২১৬৫

পরিচ্ছেদঃ তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। তবে যদি বিদআতী, প্রকাশ্য মহাপাপী ইত্যাদি হয়, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ভিন্ন।

(২১৬৫) আওফ ইবনে মালিক ইবনে তুফাইল হতে বর্ণিত, আয়েশা (রাঃ)র সামনে ব্যক্ত করা হল যে, আয়েশা (রাঃ) যে (নিজ বাড়ি) বিক্রয় বা দান করেছেন, সে সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) বলেছেন যে, ’হয় (খালাজান) আয়েশা (অবাধে দান-খয়রাত করা হতে) অবশ্যই বিরত থাকুন, নচেৎ তাঁর উপর (আর্থিক) অবরোধ প্রয়োগ করবই।’ আয়েশা (রাঃ) এই বক্তব্য শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, ’সত্যিই কি সে এ কথা বলেছে?’ লোকেরা বলল, ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ’তাহলে আমি আল্লাহর নামে মানত করলাম যে, এখন থেকে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের সাথে কখনোও কথা বলব না।’ তারপর যখন বাক্যালাপ ত্যাগ দীর্ঘ হয়ে গেল, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর আয়েশার নিকট (এ ব্যাপারে) সুপারিশ করালেন। আয়েশা বললেন, ’আল্লাহর কসম! আমি ইবনে যুবাইরের সম্পর্কে কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না, আর আপন মানত ভঙ্গও করব না।’

বস্তুতঃ যখন ব্যাপারটা ইবনে যুবাইরের উপর অতীব দীর্ঘ হয়ে পড়ল, তখন তিনি মিসওয়ার ইবনে মাখরামাহ ও আব্দুর রাহমান ইবনে আসওয়াদ ইবনে আব্দে ইয়াগুস সাহাবীদের সঙ্গে আলোচনা করলেন এবং তাঁদেরকে বললেন, ’আমি তোমাদেরকে আল্লাহর কসম দিচ্ছি যে, তোমরা (আমার স্নেহময়ী খালা) আয়েশার কাছে আমাকে নিয়ে চল। কেননা, আমার সাথে বাক্যালাপ বন্ধ রাখার মানতে অটল থাকা তাঁর জন্য আদৌ বৈধ নয়।’ সুতরাং মিসওয়ার ও আব্দুর রহমান উভয়ে ইবনে যুবাইর (রাঃ) কে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আয়েশার নিকট অনুমতিও চাইলেন এবং বললেন, ’আসসালামু আলাইকি অরাহ্মাতুল্লাহি অবারাকা-তুহ! আমরা কি ভিতরে আসতে পারি?’ আয়েশা (রাঃ) বললেন, ’হ্যাঁ এসো।’ বললেন, ’আমরা সকলেই কি?’ আয়েশা (রাঃ) বললেন, ’হ্যাঁ, সকলেই প্রবেশ কর।’

কিন্তু তিনি জানতেন না যে, ওই দু’জনের সঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)ও উপস্থিত আছেন। সুতরাং এঁরা যখন ভিতরে ঢুকলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর পর্দার ভিতরে চলে গেলেন এবং (খালা) আয়েশা (রাঃ) কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে আল্লাহর শপথ দিতে লাগলেন। এ দিকে পর্দার বাইরে থেকে মিসওয়ার ও আব্দুর রহমান উভয়েই আয়েশাকে কসম দিয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে ও তাঁর ওযর গ্রহণ করতে অনুরোধ করলেন এবং বললেন, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাক্যালাপ বন্ধ রাখতে নিষেধ করেছেন--যে সম্বন্ধে আপনি অবহিত। আর কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশী কথাবার্তা বন্ধ রাখে।’

সুতরাং যখন তাঁরা আয়েশা (রাঃ)র সামনে উপদেশ ও সম্পর্ক ছিন্ন করা যে গুনাহ—তা বারবার বলতে লাগলেন, তখন তিনিও উপদেশ আরম্ভ করলেন এবং কাঁদতে লাগলেন। তিনি বলতে লাগলেন, ’আমি তো মানত মেনেছি। আর মানতের ব্যাপারটা বড় শক্ত।’ কিন্তু তাঁরা তাঁকে অব্যাহতভাবে বুঝাতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি (আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা) আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের সাথে কথা বললেন এবং স্বীয় মানত ভঙ্গ করার কাফ্ফারা স্বরূপ চল্লিশটি গোলাম মুক্ত করলেন। তারপর থেকে তিনি যখনই উক্ত মানতের কথা স্মরণ করতেন, তখনই এত বেশী কাঁদতেন যে, চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেত। (বুখারী ৬০৭৩-৬০৭৫)

وَعَنْ عَوْفِ بنِ مَالِكِ بنِ الطُّفَيْلِ : أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا حُدِّثَتْ أَنَّ عَبدَ اللهِ بنَ الزُّبَيرِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ فِي بَيْعٍ أَوْ عَطَاءٍ أَعْطَتْهُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنهَا: وَاللهِ لَتَنْتَهِيَنَّ عَائِشَةَ أَوْ لأَحْجُرَنَّ عَلَيْهَا، قَالَتْ : أََهُوَ قَالَ هَذَا قَالُوا : نَعَمْ قَالَتْ : هُوَ للهِ عَلَيَّ نَذْرٌ أَنْ لاَ أُكَلِّمَ ابْنَ الزُّبَيْرِ أَبَداً فَاسْتَشْفَعَ ابْنُ الزُّبَيْرِ إِلَيْهَا حِيْنَ طَالَتِ الهِجْرَةُ فَقَالَتْ : لاَ وَاللهِ لاَ أُشَفِّعُ فِيهِ أَبداً وَلاَ أَتَحَنَّثُ إِلَى نَذْرِي فَلَمَّا طَالَ ذَلِكَ عَلَى ابْنِ الزُّبَيرِ كَلَّمَ المِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعبدَ الرحْمَانِ ابْنَ الأسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ وقَالَ لَهُمَا : أَنْشُدُكُمَا اللهَ لَمَا أَدْخَلْتُمَانِي عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَإِنَّهَا لاَ يَحِلُّ لَهَا أَنْ تَنْذِرَ قَطِيعَتِي فَأَقْبَلَ بِهِ المِسْوَرُ وَعَبدُ الرَّحْمَانِ حَتّٰـى اسْتَأذَنَا عَلَى عَائِشَةَ فَقَالاَ : السَّلاَمُ عَلَيْكِ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ أَنَدْخُلُ ؟ قَالَتْ عَائِشَةَ : ادْخُلُوا قَالُوا : كُلُّنَا ؟ قَالَتْ: نَعَمْ ادْخُلُوا كُلُّكُمْ وَلاَ تَعْلَمُ أَنَّ معَهُمَا ابْنَ الزُّبَيرِ فَلَمَّا دَخَلُوا دَخَلَ ابْنُ الزُّبَيرِ الحِجَابَ فَاعْتَنَقَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا وَطَفِقَ يُنَاشِدُهَا وَيَبْكِي وَطَفِقَ المِسْوَرُ وَعَبدُ الرَّحْمَانِ يُنَاشِدَانِهَا إِلاَّ كَلَّمَتْهُ وَقَبِلَتْ مِنْهُ وَيَقُولاَنِ : إِنَّ النَّبِيَّ ﷺ نَهَى عَمَّا قَدْ عَلِمْتِ مِنَ الهِجْرَةِ ؛ وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ فَلَمَّا أَكْثَرُوا عَلَى عَائِشَةَ مِنَ التَّذْكِرَةِ وَالتَّحْرِيجِ طَفِقَتْ تُذَكِّرُهُمَا وَتَبْكِي وَتَقُولُ : إنِّي نَذَرْتُ وَالنَّذْرُ شَدِيدٌ فَلَمْ يَزَالاَ بِهَا حَتّٰـى كَلَّمَتِ ابْنَ الزُّبَيرِ وَأَعْتَقَتْ فِي نَذْرِهَا ذَلِكَ أَرْبَعِينَ رَقَبَةً وَكَانَتْ تَذْكُرُ نَذْرَهَا بَعدَ ذَلِكَ فَتَبْكِي حَتّٰـى تَبِلَّ دُمُوعُهَا خِـمَارَهَا رواه البخاري

وعن عوف بن مالك بن الطفيل : ان عاىشة رضي الله عنها حدثت ان عبد الله بن الزبير رضي الله عنهما قال في بيع او عطاء اعطته عاىشة رضي الله تعالى عنها: والله لتنتهين عاىشة او لاحجرن عليها، قالت : اهو قال هذا قالوا : نعم قالت : هو لله علي نذر ان لا اكلم ابن الزبير ابدا فاستشفع ابن الزبير اليها حين طالت الهجرة فقالت : لا والله لا اشفع فيه ابدا ولا اتحنث الى نذري فلما طال ذلك على ابن الزبير كلم المسور بن مخرمة وعبد الرحمان ابن الاسود بن عبد يغوث وقال لهما : انشدكما الله لما ادخلتماني على عاىشة رضي الله عنها فانها لا يحل لها ان تنذر قطيعتي فاقبل به المسور وعبد الرحمان حتـى استاذنا على عاىشة فقالا : السلام عليك ورحمة الله وبركاته اندخل ؟ قالت عاىشة : ادخلوا قالوا : كلنا ؟ قالت: نعم ادخلوا كلكم ولا تعلم ان معهما ابن الزبير فلما دخلوا دخل ابن الزبير الحجاب فاعتنق عاىشة رضي الله عنها وطفق يناشدها ويبكي وطفق المسور وعبد الرحمان يناشدانها الا كلمته وقبلت منه ويقولان : ان النبي ﷺ نهى عما قد علمت من الهجرة ؛ ولا يحل لمسلم ان يهجر اخاه فوق ثلاث ليال فلما اكثروا على عاىشة من التذكرة والتحريج طفقت تذكرهما وتبكي وتقول : اني نذرت والنذر شديد فلم يزالا بها حتـى كلمت ابن الزبير واعتقت في نذرها ذلك اربعين رقبة وكانت تذكر نذرها بعد ذلك فتبكي حتـى تبل دموعها خـمارها رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২২/ নিষিদ্ধ কার্যাবলী