১৭৭৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

১৭৭৮-[৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাত আদায়ের জন্য ’উমার (রাঃ)-কে পাঠালেন। কেউ এসে খবর দিলো যে, ইবনু জামিল, খালিদ ইবনু ওয়ালীদ আর ’আব্বাস (রাঃ)যাকাত দিতে অস্বীকার করেছে। (এ কথা শুনে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইবনু জামিল এজন্য যাকাত দিতে অস্বীকার করেছেন যে, (প্রথম দিকে) গরীব ছিল। এরপর আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাকে সম্পদশালী করেছেন। আর খালিদ ইবনু ওয়ালীদ-এর ব্যাপার হলো, তোমরা তার ওপর যুলম্ করছ। সে তো তার যুদ্ধসামগ্রী আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দিয়েছে (কাজেই তোমরা তার শুধু এ বছরই নয় বরং) এ রকম (আগামী বছর)ও। এরপর থাকে ’আব্বাস-এর বিষয়। তার এ বছরের যাকাত এবং এর সমপরিমাণ আমার দায়িত্বে। অতঃপর তিনি বললেন, হে ’উমার! তুমি কি জানো না কোন ব্যক্তির চাচা তার পিতার মতই। (বুখারী, মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَن أَبِي هُرَيْرَةَ. قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُمَرَ عَلَى الصَّدَقَةِ. فَقِيلَ: مَنَعَ ابْنُ جَمِيلٍ وَخَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ وَالْعَبَّاسُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا يَنْقِمُ ابْنُ جَمِيلٍ إِلَّا أَنَّهُ كَانَ فَقِيرًا فَأَغْنَاهُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ. وَأَمَّا خَالِدٌ فَإِنَّكُمْ تَظْلِمُونَ خَالِدًا. قَدِ احْتَبَسَ أَدْرَاعَهُ وَأَعْتُدَهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ. وَأَمَّا الْعَبَّاسُ فَهِيَ عَلَيَّ. وَمِثْلُهَا مَعَهَا» . ثُمَّ قَالَ: «يَا عُمَرُ أَمَا شَعَرْتَ أَن عَم الرجل صنوا أَبِيه؟»

عن ابي هريرة. قال: بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم عمر على الصدقة. فقيل: منع ابن جميل وخالد بن الوليد والعباس. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما ينقم ابن جميل الا انه كان فقيرا فاغناه الله ورسوله. واما خالد فانكم تظلمون خالدا. قد احتبس ادراعه واعتده في سبيل الله. واما العباس فهي علي. ومثلها معها» . ثم قال: «يا عمر اما شعرت ان عم الرجل صنوا ابيه؟»

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমার (রাঃ)-কে  আমেল হিসেবে ফরয যাকাত আদায় করতে পাঠান। তাঁকে বলা হলো যে, ইবনু জামিল, খালিদ ইবনু ওয়ালীদ এবং ‘আব্বাস যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করেছেন। অথচ তারা সাহাবী।

ইবনু জামিল-এর ক্ষেত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সে গরীব ছিল পরে আল্লাহ তাকে ধনী বানিয়েছেন ফলে এর প্রতিশোধ গ্রহণকল্পে সে যাকাত দিতে অস্বীকার করেছে। কিন্তু এটি প্রতিশোধ গ্রহণ করার মত কোন বিষয় নয়। অথবা সে মূলত কোন প্রকার অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেনি। তাই তার উচিত আল্লাহ তা‘আলা তাকে যা দিয়েছেন তার যাকাত দেয়া এবং নি‘আমাতের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন না করা।

খালিদ-এর ক্ষেত্রে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘সে তার বর্মসমূহ এবং যুদ্ধাস্ত্রগুলো আল্লাহর পথে জমা করে রেখেছে।’’ কয়েকভাবে এ উক্তির ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

প্রথমতঃ যাকাত আদায়কারীগণ খালিদ-এর জমাকৃত বর্ম এবং যুদ্ধাস্ত্রের অর্থের যাকাত চাইলে এই ধারণায় যে তা ব্যবসার জন্য গচ্ছিত আছে যাতে যাকাত আবশ্যক। কিন্তু খালিদ তাদের বললেন, এতে তো যাকাত আবশ্যক নয়। তাই তারা এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি বললেন, তোমরাতো তার প্রতি অবিচার করেছো। কারণ সে তো তা জমা করে আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করে দিয়েছে। ফলে তাতে যাকাত আবশ্যক হয় না।

দ্বিতীয়তঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদ-এর পক্ষ থেকে ওজর পেশ করেছেন এবং প্রত্যুত্তর করেছেন যে, খালিদ-এর ওপর যাকাত আবশ্যক হলে সে তা দিতে অস্বীকার করবে না। কেননা সে তো আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তার বর্ম এবং অস্ত্রগুলো আল্লাহর পথে জমা দিয়ে দিয়েছে যা তার প্রতি আবশ্যক ছিল না।

ফলে কিভাবে সে ফরয সদাক্বাহ্ (সাদাকা) প্রদানে অস্বীকৃতি জানাবে।

আর ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, ‘‘তার যাকাতের জামিন আমি এবং তার সাথে তার সমপরিমাণ এর অর্থ কয়েকটি হতে পারে।’’

প্রথমতঃ ‘আব্বাস (রাঃ)-এর প্রয়োজনের তাকিদে তিনি তার দু’ বছরের যাকাত বিলম্বিত করে নিজে তা আদায়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। যেমনটি আবূ ‘উবায়দাহ্ বলেছেন।

দ্বিতীয়তঃ ‘আব্বাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বর্তমান এবং আগামী দু’ বছরের অগ্রিম সদাক্বাহ্/যাকাত প্রদান করেছেন। ফলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘আব্বাস-এর দুই বছরের সদাক্বাহ্ (সাদাকা) যা আমার কাছে রয়েছে আমি তা দিয়ে দিব।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)