৩৪৩০

পরিচ্ছেদঃ কোন ভাল জিনিসের সুসংবাদ ও তার জন্য মুবারকবাদ জানানো মুস্তাহাব

(৩৪৩০) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি নিজ বাড়িতে ওযূ করে বাইরে গেলেন। এবং তিনি (মনে মনে) বললেন যে, ’আজ আমি অবশ্যই আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্যে থাকব।’ সুতরাং তিনি মসজিদে গিয়ে আল্লাহর রসূল (রাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। সাহাবীগণ উত্তর দিলেন যে, ’তিনি এই দিকে গমন করেছেন।’ আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আমি তাঁর পশ্চাতে চলতে থাকলাম এবং তাঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করতে থাকলাম। শেষ পর্যন্ত তিনি ’আরীস’ কুয়ার (সন্নিকটবর্তী একটি বাগানে) প্রবেশ করলেন। আমি (বাগানের) প্রবেশ দ্বারের পাশে বসে থাকলাম। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেশাব-পায়খানা সমাধা করে ওযূ করলেন। অতঃপর আমি উঠে তাঁর দিকে অগ্রসর হলাম। দেখলাম, তিনি ’আরীস’ কুয়ার পাড়ের মাঝখানে পায়ের নলা খুলে পা দুটো তাতে ঝুলিয়ে বসে আছেন।

আমি তাঁকে সালাম দিয়ে আবার ফিরে এসে প্রবেশ-পথে বসে রইলাম। আর মনে মনে বললাম যে, ’আজ আমি অবশ্যই আল্লাহর রসূলের দ্বার রক্ষক হব।’ সুতরাং আবূ বকর (রাঃ) এসে দরজায় ধাক্কা দিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ’আপনি কে?’ তিনি উত্তরে বললেন, ’আবূ বকর।’ আমি বললাম, ’একটু থামুন।’ তারপর আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গিয়ে নিবেদন করলাম, ’হে আল্লাহ রসূল! উনি আবূ বকর, প্রবেশ করার অনুমতি চাচ্ছেন।’ তিনি বললেন, ’’ওকে অনুমতি দাও। আর তার সাথে জান্নাতের সুসংবাদ জানিয়ে দাও।’’ সুতরাং আমি আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট এসে বললাম, ’প্রবেশ করুন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ জানাচ্ছেন।’ আবূ বকর প্রবেশ করলেন এবং কুয়ার পাড়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ডান দিকে পায়ের নলার কাপড় তুলে পা দুখানি কুয়াতে ঝুলিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত বসে পড়লেন।

আমি পুনরায় দ্বার প্রান্তে ফিরে এসে বসে গেলাম। আমি মনে মনে বললাম, আমার ভাইকে ওযূ করা অবস্থায় ছেড়ে এসেছি; (ওযূর পরে) সে আমার পশ্চাতে আসবে। আল্লাহ যদি তার জন্য কল্যাণ চান, তাহলে তাকে (এখানে) আনবেন। হঠাৎ একটি লোক এসে দরজা নড়াল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ’কে?’ সে বলল, ’উমার বিন খাত্তাব।’ আমি বললাম, ’একটু থামুন।’ অতঃপর আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে নিবেদন করলাম যে, ’উনি উমার। প্রবেশ অনুমতি চাচ্ছেন।’ তিনি বললেন, ’’ওকে অনুমতি দাও এবং ওকেও জান্নাতের সুসংবাদ জানাও।’’ সুতরাং আমি উমারের নিকট এসে বললাম, ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে প্রবেশ অনুমতি দিচ্ছেন এবং জান্নাতের শুভ সংবাদও জানাচ্ছেন।’ সুতরাং তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন এবং কুয়ার পাড়ে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাম পাশে কুয়ায় পা ঝুলিয়ে বসে পড়লেন।

আমি আবার সেখানে ফিরে এসে বসে পড়লাম। আর মনে মনে বলতে থাকলাম, আল্লাহ যদি আমার ভাইয়ের মঙ্গল চান, তাহলে অবশ্যই তাকে নিয়ে আসবেন। (ইত্যবসরে) হঠাৎ একটি লোক দরজা নড়াল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ’আপনি কে?’ সে বলল, ’আমি উসমান ইবনে আফ্ফান।’ আমি বললাম, ’একটু থামুন।’ তারপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে তাঁর সম্পর্কে অবহিত করলাম। তিনি বললেন, ’’ওকে অনুমতি দাও। আর জান্নাতের সুসংবাদ জানাও। তবে ওর জীবনে বিপর্যয় আছে।’’ আমি ফিরে এসে তাঁকে বললাম, ’প্রবেশ করুন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ জানাচ্ছেন। তবে আপনার বিপর্যয় আছে।’ সুতরাং তিনি সেখানে প্রবেশ ক’রে দেখলেন যে, কুয়ার এক পাড় পূর্ণ হয়েছে ফলে তিনি তাঁদের সামনের অপর পাড়ে গিয়ে বসে গেলেন।

সাঈদ ইবনে মুসাইয়েব বলেন যে, ’এ ঘটনা দ্বারা আমি বুঝেছি যে, তাঁদের তিনজনের সমাধি একই স্থানে হবে। (আর উসমানের সমাধি অন্য জায়গায় হবে।)’ (বুখারী ৩৬৭৪, মুসলিম ৬৩৬৭)

এক বর্ণনায় এ সব শব্দাবলী বাড়তিভাবে এসেছে যে, (আবূ মূসা বলেন,) ’আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বার রক্ষার নির্দেশ দিলেন।’ আর তাতে এ কথাও আছে যে, যখন তিনি উসমান (রাঃ) কে সুসংবাদ (ও বিপর্যয়ের কথা) জানালেন, তখন তিনি ’আলহামদু লিল্লাহ’ পড়লেন এবং বললেন, ’আল্লাহুল মুস্তাআন।’ অর্থাৎ আল্লাহই সাহায্যস্থল। (বুখারী ৩৬৯৩, ৬২১৬, মুসলিম ৬৩৬৫)

وَعَن أَبي مُوسَى الأَشعَرِي أَنَّهُ تَوَضَّأَ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ خَرَجَ فَقَالَ : لأَلْزَمَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ وَلأَكُونَنَّ مَعَهُ يَوْمِي هَذَا فَجَاءَ الْمَسْجِدَ فَسَألَ عَنِ النَّبيِّ ﷺ فَقَالُوا وجَّهَ هاهُنَا، قَالَ : فَخَرَجْتُ عَلَى أثَرِهِ أسْألُ عَنْهُ حَتّٰـى دَخَلَ بِئْرَ أَرِيسٍ، فَجَلَسْتُ عِندَ البَابِ حتَّى قَضَى رَسُوْلُ اللهِ ﷺ حَاجَتَهُ وَتَوَضَّأَ فَقُمتُ إليهِ فَإِذَا هُوَ قَد جَلَسَ عَلَى بِئرِ أَرِيسٍ وَتَوَسَّطَ قُفَّهَا وَكشَفَ عَنْ سَاقَيهِ وَدَلاَّهُما في الْبِئرِ فَسَلَّمتُ عَليهِ ثمَّ انصَرَفتُ فَجَلَستُ عِندَ البَابِ فَقُلْتُ : لأَكُونَنَّ بَوَّابَ رَسُولِ اللهِ ﷺ الْيَوْمَ فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَدَفَعَ الْبَابَ فَقُلتُ : مَنْ هَذَا ؟ فَقَالَ : أَبُو بَكْرٍ فَقُلتُ : عَلَى رِسْلِكَ ثُمَّ ذَهبْتُ فَقُلتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا أَبُو بَكْرٍ يَستَأْذِنُ فَقَالَ ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَأقْبَلْتُ حَتّٰـى قُلْتُ لأَبي بَكْرٍ : اُدْخُلْ وَرَسُوْلُ اللهِ ﷺ يُبَشِّرُكَ بِالجَنَّةِ فَدَخَلَ أَبُو بَكرٍ حَتّٰـى جَلَسَ عَنْ يَمِينِ النَِّبيِّ ﷺ مَعَهُ في القُفِّ وَدَلَّى رِجْلَيْهِ في البِئْرِ كَمَا صَنَعَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ ثُمَّ رَجَعْتُ وَجَلَسْتُ وَقَدْ تَرَكْتُ أَخِي يَتَوَضَّأُ وَيَلْحَقُنِي فَقُلتُ : إنْ يُرِدِ اللهُ بِفُلانٍ – يُريدُ أخَاهُ – خَيْراً يَأتِ بِهِ فَإذَا إنْسَانٌ يُحَرِّكُ الْبَابَ فَقُلتُ : مَنْ هَذَا ؟ فَقَالَ: عُمَرُ بنُ الخَطّابِ فَقُلتُ : عَلَى رِسْلِكَ ثُمَّ جِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ وَقُلْتُ : هَذَا عُمَرُ يَسْتَأذِنُ ؟ فَقَالَ اِئْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالجَنَّةِ فَجِئْتُ عُمَرَ فَقُلتُ : أَذِنَ وَيُبَشِّرُكَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِالجَنَّةِ فَدَخَلَ فَجَلَسَ مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فِي القُفِّ عَنْ يَسَارِهِ وَدَلَّى رِجْلَيْهِ في البِئرِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ فَقُلتُ : إنْ يُرِدِ اللهُ بِفُلاَنٍ خَيْراً – يَعْنِي أخَاهُ – يَأْتِ بِهِ فَجَاءَ إنْسَانٌ فَحَرَّكَ الْبَابَ فَقُلتُ : مَنْ هَذَا ؟ فَقَالَ : عُثْمَانُ بنُ عَفَّانَ فَقُلتُ : عَلَى رِسْلِكَ وجِئْتُ النَّبيَّ ﷺ فأخْبَرْتُهُ فَقَالَ اِئْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالجَنَّةِ مَعَ بَلْوَى تُصِيبُهُ فَجِئْتُ فَقُلتُ : اُدْخُلْ وَيُبَشِّرُكَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِالجَنَّةِ مَعَ بَلْوَى تُصيبُكَ فَدَخَلَ فَوجَدَ الْقُفَّ قَدْ مُلِئَ فَجَلَسَ وِجَاهَهُمْ مِنَ الشِّقِّ الآخَرِ قَالَ سَعيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ : فَأوَّلْتُهَا قُبُورَهُمْ متفقٌ عَلَيْهِ
وَزَادَ في رِوَايَةٍ : وَأَمَرَنِي رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِحِفظِ البَابِ وَفِيهَا : أنَّ عُثْمانَ حِيْنَ بَشَّرَهُ حَمِدَ اللهَ تَعَالَى ثُمَّ قَالَ : اللهُ المُسْتَعانُ

وعن ابي موسى الاشعري انه توضا في بيته ثم خرج فقال : لالزمن رسول الله ﷺ ولاكونن معه يومي هذا فجاء المسجد فسال عن النبي ﷺ فقالوا وجه هاهنا، قال : فخرجت على اثره اسال عنه حتـى دخل بىر اريس، فجلست عند الباب حتى قضى رسول الله ﷺ حاجته وتوضا فقمت اليه فاذا هو قد جلس على بىر اريس وتوسط قفها وكشف عن ساقيه ودلاهما في البىر فسلمت عليه ثم انصرفت فجلست عند الباب فقلت : لاكونن بواب رسول الله ﷺ اليوم فجاء ابو بكر فدفع الباب فقلت : من هذا ؟ فقال : ابو بكر فقلت : على رسلك ثم ذهبت فقلت : يا رسول الله هذا ابو بكر يستاذن فقال اىذن له وبشره بالجنة فاقبلت حتـى قلت لابي بكر : ادخل ورسول الله ﷺ يبشرك بالجنة فدخل ابو بكر حتـى جلس عن يمين النبي ﷺ معه في القف ودلى رجليه في البىر كما صنع رسول الله ﷺ وكشف عن ساقيه ثم رجعت وجلست وقد تركت اخي يتوضا ويلحقني فقلت : ان يرد الله بفلان – يريد اخاه – خيرا يات به فاذا انسان يحرك الباب فقلت : من هذا ؟ فقال: عمر بن الخطاب فقلت : على رسلك ثم جىت الى رسول الله ﷺ فسلمت عليه وقلت : هذا عمر يستاذن ؟ فقال اىذن له وبشره بالجنة فجىت عمر فقلت : اذن ويبشرك رسول الله ﷺ بالجنة فدخل فجلس مع رسول الله ﷺ في القف عن يساره ودلى رجليه في البىر، ثم رجعت فجلست فقلت : ان يرد الله بفلان خيرا – يعني اخاه – يات به فجاء انسان فحرك الباب فقلت : من هذا ؟ فقال : عثمان بن عفان فقلت : على رسلك وجىت النبي ﷺ فاخبرته فقال اىذن له وبشره بالجنة مع بلوى تصيبه فجىت فقلت : ادخل ويبشرك رسول الله ﷺ بالجنة مع بلوى تصيبك فدخل فوجد القف قد ملى فجلس وجاههم من الشق الاخر قال سعيد بن المسيب : فاولتها قبورهم متفق عليه وزاد في رواية : وامرني رسول الله ﷺ بحفظ الباب وفيها : ان عثمان حين بشره حمد الله تعالى ثم قال : الله المستعان

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব