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই সমস্ত হাদীস দাজ্জাল অস্তিত্বের সত্যতার জন্য হকপন্থী মতবাদীদের দলীল। সে এমন এক ব্যক্তি, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা তার বান্দাদেরকে পরীক্ষা করবেন। আর আল্লাহ তাআলা তাকে আল্লাহর জন্য নির্ধারিত ক্ষমতাবলীর অধিকারী করবেন। যেমন- মৃত্যুকে জীবিত করা, দুনিয়ার প্রাচুর্যতার ধনভাণ্ডার তার হাতে ন্যাস্ত থাকবে, আকাশকে হুকুম করা মাত্রই বৃষ্টি বর্ষিত হবে এবং তরু তাজাও শস্যে ভরে উঠবে। আর আল্লাহ তা'আলা সকল মানুষকে তাকে হত্যা করতে অপারগ করবেন। শুধুমাত্র ‘ঈসা আলায়হিস সালাম তাকে হত্যা করবেন এবং সঠিক দীন প্রতিষ্ঠা করবেন। তার গঠন অনেক বড় যা জ্ঞানীদের বিবেককে হয়রান করে তুলে। সে এত দ্রুত পুরা দুনিয়া প্রদক্ষিণ করবে যে, তার কৃতকর্মে দুর্বল ঈমানের অধিকারীগণ চিন্তা-ভাবনার সুযোগ না পেয়ে তাকে বিশ্বাস করে ফেলবে। এজন্য সকল নবীই তাদের কওমকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন। আর সঠিক বুঝের অধিকারীগণ তার ধোকায় পতিত হবে না ও তাকে বিশ্বাস করবে না।

(وَإِنِّي أُنْذِرُكُمْ كَمَا أنذر بِهِ نوح قومه) আর আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি যেমনভাবে নূহ আলায়হিস সালাম তার সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছিলেন। যদি প্রশ্ন করা হয় নবী (সা.) উক্ত হাদীসে নূহ আলায়হিস সালাম-কে নির্দিষ্ট করে কেন উল্লেখ করলেন? তাহলে এর উত্তর হলো, যেহেতু নূহ আলায়হিস সালাম প্রসিদ্ধ নবীদের মধ্যে একজন অগ্রগামী নবী যার কথা আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে এভাবে উল্লেখ করেছেন (شَرَعَ لَکُمۡ مِّنَ الدِّیۡنِ مَا وَصّٰی بِهٖ نُوۡحًا) “তিনি তোমাদের জন্য দীনের ক্ষেত্রে সে পথই নির্ধারিত করেছেন যার আদেশ দিয়েছিলেন নুহ আলাইহিস সালাম-কে”- (সূরা আশ শূরা- ৪২: ১৩)।
উক্ত আয়াতে নূহ আলায়হিস সালাম-কে প্রথমে উল্লেখ করার কারণ হলো, তিনি সকল বিজ্ঞ রসূলগণের মধ্যে আগমনের দিক থেকে প্রথম ছিলেন। অন্যথায় মর্যাদার দিক থেকে নবী (সা.) হলেন সর্বাগ্রে। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেন (وَ اِذۡ اَخَذۡنَا مِنَ النَّبِیّٖنَ مِیۡثَاقَهُمۡ وَ مِنۡکَ وَ مِنۡ نُّوۡحٍ وَّ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسَی ابۡنِ مَرۡیَمَ) “আমি পয়গম্বরগণের কাছ থেকে, তোমার কাছ থেকে এবং নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও মারইয়াম তনয় ‘ঈসার কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম”- (সূরা আল আহযাব ৩৩: ৭)। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৪৫৭২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)