৮০৩

পরিচ্ছেদঃ ১৫/৪৩. সাফা এবং মারওয়ায় সাঈ (দৌড়াদৌড়ি) করা হজ্জের রুকন- এটা পালন না করলে হজ্জ বিশুদ্ধ না হওয়ার বর্ণনা।

৮০৩. উরওয়াহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? সাফা ও মারওয়াহ আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। কাজেই যে কেউ কা’বা ঘরে হাজ্জ বা উমরাহ সম্পন্ন করে, এ দু’টির মাঝে যাতায়াত করলে তার কোন দোষ নেই। (আল-বাকারাঃ ১৫৮) (আমার ধারণা যে) সাফা মারওয়ার মাঝে কেউ সাঈ না করলে তার কোন দোষ নেই। তখন তিনি [’আয়িশাহ (রাঃ)] বললেন, ওহে বোনপো! তুমি যা বললে, তা ঠিক নয়। কেননা, যা তুমি তাফসীর করলে, যদি আয়াতের মর্ম তা-ই হতো, তাহলে আয়াতের শব্দ বিন্যাস এভাবে হতো (لاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَتَطَوَّفَ بِهِمَا) দু’টোর মাঝে সাঈ না করায় কোন দোষ নেই।

কিন্তু আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মুশাল্লাল নামক স্থানে স্থাপিত মানাত নামের মূর্তির পূজা করত, তার নামেই তারা ইহরাম বাঁধত। সে মূর্তির নামে যারা ইহরাম বাঁধত তারা সাফা-মারওয়াহ সাঈ করাকে দোষাবহ মনে করত। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! পূর্বে আমরা সাফা ও মারওয়া সাঈ করাকে দোষাবহ মনে করতাম (এখন কী করবো?) এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ) অবতীর্ণ করেন।

’আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, (সাফা ও মারওয়ার মাঝে) উভয় পাহাড়ের মাঝে সাঈ করা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিধান দিয়েছেন। কাজেই কারো পক্ষে এ দু’য়ের সাঈ পরিত্যাগ করা ঠিক নয়। (রাবী বলেন) এ বছর আবু বাকার ইবনু ’আবদুর রহমান (রাঃ)-কে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বললেন, আমি তো এ কথা শুনিনি, তবে ’আয়িশাহ্ (রাঃ) ব্যতীত বহু ’আলিমকে উল্লেখ করতে শুনেছি যে, মানাতের নামে যারা ইহরাম বাঁধত তারা সকলেই সাফা ও মারওয়া সায়ী করত, যখন আল্লাহ কুরআনে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা উল্লেখ করলেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার আলোচনা তাতে হলো না, তখন সাহাবাগণ বলতে লাগলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা সাফা ও মারওয়া সাঈ করতাম, এখন দেখি আল্লাহ কেবল বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা অবতীর্ণ করেছেন, সাফার উল্লেখ করেননি। কাজেই সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ী করলে আমাদের দোষ হবে কি?

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ) আবু বাকর (রাঃ) আরো বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, আয়াতটি দু’ প্ৰকার লোকদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করেই অবতীর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ যারা জাহিলী যুগে সাফা ও মারওয়া সাঈ করা হতে বিরত থাকতেন, আর যারা তৎকালে সায়ী করত বটে, কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর সায়ী করার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের দ্বিধার কারণ ছিল আল্লাহ বাইতুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার কথা উল্লেখ করেননি? অবশেষে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা আলোচনা করার পর আল্লাহ সাফা ও মারওয়া সাঈ করার কথা উল্লেখ করেন।

بيان أن السعى بين الصفا والمروة ركن لا يصح الحج إِلا به

حديث عَائِشَةَ عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ، فَقُلْتُ لَهَا: أَرَأَيْتِ قَوْلَ اللهِ تَعَالَى (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا) فَوَاللهِ مَا عَلَى أَحَدٍ جُنَاحٌ أَنْ لاَ يَطُوفَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ قَالَتْ: بِئْسَ مَا قُلْتَ يَا ابْنَ أُخْتِى، إِنَّ هذِهِ الآيَةَ لَوْ كَانَتْ كَمَا أَوَّلْتَهَا عَلَيْهِ كَانَتْ لاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَتَطَوَّفَ بِهِمَا وَلكِنَّهَا أُنْزِلَتْ فِي الأَنْصَارِ؛ كَانُوا قَبْلَ أَنْ يُسْلِمُوا يُهِلُّونَ لِمَنَاةَ الطَّاغِيَةِ الَّتِي كَانُوا يَعْبُدُونَهَا عِنْدَ الْمُشَلَّلِ، فَكَانَ مَنْ أَهَلَّ يَتَحَرَّجُ أَنْ يَطَّوَّفَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، فَلَمَّا أَسْلَمُوا سَأَلُوا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنْ ذلِكَ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا نَتَحَرَّجُ أَنْ نَطُوفَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ) الآيَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ، وَقَدْ سَنَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الطَّوَافَ بَيْنَهُمَا، فَلَيْسَ َلأحَدٍ أَنْ يَتْرُكَ الطَّوَافَ بَيْنَهُمَا

(قَالَ الزُّهْرِيُّ، رَاوِي الْحَدِيثِ) ثُمَّ أَخْبَرْتُ أَبَا بَكْرِ ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمنِ، فَقَالَ: إِنَّ هذَا لَعِلْمٌ مَا كُنْتُ سَمِعْتُهُ، وَلَقَدْ سَمِعْتُ رِجَالاً مَنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَذْكُرُونَ أَنَّ النَّاسَ، إِلاَّ مَنْ ذَكَرَتْ عَائِشَةُ، مَمَّنْ كَانَ يُهِلُّ بِمَنَاةَ، كَانُوا يَطُوفُونَ كُلُّهُمْ، بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، فَلَمَّا ذَكَرَ اللهُ تَعَالَى الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ، وَلَمْ يَذْكُر الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ فِي الْقُرْآنِ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ كُنَّا نَطُوفُ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، وَإِنَّ اللهَ أَنْزَلَ الطَّوَافَ بِالْبَيتِ فَلَمْ يَذْكُرِ الصَّفَا، فَهَلْ عَلَيْنَا مِنْ حَرَجٍ أَنْ نَطَّوَّفَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى (إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ) الآيَةَ
قَالَ أَبُو بَكْرٍ: فَأَسْمَعُ هذِهِ الآيَةَ نَزَلَتْ فِي الْفَرِيقَيْنِ كِلَيْهِمَا: فِي الَّذِينَ كَانُوا يَتَحَرَّجُونَ أَنْ يَطُوفُوا بِالْجَاهِلَيَّةِ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، وَالَّذِينَ يَطُوفُونَ ثُمَّ تَحَرَّجُوا أَنْ يَطُوفُوا بِهِمَا فِي الإِسْلاَمِ، مِنْ أَجْلِ أَنَّ اللهَ تَعَالَى أَمَرَ بِالطَّوَافِ بِالْبَيْتِ، وَلَمْ يَذْكُرِ الصَّفَا حَتَّى ذَكَرَ ذلِكَ بَعْدَمَا ذَكَرَ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ

حديث عاىشة عن عروة قال سالت عاىشة فقلت لها ارايت قول الله تعالى ان الصفا والمروة من شعاىر الله فمن حج البيت او اعتمر فلا جناح عليه ان يطوف بهما فوالله ما على احد جناح ان لا يطوف بالصفا والمروة قالت بىس ما قلت يا ابن اختى ان هذه الاية لو كانت كما اولتها عليه كانت لا جناح عليه ان لا يتطوف بهما ولكنها انزلت في الانصار كانوا قبل ان يسلموا يهلون لمناة الطاغية التي كانوا يعبدونها عند المشلل فكان من اهل يتحرج ان يطوف بالصفا والمروة فلما اسلموا سالوا رسول الله صلى الله عليه وسلم عن ذلك قالوا يا رسول الله انا كنا نتحرج ان نطوف بين الصفا والمروة فانزل الله تعالى ان الصفا والمروة من شعاىر الله الاية قالت عاىشة وقد سن رسول الله صلى الله عليه وسلم الطواف بينهما فليس لاحد ان يترك الطواف بينهماقال الزهري راوي الحديث ثم اخبرت ابا بكر ابن عبد الرحمن فقال ان هذا لعلم ما كنت سمعته ولقد سمعت رجالا من اهل العلم يذكرون ان الناس الا من ذكرت عاىشة ممن كان يهل بمناة كانوا يطوفون كلهم بالصفا والمروة فلما ذكر الله تعالى الطواف بالبيت ولم يذكر الصفا والمروة في القران قالوا يا رسول الله كنا نطوف بالصفا والمروة وان الله انزل الطواف بالبيت فلم يذكر الصفا فهل علينا من حرج ان نطوف بالصفا والمروة فانزل الله تعالى ان الصفا والمروة من شعاىر الله الايةقال ابو بكر فاسمع هذه الاية نزلت في الفريقين كليهما في الذين كانوا يتحرجون ان يطوفوا بالجاهلية بالصفا والمروة والذين يطوفون ثم تحرجوا ان يطوفوا بهما في الاسلام من اجل ان الله تعالى امر بالطواف بالبيت ولم يذكر الصفا حتى ذكر ذلك بعدما ذكر الطواف بالبيت

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উরওয়াহ (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
১৫/ হজ্জ (كتاب الحج)