৪৫৭৯

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - শুভ ও অশুভ লক্ষণ

৪৫৭৯-[৪] উক্ত রাবী (হুরায়রা (রাঃ) হতে) বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের সংক্রামক বলতে কিছুই নেই। প্যাঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই। তারকার (উদয় বা অস্ত যাওয়ার) দরুন বৃষ্টি হওয়া ভিত্তিহীন এবং সফর মাসে অশুভ নেই। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْفَأْلِ وَالطِّيَرَةِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا عَدْوَى وَلَا هَامَةَ وَلَا نَوْءَ وَلَا صفر» . رَوَاهُ مُسلم

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا عدوى ولا هامة ولا نوء ولا صفر» . رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ (وَلَا نَوْءَ) অর্থাৎ বিশেষ কোন তারকার উদয় হওয়া আর তার বিপরীতে কোন তারকার অস্ত যাওয়া। এর একটি তারকা পূর্বদিগন্তে থাকে আর অপরটি থাকে পশ্চিম দিগন্তে। জাহিলী যুগের লোকেদের বিশ্বাস ছিল, বিশেষ কোন তারকা উদিত হলে বৃষ্টি হবে এবং বৃষ্টি হওয়ার নিশ্চয়তা ঐ তারকার সাথেই সংযুক্ত। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাকোচ করেছেন।

ব্যাখ্যাকার বলেনঃ সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার সাথে সাথে চাঁদের কক্ষপথ থেকে একটি তারকা পড়ে যাওয়াকে النَوْءَ বলা হয়। আর তা হচ্ছে, আঠাশ (২৮) টি তারকা। সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার সাথে সাথে পশ্চিম দিগন্ত থেকে একটি করে তারকা পড়ে যায়। আর একই সময়ে পূর্ব দিগন্ত তার পরিবর্তে অন্য একটি তারকা উদয় হয়।

‘নিহায়াহ্’ গ্রন্থে আছে, النَوْءَ বলা হয় চাদের পরিভ্রমণের কক্ষপথকে। ‘আরবদের ‘আক্বীদাহ্ ছিল, প্রতিটি نَوْءَ তথা বৃষ্টির পূর্বলক্ষণ প্রদর্শনকারী তারকা বৃষ্টি দিবে এবং তার সাথেই তারা বৃষ্টি হওয়ার গ্যারান্টি সংযুক্ত করতো। তারা বলত مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا অর্থাৎ আমরা অমুক তারকার মাধ্যমে বৃষ্টি পেয়েছি।

نَوْءَ হিসেবে তাদের নামকরণের কারণ হলো পশ্চিম দিগন্তে যখন কোন তারকা ডুবে গেল তখনই পূর্ব দিগন্তে অন্য একটি তারকা উদিত হল। আবার বলা হয়ে থাকে, نَوْءَ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ডুবে যাওয়া এটি বিপরীতভাবে হবে।

আবূ ‘উবায়দ বলেনঃ نَوْءَ যে ডুবে যাওয়া এটি তিনি এ জায়গায় ব্যতীত আর শোনেননি। نَوْءَ-এর ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর কারণ হলো আরবরা বৃষ্টি হওয়াকে نَوْءَ-এর সাথে সম্পৃক্ত করত। আর যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস রাখে যে, বৃষ্টি আল্লাহর কাজের একটি তথা আল্লাহর নির্দেশেই দূর হয়ে থাকে। আর তার কথার দ্বারা এ উদ্দেশ্য নেয় যে, مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا অর্থাৎ অমুক সময়ে আমরা বৃষ্টি লাভ করব। আর তা হলো তা অমুক তারকার সময়কালে। তাহলে সেটি বৈধ হবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ নিয়ম চালু করে দিয়েছেন যে, এই এই সময়ে বৃষ্টি আসবে। এটি ‘আল্লামা ত্বীবী উল্লেখ করেছেন।

আর বাহ্যিকভাবে বুঝা যাচ্ছে نَوْءَ-কে স্বাভাবিকভাবে নিষেধ করার কারণ হলো তাদের ভ্রান্ত ‘আক্বীদাহ্। কারণ এ ব্যাপারে এমন কিছু বর্ণিত হয়নি যা প্রমাণ করে এটি জায়িযও আছে। মোটকথা এ হাদীসটির অর্থ হবে এরূপ, তোমরা বলবে না, مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا বরং তোমরা বলবে, مُطِرْنَا بِفَضْلِ اللهِ تَعَالٰى আমরা মহান আল্লাহর অনুগ্রহের মাধ্যমে বৃষ্টি পেয়েছি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى)