পরিচ্ছেদঃ ৭/৪৫. যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতার করালো তার সওয়াব।
১/১৭৪৬। যায়িদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতার করায়, তার জন্য রয়েছে ইফতারকারীদের সমান সওয়াব এবং এজন্য তাদের সওয়াব থেকে কিছুই হ্রাসপ্রাপ্ত হবে না।
بَاب فِي ثَوَابِ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلَى وَخَالِي يَعْلَى عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ حَجَّاجٍ كُلُّهُمْ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِمْ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু লায়লা সম্পর্কে ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সিকাহ। শু'বাহ ইবনুল হাজ্জাজ বলেন, আমি তার চেয়ে দুর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন ব্যাক্তি আর কাউকে দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল। ইবনু মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪০৬, ২৫/৬২২ নং পৃষ্ঠা) ২. হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়, অন্যত্রে তিনি তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সা'দ তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শু'আয়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা) উক্ত হাদিসটি সহীহ তবে ইবনু আবু লায়লা ও হাজ্জাজ এর রেওয়য়াতে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৮৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ৮ টি অধিক দুর্বল, ২৭ টি দুর্বল, ৪৭ টি হাসান, ১০১ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বুখারী ৪৮৪৩, মুসলিম ১৮৯৬, ১৮৯৭, তিরমিযি ৮০৭, ১৬২৮, ১৬২৯, ১৬৩১, আবু দাউদ ২৫০৯, দারিমী ১৭০২, ২৪১৯, আহমাদ ১৬৫৯১, ১৬৫৯৬, ১৬৫৯৭, ১৬৬০৮, ২১১৬৭, ২১১৭২, ২১৫৩২, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৭৯০৫, মু'জামুল আওসাত ৫৩২, ১০৪৮, ৭১৩৬, ৭৭০০, ৭৮৮৩, ৮০৩৮, ৮৪৩৮ ইত্যাদি।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। নিশ্চয় রোজাদার ব্যক্তিদেরকে ইফতার করানো একটি উত্তম কর্ম এবং সৎ কর্ম। আর এই সৎ কর্মে মানুষের জন্য অনেক মঙ্গল নিহিত রয়েছে, তার মধ্যে হলো: মুসলিমদের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় যদিও তাদের স্থান ও দেশগুলি দূর দূরান্তে ছড়িয়ে রয়েছে। তাই এই হাদীসটি রোজাদার ব্যক্তিদেরকে ইফতার করানোর প্রতি উৎসাহ প্রদান করে। আর রোজাদার ব্যক্তিদেরকে ইফতার করানোর পূণ্য ও মর্যাদা বর্ণনা করে।
২। নিকটের আত্মীয়-স্বজন রোজাদার ব্যক্তিদেরকে ইফতার করানো বেশি পুণ্যের কাজ। কেননা এর দ্বারা রোজাদার ব্যক্তিদেরকে ইফতার করানো হয় এবং নিজের আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা হয়। তবে যদি দেখা যায় যে, নিকটের আত্মীয়-স্বজন চেয়ে অন্য লোক বেশি অভাবগ্রস্ত, এবং সে রোজা ইফতার করার কিছু পাচ্ছে না, তাহলে এই অবস্থায় নিকটের আত্মীয়- স্বজন ছাড়া অন্য রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানোই হবে বেশি পুণ্যের কাজ। যেহেতু এর দ্বারা তার অভাব দূর করা হবে এবং তার প্রয়োজন পূরণ করা হবে।
৩। মুসলিম ব্যক্তির জন্য এটা উচিত যে, সে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী রোজাদার ব্যক্তিদেরকে রোজা ইফতার করাবে। বিশেষভাবে ওই সব রোজাদার ব্যক্তিদেরকে রোজা ইফতার করাবে, যারা রোজা ইফতার করার জন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য পাচ্ছেনা। এবং তাদেরকে রোজা ইফতার করার জন্য কেউ কিছু দিচ্ছে না।
It was narrated from Zaid bin Khalid Al-Juhani that the Messenger of Allah (ﷺ) said:
“Whoever gives food for a fasting person to break his fast, he will have a reward like theirs, without that detracting from their reward in the slightest.”