২৪০৬

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৪০৬-[২৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলিম দু’টি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখবে, সে নিঃসন্দেহে জান্নাতে যাবে। জেনে রাখো, এ বিষয় দু’টো সহজ, কিন্তু এর ’আমলকারী কম। (তা হলো) প্রত্যেক সালাত আদায়ের পর পড়বে ’সুবহা-নাল্ল-হ’ দশবার, ’আল হাম্‌দুলিল্লা-হ’ দশবার, ’আল্ল-হু আকবার’ দশবার। ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ দু’আ পড়ার সময় হাতে গুণতে দেখেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এ দু’আ মুখে (পাঁচ বেলায়) একশ’ পঞ্চাশবার কিয়ামতে মীযানের (পাল্লায়) এক হাজার পাঁচশ’বার।

আর যখন বিছানায় যাবে, ’সুবহা-নাল্ল-হ’’আলহাম্‌দুলিল্লা-হ’ ’আল্লা-হু আকবার’ (তিনটি দু’আ মিলিয়ে) একশ’বার পড়বে। এ দু’আ মুখে একশ’বার বটে; কিন্তু মীযানে একহাজার বার। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ একদিন এক রাতে দু’ হাজার পাঁচশ’ গুনাহ করে? সাহাবীগণ বললেন, আমরা কেন এ দু’টি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে পারব না? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এজন্য পারবে না যে, তোমাদের কারো কারো কাছে সালাত আদায় অবস্থায় শয়তান এসে বলে, ঐ বিষয় চিন্তা করো, ঐ বিষয় স্মরণ করো। এভাবে (শয়তানের) ওয়াস্ওয়াসা চলতে থাকে সালাত শেষ করা পর্যন্ত। অতঃপর সে হয়ত তা (পরিপূর্ণ) না করেই উঠে যায়। এভাবে শয়তান তার ঘুমানোর সময় এসে তাকে ঘুম পাড়াতে থাকবে, যতক্ষণ না সে তা (আদায় না) করে ঘুমিয়ে পড়ে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)

আবূ দাঊদ-এর আর এক বর্ণনায় আছে, ’’যে কোন মুসলিম দু’টি বিষয়ে লক্ষ্য করবে।’’ এভাবে তার বর্ণনায় আছে, ’’মীযানের পাল্লায় একহাজার পাঁচশ’’-এ শব্দের পর আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যখন সে ঘুমাতে যায় তখন পড়বে, ’আল্ল-হু আকবার’ চৌত্রিশবার ’আলহাম্‌দুলিল্লা-হ’ তেত্রিশবার ও ’সুবহা-নাল্ল-হ’ তেত্রিশবার।[1]

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَلَّتَانِ لَا يُحْصِيهِمَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ أَلَا وَهُمَا يَسِيرٌ وَمَنْ يَعْمَلُ بِهِمَا قَلِيلٌ يُسَبِّحُ اللَّهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ عَشْرًا وَيَحْمَدُهُ عَشْرًا ويكبِّرهُ عَشراً» قَالَ: فَأَنَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْقِدُهَا بِيَدِهِ قَالَ: «فَتِلْكَ خَمْسُونَ وَمِائَةٌ فِي اللِّسَان وَأَلْفٌ وَخَمْسُمِائَةٍ فِي الْمِيزَانِ وَإِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ يُسَبِّحُهُ وَيُكَبِّرُهُ وَيَحْمَدُهُ مِائَةً فَتِلْكَ مِائَةٌ بِاللِّسَانِ وَأَلْفٌ فِي الْمِيزَانِ فَأَيُّكُمْ يَعْمَلُ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ أَلْفَيْنِ وَخَمْسَمِائَةِ سَيِّئَةٍ؟» قَالُوا: وَكَيْفَ لَا نُحْصِيهَا؟ قَالَ: يَأْتِي أَحَدَكُمُ الشَّيْطَانُ وَهُوَ فِي صِلَاتِهِ فَيَقُولُ: اذْكُرْ كَذَا اذْكُرْ كَذَا حَتَّى يَنْفَتِلَ فَلَعَلَّهُ أَنْ لَا يَفْعَلَ وَيَأْتِيهِ فِي مَضْجَعِهِ فَلَا يَزَالُ يُنَوِّمُهُ حَتَّى يَنَامَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ
وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: «خَصْلَتَانِ أَوْ خَلَّتَانِ لَا يُحَافِظُ عَلَيْهِمَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ» . وَكَذَا فِي رِوَايَتِهِ بَعْدَ قَوْلِهِ: «وَأَلْفٌ وَخَمْسُمِائَةٍ فِي الْمِيزَانِ» قَالَ: «وَيُكَبِّرُ أَرْبَعًا وَثَلَاثِينَ إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ» وَيَحْمَدُ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَيُسَبِّحُ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ . وَفِي أَكْثَرِ نُسَخِ المصابيح عَن: عبد الله بن عمر

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «خلتان لا يحصيهما رجل مسلم الا دخل الجنة الا وهما يسير ومن يعمل بهما قليل يسبح الله في دبر كل صلاة عشرا ويحمده عشرا ويكبره عشرا» قال: فانا رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم يعقدها بيده قال: «فتلك خمسون وماىة في اللسان والف وخمسماىة في الميزان واذا اخذ مضجعه يسبحه ويكبره ويحمده ماىة فتلك ماىة باللسان والف في الميزان فايكم يعمل في اليوم والليلة الفين وخمسماىة سيىة؟» قالوا: وكيف لا نحصيها؟ قال: ياتي احدكم الشيطان وهو في صلاته فيقول: اذكر كذا اذكر كذا حتى ينفتل فلعله ان لا يفعل وياتيه في مضجعه فلا يزال ينومه حتى ينام . رواه الترمذي وابو داود والنساىي وفي رواية ابي داود قال: «خصلتان او خلتان لا يحافظ عليهما عبد مسلم» . وكذا في روايته بعد قوله: «والف وخمسماىة في الميزان» قال: «ويكبر اربعا وثلاثين اذا اخذ مضجعه» ويحمد ثلاثا وثلاثين ويسبح ثلاثا وثلاثين . وفي اكثر نسخ المصابيح عن: عبد الله بن عمر

ব্যাখ্যা: পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের প্রতি ওয়াক্তে (১০ বার ‘‘সুবহা-নাল্ল-হ’’, ১০ বার ‘‘আলহামদুলিল্লা-হ’’, ১০ বার ‘‘আল্ল-হু আকবার’’) ৩০ বার, যা পাঁচ ওয়াক্ত মিলে ৩০ × ৫ = ১৫০ বার। অর্থাৎ- রাত ও দিনে প্রতি ওয়াক্তের ৩০ বার মিলে নেকী অর্জিত হয় ১৫০, আর এ সংখ্যানুপাতে প্রতিটি হবে তার দশগুণ, কিতাবুল্লাহ ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহয় তা ওয়া‘দা রয়েছে।

(وَإِذَا أَخَذَ مَضْجَعَه) আত্ তিরমিযীতে রয়েছে যে, যখন তুমি বিছানা গ্রহণ করবে তখন ‘‘সুবহা-নাল্ল-হ’’, ‘‘আল্ল-হু আকবার’’‘‘আলহামদু লিল্লা-হ’’ বলবে। এটি দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যের বিবরণ।

(يُسَبِّحُه وَيُكَبِّرُه وَيَحْمَدُه مِائَةً) অর্থাৎ- ১০০ বার, ‘‘সুবহা-নাল্ল-হ’’ ৩৩ বার, ‘‘আল্ল-হু আকবার’’ ৩৪ বার এবং ‘‘আলহামদু লিল্লা-হ’’ ৩৩ বার। এর সম্মিলিত সংখ্যা হলো ১০০ বার, আর এর উপর প্রমাণ করে নাসায়ী’র বর্ণনা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)